রিওতেও চমকে দিতে পারে লি

জার্মান কাঠিন্য অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে জকোভিচকে

চমকটা বছর দেড়েক আগেই দিয়েছিল জকোভিচ। বরিস বেকারকে হেড কোচের দায়িত্বে এনে। তখন ও সদ্য নাদালের কাছে এক নম্বরের সিংহাসন খুইয়েছে। বিশ্বের সেরা প্লেয়ারদের কোচিং জীবনে ব্যর্থতার নজির কম নেই। সবচেয়ে বড় উদাহরন তো ফুটবলেই আছে-- মারাদোনা। আর্জেন্তিনাকে বিশ্বকাপ দিলেও মেসিদের কোচ হিসেবে সাফল্য কোথায় দিয়েগোর! তা ছাড়া বেকারের মতো বড় মাপের প্লেয়ার কোচের ভূমিকায় থাকলে সার্বিয়ান চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে ইগোর সংঘাতের আশঙ্কাও ছিল। নোভাক কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিল মেলবোর্নে। আবারও।

Advertisement

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১১
Share:

চিয়ার্স। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে নায়ক। ছবি: এএফপি

চমকটা বছর দেড়েক আগেই দিয়েছিল জকোভিচ। বরিস বেকারকে হেড কোচের দায়িত্বে এনে। তখন ও সদ্য নাদালের কাছে এক নম্বরের সিংহাসন খুইয়েছে।

Advertisement

বিশ্বের সেরা প্লেয়ারদের কোচিং জীবনে ব্যর্থতার নজির কম নেই। সবচেয়ে বড় উদাহরন তো ফুটবলেই আছে-- মারাদোনা। আর্জেন্তিনাকে বিশ্বকাপ দিলেও মেসিদের কোচ হিসেবে সাফল্য কোথায় দিয়েগোর! তা ছাড়া বেকারের মতো বড় মাপের প্লেয়ার কোচের ভূমিকায় থাকলে সার্বিয়ান চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে ইগোর সংঘাতের আশঙ্কাও ছিল। নোভাক কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিল মেলবোর্নে। আবারও।

অ্যান্ডি মারের কাছে ওর ৭-৬ (৫), ৬-৭ (৪), ৬-৩, ৬-০ জয়টা শুধু পাঁচ নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আর সব মিলিয়ে কেরিয়ারের আট নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামই নিশ্চিত করল না। তার সঙ্গে ওর শারীরিক আর মানসিক টাফনেসটা ঠিক কোন পর্যায়ের সেটাও দেখিয়ে দিল। তৃতীয় সেটে তো ও পেশির টানের সমস্যায় প্রায় খোঁড়াচ্ছিল। পাঁচ বছর আগে যে অবস্থায় মেলবোর্ন পার্কেই জোকার হেরে গিয়েছিল জো সঙ্গার কাছে। এ দিন সেটা হল না বেকারের জার্মান টাফনেসটা ঠিক ওই সময়ই ছাত্রের মধ্যে জ্বলে ওঠায়। কোর্টের কঠিনতম জায়গা থেকেও ওই সময় এমন সব শট মারল নোভাক, যেটা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এক সেট খুইয়ে বসে থাকার চাপ নিয়ে প্রায় টানা ন’টা গেম জিতল ওই সময়।

Advertisement

নাদাল-ফেডেরার বা নাদাল-জকোভিচ লড়াই যে রকম দেখেছি তার তুলনায় এই ম্যাচটা আমার কাছে অতটা নম্বর পাবে না। নাদাল-জকোভিচ মহাযুদ্ধ যদি সাড়ে আট নম্বর পায়, এ দিনের ম্যাচকে আমি সাত দেব। তবে এই নোভাকের বিরুদ্ধে জেতাটা যে কী অসম্ভব কঠিন, চার নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে ব্যর্থতার পর শুধু মারে নয়, টেনিস বিশ্বের কাছেও সেটা পরিষ্কার। বেকার শুধু টেকনিক্যাল উন্নতিগুলোই নয় নোভাকের মধ্যে আগ্রাসনটাও ঘষেমেজে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

রড লেভার এরিনায় তার আগেই আরও একটা চমক ছিল-- একচল্লিশের ‘তরুণ’ লিয়েন্ডার পেজের থেকে। মার্টিনা হিঙ্গিসের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার যুদ্ধে ১৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতাটা লিয়ের কেরিয়ারের আরও একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকল। ফাইনালে ওরা ৬-৪,৬-৩ হারাল ড্যানিয়েল নেস্তর-ক্রিস্টিনা ম্লাদেনোভিচ জুটিকে। জয়ের পিছনে আসল কারণ ওর অসম্ভব সাফল্যের খিদে আর তুখোর ফিটনেস। ওর কাছে এখন আর কোনও শিখর ছোঁয়ারই বাকি নেই। বরং এখন ও যা-ই জিতবে সেটাই আমাদের জন্য বোনাস।

অনেকে প্রশ্ন করবেন এই লিয়েন্ডার কি রিও অলিম্পিকে দেশকে পদক এনে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে? কে ভেবেছিল এই বয়েসেও সর্বোচ্চ পর্যায়ের টেনিসে ও চ্যাম্পিয়নের ফিটনেস রাখতে পারবে! আমি তো বলব সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রিও অলিম্পিকে এই ফিটনেসের লিয়েন্ডারের পদক জেতার সুযোগ অবশ্যই আছে। এখনও ঠিক হয়নি রিওতে নামলে লিয়েন্ডারের পার্টনার কে হবে। তবে সানিয়ার সঙ্গে জুটিতে খেললে দেশকে আরও একটা পদক এনে দিতে পারে ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন