টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

ধোনি-ফ্লেচারকে অভিনব কিছু করে দেখাতে হবে

ভারতের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুধুই গুরুত্বপূর্ণ নয়, রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট। কারণ, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের পারফরম্যান্স মোটেই সেরা নয়।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৪ ০৩:৪৩
Share:

ভারতের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুধুই গুরুত্বপূর্ণ নয়, রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট। কারণ, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের পারফরম্যান্স মোটেই সেরা নয়। সে জন্য কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপের মতো একটা বড়মাপের টুর্নামেন্টে ভারত ভাল করলে সেটা দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। যে-হেতু বিদেশের মাঠে একটা দীর্ঘ এবং কঠিন মরসুমের একেবারে গোড়ার দিকে ভারতীয় দল এখন রয়েছে।

Advertisement

বাংলাদেশে এশিয়া কাপ খেলার জন্য ভারতীয় দল ইতিমধ্যে দু’সপ্তাহ ও দেশে কাটিয়েছে। টুর্নামেন্টটা যদিও ভারত জেতেনি, কিন্তু যথেষ্ট লড়াই করেছে। এবং মাঠে লড়াকু মনোভাব দেখানোর ফলে ওরা খুশি থাকতেই পারে। এ বার যুবরাজ, রায়না, ধোনিও যুক্ত হওয়ায় ভারত আরও শক্তিশালী হয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে। এই তিন জনই কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের ফর্ম্যাটে মারাত্মক ক্রিকেটার। এশিয়া কাপ খেলতে না পারায় তিন জনই দেশের হয়ে কিছু করে দেখানোর জন্য ক্ষুধার্ত থাকবে। যেটা দলের পক্ষে শুভ লক্ষণ।

ধোনি খুব দরকারি বিশ্রাম পেয়ে জাতীয় দলের দায়িত্বে আবার ফিরে এসেছে। এবং নিজের দলের থেকে সেরাটা পেতে তীব্র আগ্রহী থাকবে, এমন একটা পরিবেশে যেটা ভারতীয় দলের কাছে বন্ধুবৎসল। ধোনির নিজেরও এই টুর্নামেন্টে ভাল করা দরকার। কারণ, এই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ও হল এক জন গেম-চেঞ্জার এবং এই টুর্নামেন্টে ওর ভাল ফর্ম দলের পক্ষে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Advertisement

এ ছাড়াও ধোনি আর ডানকান ফ্লেচারের দল গড়ার ব্যাপারে একটু বেশি নমনীয় হওয়া দরকার। যে-হেতু টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের ক্রিকেট অন্য ধরনের খেলা দাবি করে। অভিনব চিন্তাভাবনার দরকার হয়। শ্রীলঙ্কায়, তার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে, তারও আগে ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্স ভাল হয়নি। হয়তো অন্য কোনও ধরনের ট্যাকটিক্যাল পরিকল্পনা এ বারের বিশ্বকাপে দলের মধ্যে তাজা মনোভাব আনতে পারে। আমার মতে, আরও একবার ভারতের বোলিংই টুর্নামেন্টকে পাল্টে দিতে পারে। ভারতে বোলিং বিভাগটা তরুণ। উপমহাদেশের পাটা উইকেটে চাপের মুখে ওদের সত্যিই নিজেদের স্কিলের সেরাটা দেখাতে হবে।

শ্রীলঙ্কায় শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর অনেক দলই আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বাংলাদেশে খুব কঠিন একটা বিশ্বকাপ হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের মতো দলগুলো খুব ভাল অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি অ্যাসেজ আর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অস্ট্রেলিয়া যে রকম দাপটে খেলেছে তাতে আমার মতে ওরা এই বিশ্বকাপে সত্যিকারের একটা বড় শক্তি। ওয়ার্নার, ফিঞ্চ, ওয়াটসন, ম্যাক্সওয়েল, ব্র্যাড হজ-দের অসাধারণ ফর্মের পাশাপাশি ওদের ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলি বিভাগ মিলে-টিলে অস্ট্রেলিয়াকে এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার করে তুলেছে।

গত বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর একটা সত্যিকারের শক্তিশালী দল। কায়রন পোলার্ডকে দলে না পাওয়া সত্ত্বেও। ওদের দলে কয়েক জন মারাত্মক বিগ হিটার আছে। পাশাপাশি নারিন আর বদ্রি-র মতো বোলার থাকায় বোলিংয়েও বৈচিত্র যোগ হবে। পাকিস্তানের দিকেও নজর রাখতে হবে। ওরা এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটটা খেলতে পছন্দ করে। সঙ্গে ওদের উঁচুমানের বোলিং বিভাগ আর আফ্রিদির সাম্প্রতিক ব্যাটিং ফর্মের কারণে পাকিস্তানেরও কাপ জেতার সুযোগ আছে। তবে পাকিস্তান দল টুর্নামেন্টে প্রতিটা দিন কী রকম মানসিকতা নিয়ে থাকবে সেটা অবশ্য একটা বড় প্রশ্ন!

সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আমরা একটা কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বিশ্বকাপ দেখতে চলেছি। দলগুলোর সাফল্য খানিকটা নির্ভর করবে ওরা কী মানের উইকেটে খেলবে তার উপরও। পিচ যদি শক্ত, খটখটে হয়, তা হলে যে দলগুলোর পেস বোলিং ভাল, তারা কাপ জেতার দাবিদার হয়ে উঠতে পারে। তবে টুর্নামেন্ট যত এগোবে, পিচ যদি ততই স্পিন বোলিং সহায়ক হয়ে ওঠে, সে ক্ষেত্রে উপমহাদেশের দলগুলোর স্পিন বিভাগের শক্তিকে সামলানো অন্য দেশগুলোর পক্ষে দুরূহ হয়ে উঠবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন