চব্বিশ বছরের বর্ণময় ক্রিকেট জীবনে তাঁর প্রাপ্তির সীমা নেই। একের পর এক মাইলস্টোন গড়ে হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি। তবু একটা ব্যাপারে আক্ষেপ রয়েই গিয়েছে সচিন তেন্ডুলকরের। ক্যাপ্টেন হিসেবে তাঁর ব্যর্থতা। যে কাঁটা নিয়েই বোধহয় সারা জীবন কাটাতে হবে সচিনকে। শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনাচক্রে সচিন যা বললেন, তাতে কার্যত এ কথাই স্বীকার করে নিলেন দেশের সেরা ক্রিকেট তারকা। একই মঞ্চ থেকে জোর গলায় বললেনও যে, এ বারও ভারতেরই বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা বেশি।
তাঁর সতীর্থদের কেউ কেউ যখন বছরের পর বছর ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন্সি করেছেন, অনেকে সফলও হয়েছেন, তখন তিনি দু’বারে মোট বাইশ মাসের বেশি দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি, এটাই সচিনের ক্রিকেটজীবনের বড় আক্ষেপ। এই নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “প্রথম বার মাত্র বারো-তেরো মাস পর আমাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন খুব হতাশ হয়েছিলাম। এই ভেবেই এক জন ক্যাপ্টেনকে বাছা হয় যে, সে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু ক্যাপ্টেন যদি যথেষ্ট সময় না পায়, তা হলে তার সাফল্যের হার কিছুই থাকে না। চারটের মধ্যে দুটো ম্যাচ জিতলে সাফল্যের হার দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। যথেষ্ট সময় পাইনি বলে খুব হতাশ হয়েছিলাম।”
তাঁর নেতৃত্বের সময়ের সঙ্গে ২০১১-এ ধোনির ভারতের অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড সফরের তুলনাও টানেন সচিন। বলেন, “ক্যাপ্টেন থাকাকালীন কয়েকটা কঠিন সফরে গিয়েছিলাম আমরা। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের চেয়ে ভাল দল। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়াতেও কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। ২০১১-র ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সফরে এবং আমার নেতৃত্বে সেই সফরগুলোতে একটা ব্যাপারে মিল ছিল। দু’বারেই আমরা রান তুলতে পারিনি এবং প্রচুর রান দিয়েছি। কোনও ম্যাচে কুড়ি উইকেটও তুলতে পারিনি।” প্রসঙ্গত, সচিনের নেতৃত্বে ভারত ২৫টি টেস্টের মধ্যে চারটেয় জেতে ও ন’টায় হারে। কোনও জয়ই বিদেশের মাটিতে নয়। উল্টে আছে বিদেশে ছ’টি টেস্ট হার।
ভারতের চলতি বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী সচিন। বলেন, “ভারত যা খেলছে, তাতে তো মনে হচ্ছে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব ভাল করছে ওরা। আমরা কখনও নিজেদের দলকে কৃতিত্ব দিই না। আমি কিন্তু তা দিতে চাই। দক্ষিণ আফ্রিকা ভাল খেলা সত্ত্বেও আমরা ওদের হারিয়েছি। মোহিত শর্মার এবি ডে’ভিলিয়ার্সকে রান আউট করাটাই টার্নিং পয়েন্ট। ওই মুহূর্ত থেকেই দলের ছেলেরা চেগে উঠেছে।”