হামাম। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র।
সংগঠক ব্রাজিলের নানা ত্রুটি নিয়ে এমনিতেই ক্ষতবিক্ষত ফিফা। এর মধ্যে আবার ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে পুরনো ঘা খুঁচিয়ে দিল এক ব্রিটিশ সংবাদপত্র। ঘুষ দিয়ে বিশ্বকাপ সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ার অভিযোগ ফের উঠল কাতারের বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপের সপ্তাহ দেড়েক আগে যা চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্রটির দাবি, কাতার ফুটবল ফেডারেশনের তৎকালীন শীর্ষকর্তা ও ফিফা এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য মহম্মদ বিন হামাম ৫০ লক্ষ ডলারেরও বেশি ঘুষ দিয়ে ফিফার সদস্যদের ভোট কিনেছেন। এই সংক্রান্ত প্রচুর গোপন নথি তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি সংবাদপত্রটির। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের পদে ছিলেন তখন হামাম। ফিফা প্রেসিডেন্টের নির্বাচনে সেপ ব্লাটারকে চ্যালেঞ্জও জানান তিনি। অবশ্য দু’বছর আগে তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে আজীবন নির্বাসিত করে ফিফা। এএফসি আর ফিফার পদ থেকে তার আগেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদপত্রটির আরও অভিযোগ, প্রায় তিরিশ জন আফ্রিকান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাকে ঘুষ দিয়েছেন বিন হামাম। অর্থের পরিমাণ কখনও ছিল দু’লক্ষ ডলার কখনও তারও বেশি। ফিফার প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যাক ওয়ার্নারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায় ১৬ লক্ষ ডলার। যার মধ্যে সাড়ে চার লক্ষ ডলার দেওয়া হয়েছিল ভোটের আগেই। ফিফার যে ২২ জন সদস্য সেই সময় ২০১৮ বিশ্বকাপ আর ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ছিলেন ওয়ার্নার তাঁদের মধ্যে এক জন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় চার বছর আগে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক ঠিক করা নিয়ে ভোটাভুটির গোটা প্রক্রিয়ার তদন্ত ফিফা আগেই শুরু করে দিয়েছিল। সন্দেহের তালিকায় ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপও রয়েছে। চলতি বছরেই তদন্ত শেষ হওয়ার কথা।
ঘুষ কেলেঙ্কারিতে বিশ্ব জুড়ে তোলপাড় পড়ে গেলেও বিন হামাম অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে বিশ্বকাপের বিড করার দায়িত্বে থাকা কাতারি কমিটি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমনিতেই কাতারের প্রচণ্ড তাপমাত্রায় বিশ্বকাপ আয়োজন করা নিয়ে অস্বস্তিতে ফিফা। যে জন্য গত মাসে ব্লাটার স্বীকারই করে নেন কাতারকে আয়োজক হিসেবে বাছাটা ভুল হয়েছিল। তার মধ্যে ফের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক ঠিক করার আবার ভোটের দাবি উঠেছে। ফিফার ভাইস প্রেসিডেন্ট জিম বয়েস চাপের মুখে বলে দিয়েছেন, অভিযোগ সত্যি প্রমাণ হলে তিনি ফের ভোটাভুটির পক্ষে।
এর মধ্যে আবার ফিফার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে একটি মার্কিন সংবাদপত্র। তাদের দাবি, চার বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের আগে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী ম্যাচ গড়াপেটা করা হয়েছে বলে সন্দেহ ফিফার তদন্তকারীদের। আরও সন্দেহ করা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবল সংস্থারই কারও কারও সাহায্য পেয়েছিল গড়াপেটাকারীরা।