টেকনিকের সমস্যা? না কি মানসিক চাপ? গৌতম গম্ভীর আটকে যাচ্ছেন কোথায়?
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা যাই বলুন, ছোট থেকে যিনি তাঁর ছাত্রকে চেনেন, সেই কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজ বলছেন, “গৌতম গম্ভীর ভয় পেয়ে পালাবার ছেলে নয়। দেখবেন ও রানে ফিরবেই।”
শনিবার কিংস ইলেভেনের পেসার সন্দীপ শর্মা তাঁর ক্যাচ না ফস্কালে পরপর চারবার ডাক হওয়ার ‘নজির’ গড়ে মাঠ ছাড়তে হত গম্ভীরকে। শেষ পর্যন্ত যে ভাবে আউট হয়েছেন, সেটাও সমালোচিত হয়েছে বিশেষজ্ঞমহলে। কেউ কেউ ছন্দে ফিরতে তাঁকে কয়েকটি ম্যাচে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু গম্ভীরের ছোটবেলার কোচের অন্য মত। তিনি বলছেন, “গোতি পালানোর ছেলে নয়। আমি ওকে ছোট থেকে যতটুকু চিনি, তাতে আমার বিশ্বাস, ও দায়িত্ব ছেড়ে পালিয়ে যাবে না। বরং নিজেকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য দাঁতে দাঁত চেপে লড়বে। সফলও হবে। দেখে নেবেন।” আবু ধাবিতে ফোন করে এ দিন জানা গেল, কেকেআর ক্যাপ্টেন ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে তিনি খেলছেন।
কিন্তু তাঁর সমস্যাটা কোথায়? টেকনিকের, না কি প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছেন গম্ভীর?
রবিবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে এক অনূর্ধ্ব ১৭ কোচিং শিবির সেরে দিল্লি ফেরার পথে বিমানবন্দরে বসে সঞ্জয় ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “টেকনিকের সমস্যা একেবারেই নয়। মানসিক চাপও না। বরং বলা যায় দায়িত্বের বোঝা ওকে সমস্যায় ফেলছে। প্রত্যাশার চাপও কিছুটা আছে।” কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের জয়ের অন্যতম স্থপতি গৌতম গম্ভীরের কাছে এ সব নতুন কিছু নয়। তাঁর কোচের ব্যাখ্যা, “আসলে দীর্ঘ দিন ভারতীয় দলের বাইরে থেকে যে আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়েছে, সেই কারণেই আগের মতো এখন এগুলো সামলাতে পারছে না ও। একটা ভাল ইনিংসই ওকে ফিরিয়ে আনবে। ক্রিকেট ছাড়া ও কিছু ভাবতে জানে না। ক্রিকেটে ব্যর্থতা ওর কাছে প্রায় মৃত্যুর সমান। আমি জানি এ ভাবে মৃত্যু বরণ করবে না ও।”
কিন্তু কী ভাবে নিজেকে ফিরিয়ে আনবেন গম্ভীর?
সঞ্জয়ের বক্তব্য, “দু’দিন আগেই ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওকে যা বলেছি, আপনাকেও তা-ই বলছি। ওর এখন ক্রিজে আরও বেশি সময় কাটানো উচিত। শুরু থেকেই বড় শট খেলার চেষ্টা না করে প্রথম দিকে অন্তত দশটা বল ওর ধরে খেলা উচিত। আমার বিশ্বাস, এতেই কাজ হবে। টেকনিক নয়, ওর সমস্যাটা টেম্পারামেন্টের। সেটা ফিরিয়ে আনতে পারলেই ফের সফল হবে। মুস্তাক আলি ট্রফিতে তো ও ভালই খেলেছে। একটা ৭৫-এর ইনিংসও আছে ওর। তা হলে এখানে পারবে না কেন? সারা দুনিয়ার কথা ভুলে স্বাভাবিক খেলার পরামর্শ দিয়েছি। জানি, এটাই করবে।”