লাল-হলুদের সরকারি আত্মপ্রকাশ। বুধবার। ছবি: উৎপল সরকার
এক জন মাল্টায় সস্ত্রীক ছুটি কাটাচ্ছেন। অন্য জন ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে ঝড় তুলে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ফোনে বেশ কয়েক বার কথা হলেও, এখনও দেখা হয়নি দু’জনের। এই মুহূর্তে কয়েক হাজার মাইল দূরত্বে তাঁদের অবস্থান। তাতে কী? র্যান্টি মার্টিন্স এবং ডুডু ওমাগবেমি-- ইস্টবেঙ্গলের দুই নাইজিরীয় যুগলবন্দির ভাবনায় কী আশ্চর্য মিল!
“দেখবেন আমার আর ডুডুর জুটি দারুণ জমে যাবে। আমরা প্রচুর গোল করব। ও ইউরোপে খেলে এসেছে। ভাল স্কিমার, গোলগেটারও,” লাল-হলুদ জনতার হৃদয় তোলপাড় করে দেওয়ার মতোই মন্তব্য করলেন র্যান্টি। বুধবার অনুশীলনের পর। এবং কী আশ্চর্য, র্যান্টির মন্তব্যের আগের রাতেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে ডুডু বলেছিলেন, “র্যান্টির সঙ্গে কখনও খেলিনি। তবে ও দারুণ ফুটবলার। আমাদের জুটি সফল হবেই।”
ডুডুর স্বদেশীয় র্যান্টির উচ্ছ্বাসের আরও বড় কারণ— “আমাদের খেলার ধরন আলাদা হতে পারে। তবে সেটা কোনও সমস্যা নয়। বরং ডুডু আর আমি ভাল বন্ধু। পাশাপাশি আমরা একই দেশের হওয়ায় খেলা চলাকালীন নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারব। এটা কিন্তু আমাদের বোঝাপড়া বাড়াতে সাহায্য করবে।”
ফুটবল বিশেষজ্ঞরাও এই দুই ফুটবলারের সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তাঁরা যে কারণগুলো দেখাচ্ছেন—
এক) দু’জনের দেশই নাইজিরিয়া।
দুই) দু’জনেই পজিটিভ স্ট্রাইকার।
তিন) আলাদা মরসুমে হলেও দু’জনেই আর্মান্দোর কোচিংয়ে ডেম্পোতে খেলেছেন। কোচ কী চান জানেন।
মিলের পাশাপাশি অমিলও রয়েছে দু’জনের। ভারতের ক্লাবে খেলার বিচারে ডুডুর তুলনায় র্যান্টির সাফল্য অনেক বেশি। ডেম্পোতে থাকাকালীন জাতীয় লিগ এবং আই লিগ মিলিয়ে পাঁচ বার ভারতের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছেন র্যান্টি। পাঁচ বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন (জাতীয় লিগ এবং আই লিগে)। ভারতের ক্লাবে এত সাফল্য নেই ডুডুর। তিনি আবার মাঝে সাত বছর ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে সাফল্যের সঙ্গে খেলেছেন। গত মরসুমে সালগাওকরে ফিরেই চমকে দিয়েছেন। র্যান্টি ইতিমধ্যে কলকাতায়ও খেলে ফেলেছেন। ডুডুর বাংলার ক্লাবে খেলা এই প্রথম বার।
গত বছর সালগাওকরে খেলা স্ট্রাইকারের বড় আফসোস আই লিগ না পাওয়া। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লিখেছেন, “আই লিগের খুব কাছে গিয়েও পাইনি। এ বার সেটা পাওয়ার ইচ্ছে নিয়েই র্যান্টির সঙ্গে একই ক্লাবে খেলতে আসা।” ডুডুর অধরা ইচ্ছে পূরণ করতে বদ্ধপরিকর তাঁর দেশি সতীর্থ। র্যান্টি বললেন, “আই লিগ জেতার স্বপ্ন নিয়েই তো প্রত্যেকটা মরসুম শুরু করি। আশা করি, এ বার ডুডু, আমি এবং দলের বাকিরা মিলে আই লিগ এনে দিতে পারব ইস্টবেঙ্গলকে।”
ডুডু ময়দানে আসছেন সেপ্টেম্বেরে। র্যান্টির সঙ্গে নেমে পড়বেন অনুশীলনে। আপাতত ডুডু-র্যান্টি ঝড় দেখার অপেক্ষা!