২০.৪ - ৪ - ৬৭ - ৬
মইন আলিকে খেলতে গিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের নাকানিচোবানি দেখে কিছুটা অবাকই হচ্ছি। ইংল্যান্ড আজ পর্যন্ত ক্রিকেটকে যা সব স্পিনার উপহার দিয়েছে, তার তুলনায় মইন তেমন কিছু নয়। ওর বিশেষ কোনও বৈচিত্র নেই। বড় টার্ন করাতে পারে না। দুসরা জানে না। পার্টটাইম বোলার হিসেবে ঠিক আছে।
তা হলে সে কী ভাবে কোহলি-পূজারা-জাডেজাদের আউট করে দিল? যারা কি না এক এক জন স্পিন বোলিং খেলায় ওস্তাদ?
প্রথমত, মইন বড় টার্ন করায় না ঠিকই, কিন্তু অফ স্টাম্প লাইনটাকে খুব ভাল চেনে। ও জানে, টার্নের দিকে না গিয়ে লাইনে রেখে যাওয়া ভাল। বৈচিত্রের চেয়ে স্ট্রেটার দেওয়া ভাল। সাউদাম্পটনে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের সময় পূজারা আর বিরাটের আউটকে ধরা যাক। দু’টো ডেলিভারিই অফ স্টাম্প লাইনে ছিল। আর তেমন কিছুই টার্ন করেনি।
দ্বিতীয়ত, মইন অন্য অফস্পিনারদের মতো বলটা আস্তে ছাড়ে না। জোরে দেয়। বছর দু’য়েক আগে ভারতে এসে মন্টি পানেসর যে গতিতে স্পিন করাত, মইনকেও প্রায় তেমন গতিই বার করে আনতে দেখলাম।
যদিও আমি মনে করি, মইনকে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আমি তো বলব, ম্যাঞ্চেস্টার টেস্ট থেকে মিডল স্টাম্প গার্ড নিয়ে ওকে খেললেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আর চাই আগ্রাসন। কোহলিরা যদি স্পিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ইতিহাস মনে রাখে, ওকে যদি ভয় না পেয়ে খেলে, মইনের বলের সুতো খুলে যাওয়া উচিত!
যে আগ্রাসনটা সাউদাম্পটনে দেখতে পাইনি। মনে হচ্ছে, ভারতীয় টপ অর্ডারের জঘন্য ফর্মটাও কিছুটা দায়ী। শিখর, বিরাট বা পূজারা— কেউই নিজের সেরা ফর্মে ধারেকাছে নেই। মইনের মাথায় চড়ে বসার বদলে মইনকেই ওদের মাথায় তুলে ফেলতে দেখলাম! এমনকী এটাও বিরাটরা ঠিক করে উঠতে পারছিল না মইনের বিরুদ্ধে কোন স্ট্র্যাটেজিতে যাবে? ছাড়ার, নাকি মারার? প্রথম ইনিংসে রোহিত শর্মাকে ওকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যাওয়ায় সংশয়টা আরও বেড়ে গিয়েছিল। লর্ডস টেস্টটা জিতে ফেলার পর ধোনির টিম ম্যানেজমেন্ট মইনকে বোধহয় হিসেবেই ধরেনি। ধোনিরা ধরেই নিয়েছিল, স্পিন বলে ইংল্যান্ডের কিছু নেই। পেসটা ঠিকঠাক ম্যানেজ করে দিলেই চলবে। ধাক্কাটাও খেল। স্রেফ নিখুঁত লাইনে রেখে ছ’টা উইকেট নিয়ে চলে গেল মইন। সাউদাম্পটনে মইন নিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের আসলে কোনও হোমওয়ার্কই ছিল না।