ইস্টবেঙ্গলের নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপার লিও বার্তোস।
আবেদন জানিয়েছেন দূতাবাসে। হাতে ভিসা পেলেই উঠে পড়বেন কলকাতার বিমানে। লাল-হলুদ জার্সি পরার জন্য। মুখিয়ে আছেন ৩১ অগস্টের ডার্বি খেলতে। কী ভাবনা নিয়ে নিউজিল্যান্ডের এই বিশ্বকাপার আসছেন শহরে? সোশ্যাল সাইটে চ্যাট করতে করতে আনন্দবাজারকে নিজের মনের কথা জানালেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন তারকা লিও বার্তোস।
প্রশ্ন: চার বছর আগে বিশ্বকাপ খেলেছেন? এরপর হঠাৎ ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবে কেন?
লিও: বহু দেশে খেলেছি। বলতে পারেন ফুটবলার জীবনে কিছুটা নতুনত্ব আনতেই এই সিদ্ধান্ত। আমি ভারতে খেলা অনেক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম ইস্টবেঙ্গলের নাম। ক্লাবের ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছি ভারতের সেরা ক্লাবের মধ্যে একটা ইস্টবেঙ্গল। প্রস্তাবের অভাব ছিল না। তা সত্ত্বেও ফুটবলে পিছিয়ে থাকা একটা দেশের একটা বড় ক্লাবে খেলার চ্যালেঞ্জটা নিলাম।
প্র: ভারতে এসে কি নতুনত্ব পাবেন? ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তো আপনার দেশের তুলনায় ভারত অনেক অনেক পিছিয়ে?
লিও: দেখুন একজন ফুটবলারের ফুটবল জীবন খুব ছোট। বয়স যত বাড়ে খেলার দিন তত কমে। আমি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সব জায়গায় খেলেছি। তা হলে ভারত নয় কেন? ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা ওখানে কম নয়। পেলে, মেসি, মারাদোনাকে দেখতে শুনেছি ভারতে লোক হামলে পড়ে। কলকাতায় লাখের উপর লোক হয় স্টেডিয়ামে। এটা তো বিশাল ব্যাপার। তার মানে দেশটা ফুটবল-পাগল।
প্র: কলকাতা ডার্বির সম্পর্কে কিছু জানেন? ভারতের ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচ তো ওটাই, জানেন?
লিও: এই ব্যাপারে আমাকে শেখাচ্ছে আমার নতুন টিম ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরাই। অনেকে আমায় ফেসবুকে ডার্বির ছবি পাঠিয়েছে। শুনেছি হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ হয় মোহনবাগানের সঙ্গে। দু’দলই ওই ম্যাচ জিততে চায়। মাঠে সবথেকে বেশি লোক হয়। আমিও জিততে চাইব নিশ্চয়ই। ওই খেলাটার জন্য এখন থেকেই কেমন যেন একটা উত্তেজনা হচ্ছে।
প্র: আপনার ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা আছে নিশ্চয়ই? সেখানেও কি এ রকম উত্তেজনা থাকে?
লিও: হ্যা, অনেক বার ডার্বি ম্যাচ খেলেছি। ডার্বি মানেই আলাদা একটা অনুভূতি। নব্বই মিনিটের জন্য পুরো শহর ভাগ হয়ে যায়। পুরো স্টেডিয়াম ভর্তি থাকে। পরিবারের সদস্যরা একে অপরের বিরুদ্ধে ভাগাভাগি হয়ে যায়। বিশ্বে প্রতিটা লিগেই ডার্বি ম্যাচ থাকে। ওয়েলিংটন বনাম মেলবোর্ন ভিক্ট্রি ম্যাচটা ডার্বি বলে সবাই। খেলেছি সেটায়। প্রচণ্ড চাপ থাকে। চাপ নিতে আমি তৈরি।
প্র: প্রায় ছ’বছর আপনি অস্ট্রেলিয়ান লিগে ওয়েলিংটন ফিনিক্সে খেলেছেন?
লিও: হ্যাঁ, ছ’বছর ওই ক্লাবে খেলেছি। ১২০ ম্যাচ। অনেক স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছি। সেরা ফুটবলারও হয়েছি।
প্র: কলকাতা সম্পর্কে কিছু জানেন?
লিও: অনুশীলন আর জিমে যাওয়ার মতোই কলকাতার গাইডবুক নিয়মিত পড়া অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। কোথায় কোথায় ঘুরতে যাব, তালিকা বানাচ্ছি। আগেও অনেক অজানা শহরে থেকেছি। নতুন নতুন শহর ঘুরতে আমার খুব ভাল লাগে। তবে সবার আগে দেখতে যাব একটা মাঠ। বারবার ওটার কথা শুনছি।
প্র: কোন জায়গা?
লিও: যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ওখানে না কি দেড় লাখ লোক খেলা দেখতে যায়?
প্র: কোচ আর্মান্দোর সঙ্গে কথা হয়েছে?
লিও: না এখনও কথা হয়নি।
প্র: আপনি তো অ্যাটাকিং মিডিও। কোচ স্ট্রাইকারে বা অন্য কোনও জায়গায় খেলালে খেলবেন?
লিও: আগে কথা বলি কোচের সঙ্গে। দেখি আমাকে নিয়ে দলে ওনার কী ভাবনা রয়েছে। তার পর যা বলার বলব। আমার পজিশন নিয়ে খুঁতখুঁতানি নেই। তবে আমি একটু আক্রমণাত্মক হতে ভালবাসি।