বয়স্ক এক ব্যক্তির দিকে তাক করা বন্দুকটা। দাবি তিন লাখ পাউন্ডের। না হলে...
দৃশ্যটা দেখে চমকে ওঠার মতোই। চমকে গিয়েছিলেন কার্লোস তেভেজও। বয়স্ক ব্যক্তিটি যে তাঁর বাবা। সেগুনডো তেভেজ।
মঙ্গলবার ভোরে আর্জেন্তিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের কাছেই এই অপহরণ হইচই ফেলে দিয়েছিল বিশ্বে। বাবার অপহরণকারীদের সঙ্গে ইতালি থেকে রফা করতে এগিয়ে আসেন স্বয়ং আর্জেন্তিনার তারকা ফুটবলারও। শেষ পর্যন্ত আট ঘণ্টা পর তিরিশ হাজার পাউন্ডে রফা হওয়ার পর মুক্ত হন তেভেজের পালক পিতা। মা তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার পর যাঁর কাছে বড় হয়ে ওঠেন জুভেন্তাসের তারকা ফুটবলার।
ক’দিন আগেই বাবার জন্মদিনে তেভেজ টুইট করেছিলেন, ‘কী ভাবে মানুষ হতে হয় সেটা তুমিই আমায় দেখিয়েছ। তোমার দুঃখ আমার, আর আমার কৃতিত্ব তোমার তৃপ্তি। লাভ ইউ ওল্ড ম্যান। হ্যাপি বার্থডে।’ সেই টুইটারেই আবার তিনি বাবার মুক্ত হওয়ার ব্যাপার নিশ্চিত করে জানান, ‘এ ভাবে পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। জানাতে চাই আমার বাবা এখন সুরক্ষিত আছেন। ভাল আছেন। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
মা’র তাঁকে ছেড়ে যাওয়া আর জন্মদাতা পিতা মারা যাওয়ার পর মাসি আর মেসো সেগুনডোর কাছেই মানুষ কার্লোস। সেগুনডোর পদবিও ব্যবহার করেন আর্জেন্তিনীয় তারকা। আর এই পদবিই কাল হল।
আর্জেন্তিনার মিডিয়া জানাচ্ছে অপহরণকারীরা নাকি প্রথমে সেগুনডোর গাড়ি ছিনতাই করে তাঁকে ছেড়ে দিচ্ছিল। হঠাৎ তাঁর ড্রাইভিংয়ের কাগজপত্রের দিকে নজর যেতেই ফিরে আসে অপহরণকারীরা। সেগুনডোর পদবি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তাঁকে অপহরণ করে। অবশ্য সবিনয় এটাও জানিয়ে দিতে ভোলেনি, ‘‘কার্লোস আমাদের আদর্শ। আমরা ওকে আঘাত দিতে চাই না। কেনই বা চাইব? কিন্তু আমাদেরও তো ছেলেপুলে আছে। তাই অর্থটা চাই। কোনও বিকল্প নেই। আশা করি কার্লোস আমাদের ক্ষমা করে দেবে।”
তেভেজ ক্ষমা করবেন কি না জানা নেই, তবে আর্জেন্তিনার সুরক্ষা সচিব সের্জিও বেরনি অপহরণকারীদের ক্ষমা করার পথে যে হাঁটবেন না সেটা নিশ্চিত। মঙ্গলবার রাতেই তিনি কথা দিয়েছেন, যে করে হোক অপরাধীদের খুঁজে বার করবেনই। আর্জেন্তিনা পুলিশের সন্দেহ ঘটনায় জড়িত তিন অপরাধী। আর তারা পেশাদার নয়। তেভেজের বাবা নাকি বলেছেন, অপহরণকারীরা রাস্তায় গাড়ির জ্বালানি নেওয়ার সময় পেট্রোল পাম্পে তাঁকে খাবার আর জলও দিয়েছিল।