সিঙ্গাপুরে প্রথম রাউন্ডেই হার সাইনা নেহওয়ালের।
সানিয়া মির্জার আগেই কি সাইনা নেহওয়াল-চমক শেষ!
টেনিস আর ব্যাডমিন্টনে দুই হায়দরাবাদি কন্যা ভারতে এই দুটো খেলায় নতুন জোয়ার এনেছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজের চোখধাঁধানো পারফরম্যান্সের দাপটে। সাতাশ বছরের সানিয়া তবু পেশাদার ট্যুরে ডাবলসে মোটামুটি ভাল ভাবে টিকে আছেন। এই মুহূর্তেও ছেলেমেয়ে মিলিয়ে ভারতীয় টেনিসে সানিয়াই বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ মেয়েদের ডাবলসে আট নম্বর। গত বছরও তিনটি খেতাব জিতেছেন। চলতি বছরে একটি মাস্টার্সে রানার্স। সাইনা সেখানে ব্যাডমিন্টনে সিঙ্গলসে আট নম্বর। কিন্তু গত অলিম্পিকে দেশকে প্রথম ব্যাডমিন্টন পদক (ব্রোঞ্জ) দেওয়া এবং একটা সময় বিশ্বের তিন নম্বর হয়ে ওঠার পরে গত দেড় বছরে তাঁর যা পদস্খলন, টেনিসে সানিয়ারও ততটা নয়। বুধবারও সিঙ্গাপুর সুপার সিরিজে প্রথম রাউন্ডেই সাইনা এক গেম এগিয়ে থেকেও নিজের থেকে অনেক নীচে (১৫) থাকা জাপানি প্রতিপক্ষ এরিকো হিরোসি-র কাছে হারেন ২১-১৬, ১৫-২১, ১১-২১।
“পায়ের চোটের পর সাইনা এখনও ফর্ম নিয়ে সমস্যায়। পুরো ফিটনেসে পৌঁছনো দরকার।
আরও শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।” —পুল্লেলা গোপীচন্দ
গত বছর পেশাদার ট্যুরে একটিও খেতাব জেতেননি সাইনা। পনেরো মাস পর এ বছর জানুয়ারিতে ইন্ডিয়ান গ্রাঁ প্রি গোল্ড-এ চ্যাম্পিয়ন হলেও সেটা ছিল অনেক সাধারণ মানের টুর্নামেন্ট। ফাইনাল হয়েছিল দুই ভারতীয়ের মধ্যে (সাইনা-সিন্ধু)। কিন্তু বাদবাকি সবেতে সাইনার ঘোরতর ব্যর্থতা অব্যাহত। এবং বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে সাম্প্রতিক স্লোগান ‘চায়না ভার্সাস সাইনা’-কে জলাঞ্জলি দিয়ে এ দিনের সিঙ্গাপুর ওপেন বাদে সব টুর্নামেন্টে চিনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছেই হারছেন সাইনা। সে অল ইংল্যান্ড বা সুইস ওপেনে চিনা তারকা শিজিয়ান বা ইহান হন, বা মালয়েশিয়া ওপেনে অখ্যাত জুই ইয়াও হন।
কী হয়েছে চব্বিশের সাইনার?
তাঁর মেন্টর গোপীচন্দ কিংবা আইডল, কিংবদন্তি ইন্দোনেশিয়ান তৌফিক হিদায়েতের মন্তব্যের সারমর্ম; “পায়ের চোটের পর সাইনা এখনও ফর্ম নিয়ে সমস্যায়। পুরো ফিটনেসে পৌঁছনো দরকার। আরও শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।” গত সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়ান ওপেন সুপার সিরিজে (সেখানেও ইহানের কাছে হারেন) এসে মালয়েশিয়ান কিংবদন্তি রশিদ সিদেক-ও বলেছেন, “শীর্ষ পর্যায়ে সেরা চিনাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে সাইনাকে মূলত শক্তি আর গতি অনেক বাড়াতে হবে। চিনারা যখন কোর্টে দ্রুততর হচ্ছে, সাইনাকে কোর্টে তখন আগের চেয়ে মন্থর দেখাচ্ছে।” সাইনা নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন “আমাকে আরও অনুশীলন করে ফিট হয়ে উঠতে হবে। আর দরকার আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা।”
কিন্তু সাফল্যই তো আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সাইনার সেই সাফল্য কোথায়?