হাসিমুখে ভক্তকে খুশি করা।
নতুন মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন এখনও শুরু হয়নি। বাড়িতে বসে তাই প্রাণ ভরে বিশ্বকাপের উত্তেজনা উপভোগ করছি। নেইমার, ফান পার্সি, রুনি, মেসিদের দেখে ফেললাম। আর কয়েক ঘণ্টা পরে জীবনের তৃতীয় বিশ্বকাপে নেমে পড়বে আরও একজন— ফিফার বর্ষসেরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
প্রথম ম্যাচেই রোনাল্ডোর পর্তুগাল আবার মুখোমুখি হচ্ছে জার্মানির। যারা মরার আগে কখনও মরে যায় না। শেষ দশ ম্যাচে একটাতেও হেরে ফেরেনি। বিশ্বকাপে জার্মানদের ট্র্যাক রেকর্ডও অত্যন্ত ঝকঝকে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, গোয়া অতীতে পর্তুগিজ কলোনি থাকায় বিশ্বকাপে আমার রাজ্যে পর্তুগাল এবং ব্রাজিলের সমর্থক অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। কারণ, এই দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, খাবারদাবারে অনেক মিল। তাই এখনই বলে দিতে পারি, সোমবার রাত সাড়ে ন’টায় গোটা গোয়া বসে পড়বে টিভির সামনে। জার্মানি-পর্তুগাল ম্যাচটা দেখতে। মোদ্দা কথা, পাওয়ার ফুটবলের বিরুদ্ধে বিশ্বের সেরা ফুটবলার রোনাল্ডো তার সূক্ষ্ম পায়ের কাজ দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে পারে কি না, সেটাই সবাই দেখতে চায়।
মানছি পেপে, কোয়েন্ত্রাও, নানি, মোতিনহো, কার্ভালহোরাও তো রয়েছে পওলো বেন্তোর দলে। তা হলে এত রোনাল্ডো-রোনাল্ডো চেঁচামেচি কেন? ‘গ্রুপ অব ডেথ’-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ঘানার সঙ্গে পড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সামনে পর্তুগাল। সেখানে প্রথম ম্যাচে জোয়াকিম লো-র মস্তিষ্ক, ন্যয়ারের অবিশ্বাস্য কিপিং, বোয়াতেং-এর কোবরা ট্যাকল, পোডলস্কির গোলের নেশা, সোয়েনস্টাইগারের শক্তপোক্ত প্রতিরোধ, মেসুত ওজিলের সৃষ্টিশীল ফুটবলের বিরুদ্ধে পর্তুগিজদের ওয়ান ম্যান আর্মি কিন্তু ওই সিআর সেভেন। পুরোপুরি ফিট থাকলে যে একাই পারে কাপ জেতার অন্যতম দাবিদার জার্মানদের দুমড়ে মুচড়ে দিতে। ওর উইং ধরে দ্রুত গতির ফুটবল, হেড, ফ্রি-কিক— সব এক একটা ব্রহ্মাস্ত্র। কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে আসা রোনাল্ডো তাই জোয়াকিম লো-র চিন্তা বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। ২০০৬-এর বিশ্বকাপ বা ২০০৮ ও ২০১২-র ইউরো কাপ-- তিন বারই অবশ্য জার্মানিকে হারাতে পারেনি পর্তুগাল। রোনাল্ডোও পারেননি কোনও গোল করতে। প্রশ্ন এটাই, যে এ বারও কি সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হবে, না কি জার্মানদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ থেকেই স্বমহিমায় দেখতে পাওয়া যাবে রোনাল্ডো আর তার দলকে?
শেষে আরও একটা কথা বলতে চাই, রোনাল্ডোর সঙ্গে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোজেকেও কিন্তু দেখতে মুখিয়ে রয়েছি এই ম্যাচে। আর এক গোল করলেই ক্লোজে ধরে ফেলবে বিশ্বকাপে সর্বাধিক গোল করা ব্রাজিলের রোনাল্ডোকে (১৫ গোল)। তাই ক্লোজেও কিন্তু তেতে থাকবে।