লুই গার্সিয়াকে কি পরের মরসুমে রাখছে না আটলেটিকো দে কলকাতা?
কোচ আন্তোনিও হাবাসের আপত্তি সত্ত্বেও কি রেখে দেওয়া হবে ফিকরু তেফেরাকে?
ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সংগঠক আইএমজিআরের কাছে কলকাতার পক্ষ থেকে বিদেশিদের যে তালিকা গোপনে শুক্রবার পাঠানো হয়েছে তাতে টিমের মার্কি ফুটবলার স্পেনের বিশ্বকাপার গার্সিয়ার নাম নেই। তবে রয়েছে ইথিওপিয়ান স্ট্রাইকার বিতর্কিত ফিকরুর নাম। গতবারের নয় বিদেশির মধ্যে যে চার ফুটবলারকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম রাখবে বলে আপাতত জানিয়েছে তাঁরা হলেন, বোরহা, হোফ্রে, পোদানি এবং ফিকরু। এদের মধ্যে ফিকরু ছাড়া বাকি তিন ফুটবলারই কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করার ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। বোহেমিয়ান আচরণ, সতীর্থদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, চোট সত্ত্বেও জোর করে খেলার চেষ্টার জন্য ফিকরুর উপর বেজায় চটে যান কোচ হাবাস। সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে দলের হোটেলেই তাঁকে ঢুকতে দেননি হাবাস। ফাইনালের আগে পাঠিয়ে দেন কলকাতাতেই। কর্তারা রেখে দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করা সত্ত্বেও পাত্তা দেননি স্প্যানিশ কোচ। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ভারত ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারেও কলকাতার কোচ বলে দিয়েছিলেন, “পরের বার আমি কোচ থাকলে ফিকরুকে দলে নেব না।” গার্সিয়ার সঙ্গে নাম নেই ফাইনালে খেলা দুই সেরা ফুটবলার নাতো এবং বেটের। সেটাও আশ্চর্যের।
কেন গার্সিয়াকে বাদ দিয়ে ফিকরুকে নেওয়া হল? এটিকে-র এক প্রভাবশালী কর্তা বললেন, “ওটা স্ট্র্যাটেজি। চারটে জায়গা ব্লক করে রাখা হয়েছে। কোচের সঙ্গে আমাদের এখনও কথাবার্তা চলছে। ওঁর কিছু দাবি আছে। সেগুলো নিয়ে কথাবার্তা চলছে। হাবাস কোচ হয়ে এলে এর সঙ্গে কথা বলেই সব চূড়ান্ত হবে। কোচ না চাইলে ফিকরুকে রাখবেন না। দেখা যাক কী হয়?”
সামারসল্ট এবং গোলের জন্য ফিকরু কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার হয়ে উঠেছিলেন টুর্নামেন্টের সময়। কোচের সঙ্গে ঝামেলার আগে সবথেকে বেশি ইউএসপি-ও ছিল তাঁরই। দলের বিপণনের জন্য এরকম একজন ফুটবলারকে এবারও চাইছেন এটিকে কর্তারা। তাদের ধারণা হাবাসকে বুঝিয়েসুজিয়ে রাজি করাতে পারবেন, ফিকরুকে নেওয়ার জন্য। কিন্তু গার্সিয়া বাদ কেন? ওই কর্তা বললেন, “মার্কি ফুটবলার নিয়ে টানাটানি কম। বাজারে প্রচুর প্রাক্তন বিশ্বকাপার আছে। সে জন্যই গার্সিয়াকে ছেড়ে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া দেখতে হবে ও এ বার কত টাকা চায়। বাজেটের মধ্যে কুলিয়ে গেলে ওকে রেখে দেব না হলে বাদ। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন কোচই।” কর্তারা চেষ্টা করছেন বেশ কিছু ভাল বিদেশি ফুটবলার আনতে। এ বছর বিদেশি ফুটবলারদের ড্রাফট হচ্ছে না। সে জন্য বাইরে থেকে ফুটবলার বেছে আনতে অসুবিধা নেই।
বিদেশিদের পাশাপাশি ছয় ভারতীয় ফুটবলারকেও বেছে নিয়েছেন কলকাতার কর্তারা। এঁরা হলেন, অর্ণব মণ্ডল, কেভিন লোবো, শুভাশিস রায়চৌধুরী, বলজিত্ সাইনি, ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কো এবং মোহনরাজ। ফাইনালের গোলদাতা মহম্মদ রফিকের নাম অবশ্য তালিকায় নেই। কেন? এটিকের এক কর্তা বললেন, “নিয়ম হয়েছে ছয় জন ফুটবলারকে রেখে দেওয়া যেতে পারে। বাকিদের নিতে হবে ড্রাফট পুল থেকে। ডেঞ্জিল এবং মোহনরাজের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি আছে। ওদের বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। বাকি চার জন তো ভালই খেলেছেন। রফিককে তাই রাখা যায়নি।”
সেপ্টেম্বরে শুরু হবে আইএসএল-টু। সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। সব দলই তাই করছে। হাবাসের সঙ্গে মার্চের শেষে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। সেটা হয়ে গেলেই বাকি কাজ শুরু করে দিতে চান কলকাতার কর্তারা।