চেলসিকে নিয়ে গল্প পাল্টাতে মরিয়া মোরিনহো

সময়টা তখন ৮৭ মিনিট। প্যারিস সাঁ জাঁর ডিফেন্ডারদের জটের মধ্যে থেকে গোল করে চেলসিকে ২-০ এগিয়ে দিলেন দেম্বা বা। ঠিক তখনই নিজের ট্রেডমার্ক স্টাইলে মাঠের ধারে দৌড় শুরু করলেন তিনি। মনে করিয়ে দিলেন ২০০৪ সালের সেই বিখ্যাত দৌড় যখন তাঁর এফসি পোর্তো ছিটকে দিয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে। পার্থক্য একটাই। তখন লং কোট ছিল। এখন জ্যাকেট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৮
Share:

সময়টা তখন ৮৭ মিনিট। প্যারিস সাঁ জাঁর ডিফেন্ডারদের জটের মধ্যে থেকে গোল করে চেলসিকে ২-০ এগিয়ে দিলেন দেম্বা বা। ঠিক তখনই নিজের ট্রেডমার্ক স্টাইলে মাঠের ধারে দৌড় শুরু করলেন তিনি। মনে করিয়ে দিলেন ২০০৪ সালের সেই বিখ্যাত দৌড় যখন তাঁর এফসি পোর্তো ছিটকে দিয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে। পার্থক্য একটাই। তখন লং কোট ছিল। এখন জ্যাকেট।

Advertisement

‘তিনি’-- ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান’ হোসে মোরিনহো। যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফুটবল দুনিয়াকে উপহার দিলেন আর এক ‘স্পেশ্যাল’ রাত। প্রথম পর্বের ম্যাচে ১-৩ হারলেও এ দিন প্যারিস সাঁ জাঁকে ২-০ হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠল চেলসি। দু’পর্ব মিলিয়ে ৩-৩ হলেও, অ্যাওয়ে গোল নিয়মেই শেষ চারে মোরিনহোর দল। প্রথমার্ধে পরিবর্ত আন্দ্রে সুরলের গোলে ১-০ এগোয় চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধে অনেক চেষ্টা করেও ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হয় মোরিনহোর দল। কিন্তু ৮৭ মিনিটে ম্যাচের ছবি পাল্টায়। দেম্বা বা-র গোলে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের দলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। যদিও চোট পেয়ে প্রথমার্ধের মাঝামাঝি মাঠ ছাড়তে হয় এডেন হ্যাজার্ডকে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে নিজের রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলেন মোরিনহো। তাঁর ছকের জালে জড়িয়ে বিদায় নিতে হল থিয়াগো সিলভা-লুকাস মৌরাদের। ম্যাচের শেষে মোরিনহো তো বলেই দিলেন, “আমার ফুটবলাররা বুঝতে পেরেছে ওদের কী রকম খেলতে হবে। আমরা একসঙ্গে জিতি আবার একসঙ্গেই হারি। শুধু এখন আর একসঙ্গে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই।” শেষ মুহূর্তে দেম্বা বা-র গোলের পরে মোরিনহোকে দেখা যায়, সাইডলাইনের ধার দিয়ে কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে গিয়ে প্লেয়ারদের উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। তখন মনে হচ্ছিল, মোরিনহো বুঝি উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছেন। পরে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘সত্যিই বলছি সেলিব্রেট করার জন্য আমি দৌড়াইনি। ফুটবলারদের বোঝাতে হত শেষ কয়েক মিনিট কে কী রকম খেলবে ওরা। কারণ জানতাম গোল দেওয়ার পরে অনেকক্ষণ ওরা সেলিব্রেট করবে এই ভেবে যে ম্যাচ শেষ।”

Advertisement

চেলসির ম্যাচ দেখতে বক্সে বরিস বেকার।

তাঁর দল ছিটকে গেলেও, নিজের মোরিনহো-প্রীতির প্রমাণ দিলেন ইব্রাহিমোভিচ। ম্যাচ শেষে মোরিনহোর টিভি সাক্ষাৎকারের মাঝে হঠাৎই আবির্ভাব ঘটে ইব্রার। পিছন থেকে প্রথমে কোচকে একটা খোঁচা মারেন। মোরিনহো চমকে পিছনে তাকাতেই পুরনো কোচকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানান সুইডেনের মহাতারকা।

অতীতে মোরিনহো এবং চেলসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলেও, জুটিতে তা আসেনি। প্রথমবার মোরিনহো চেলসি কোচ থাকাকালীন দু’বার শেষ চারে উঠেছিল দল। কিন্তু একটাও জিততে পারেনি। এ বারও কি সেই একই ছবির পুরনাবৃত্তি ঘটবে নাকি গল্পের শেষটা পাল্টাবে? যে প্রসঙ্গে চেলসির পর্তুগিজ কোচের সংযোজন, “যদি কোয়ার্টার ফাইনালে আটটা ভাল দল থাকে, তা হলে সেমিফাইনালে লড়াই আরও কঠিন হবে। কিন্তু কাদের সঙ্গে খেলতে হবে, তা ভেবে আমি চিন্তিত নই। কারণ আমার দলে অভিজ্ঞতার অভাব নেই।”

মেসিদের বিদায়, শেষ চারে বায়ার্ন

এভরার গোলে ১-০ এগিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠতে পারল না ম্যান ইউ। উল্টে মানজুকিচ, মুলার ও রবেনের গোলে আরও একটা সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল বায়ার্ন মিউনিখ। দু’পর্ব মিলিয়ে ৪-২ জিতল বায়ার্ন। তবে বুধবারের সবচেয়ে বড় অঘটন, আটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে বার্সার ০-১ হার। ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যে কোকের দুরন্ত গোল বাকি ৮৫ মিনিটেও শোধ দিতে ব্যর্থ মেসিরা। দু’পর্ব মিলিয়ে ২-১ জিতল আটলেটিকো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন