গোলে বিশ্বকাপার আছে ভেবে শট নিইনি: বলজিত্‌

ঝড়ে উথালপাথাল সমুদ্রের উপর এক ধরনের পাখি ওড়ে। ভয়ঙ্কর ঝড়ের সঙ্গে লড়তেও যে ভীত নয়। ‘রাইম অব দ্য এনশিয়েন্ট মেরিনার’-এ এমন ঝড়ের পাখির কথা বলেছিলেন কোলরিজ। ভারতীয় ফুটবলে সেই ঝড়ের পাখি কি বলজিত্‌ সিংহ সাইনি? উত্তরে আটলেটিকোর এ দিনের গোলদাতা সল্টলেকের বাড়িতে ফিরে স্ত্রী পল্লবী আর পুত্র নবরূপের সঙ্গে খুনসুটির ফাঁকেও ফোন ধরে যা বললেন, তার পর সেই তুলনা আরওই আসতে পারে। “আমার জীবন জুড়েই তো ঝড়। ঝড়ের সঙ্গে লড়ে জেতার মজাটাই তো আলাদা।”

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫২
Share:

ঝড়ে উথালপাথাল সমুদ্রের উপর এক ধরনের পাখি ওড়ে। ভয়ঙ্কর ঝড়ের সঙ্গে লড়তেও যে ভীত নয়। ‘রাইম অব দ্য এনশিয়েন্ট মেরিনার’-এ এমন ঝড়ের পাখির কথা বলেছিলেন কোলরিজ।

Advertisement

ভারতীয় ফুটবলে সেই ঝড়ের পাখি কি বলজিত্‌ সিংহ সাইনি?

উত্তরে আটলেটিকোর এ দিনের গোলদাতা সল্টলেকের বাড়িতে ফিরে স্ত্রী পল্লবী আর পুত্র নবরূপের সঙ্গে খুনসুটির ফাঁকেও ফোন ধরে যা বললেন, তার পর সেই তুলনা আরওই আসতে পারে। “আমার জীবন জুড়েই তো ঝড়। ঝড়ের সঙ্গে লড়ে জেতার মজাটাই তো আলাদা।”

Advertisement

আর মর্গ্যানের বিরুদ্ধে? যার উত্তরে একটু আগেই যুবভারতীর মিক্সড জোনে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অন্ধ ভক্ত বলেছেন, “কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচে গোল করাটাই ছিল লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় আমি খুশি।”

মর্গ্যানের টিমের জালে বল ঢোকানোর এতটা একাগ্র কেন? এ বার গলার স্বর নামিয়ে বলজিত্‌, “খেলার সুযোগ পাচ্ছি। প্লিজ, বিতর্ক বাড়াবেন না। একটু খেলতে দিন।”

পঞ্জাব দা পুত্তর মুখ না খুলতে চাইলেও গোটা ময়দান জানে, ইস্টবেঙ্গলে মর্গ্যান জমানায় তিনি পরিণত হয়ে উঠেছিলেন কলকাতা লিগের ফুটবলারে। অথচ জেসিটিতে খেলার সময় থেকেই তাঁর লড়াকু ফুটবল প্রশংসিত বিশেষজ্ঞ মহলে। কিন্তু আটলেটিকো দে কলকাতার ছয় নম্বর জার্সিধারীর ভাগ্য এমনই, যখনই পারফর্ম করতে শুরু করেন তার পরেই অন্ধকার ঘনিয়ে আসে তাঁর কেরিয়ারে। জেসিটিতে উত্তরণের সময় হঠাত্‌ পথ দুর্ঘটনা, তার পর কলকাতায় ইস্টবেঙ্গলে সই। কিন্তু মর্গ্যানের মন কাড়তে পারেননি। এ দিন সে কথাই বলছিলেন, “ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে আপনি যত ভালই খেলুন না কেন, বিদেশিরাই প্রাধান্য পাবে। আটলেটিকো কোচ হাবাসের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, উনি আমাকে প্রথম দলে সুযোগ দিচ্ছেন। ভাল খেলার আত্মবিশ্বাস বাড়ছে আমার।”

সখেদ বলে যাচ্ছিলেন, “ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে কলকাতা লিগে এক বার ১৪ গোল করলাম। কিন্তু আই লিগে সে ভাবে সুযোগ পেলাম না।” ফালোপা জমানায় শেষমেশ এএফসি কাপে অ্যাওয়ে ম্যাচে তাঁকে প্রথম রাইট উইংয়ে খেলানো হয়। সেই সেমেন পাদাং ম্যাচে তাঁর ক্রস থেকেই গোল করেন মোগা। তার পরেও আর্মান্দো জমানায় সেই দ্বিতীয় সারিতে।

কিন্তু আইএসএলে প্রথম ম্যাচ থেকে তাঁকে খেলাচ্ছেন আটলেটিকো কোচ। বলজিতের গতি, চেহারা, সাহসই নাকি মন কেড়েছে হাবাসের। গোয়ায় রাইট ব্যাক ডেঞ্জিল চোট পেলে বলজিত্‌কেই রাইট ব্যাকে খেলানো হয়। “কোচ যেখানে খেলতে বলবেন সেখানেই নেমে পড়ব।”

আর এ দিনের গোল? “লুই গার্সিয়া বলে দিয়েছিল সুযোগ পেলেই গোলে শট নেবে। সেটাই করেছি।” কেরল ব্লাস্টার্সের বিশ্বকাপার ইংলিশ কিপার ডেভিড জেমসকে পরাস্ত করার অনুভূতি? বলজিত্‌ বলছেন, “কীসের অনুভূতি! গোলে শট মারার সময় কে বিশ্বকাপার আর কে স্থানীয় গোলকিপার মাথায় রাখি না!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement