৫ ফেব্রুয়ারি: শুক্রবার সকালে ভারতের মাটিতে পা রাখা ইস্তক কাজে লেগে পড়েন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় তারকা ক্রিকেটার সাইমন কাটিচ। কলকাতা নাইট রাইডার্স যাঁকে এ বার হেড কোচ জাক কালিসের সহকারী করে নিয়ে এসেছেন। শনিবার বেঙ্গালুরুতে আইপিএল নিলামের আসরে কালিস থাকতে পারছেন না। তিনি দুবাইয়ে এমসিএলে খেলতে ব্যস্ত। তাই কেকেআরে নতুন ক্রিকেটার কেনার প্রায় সব দায়িত্বই মূলত কাটিচের।
দুপুরে ঘন্টাতিনেক কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোরের সঙ্গে বৈঠকে কালকের নিলামের নীল নকশা ভাল করে তৈরি করে নিলেন। সন্ধ্যায় আবার নিলামের নিয়মকানুনের ব্রিফিং সেশন। এ সব সারার পরে যখন রাতে গৌতম গম্ভীরদের সহকারি কোচকে ফোনে ধরা গেল, তখন তাঁর গলায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। বেঙ্গালুরু থেকে কাটিচ বললেন, ‘‘সকালে নামা থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু কী আর করা যাবে, দলের সহকারি কোচ যখন, তখন তো এমনই হবে। কাল খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমার সঙ্গে অবশ্য বেঙ্কি, অন্য কর্তা ও সাপোর্ট স্টাফও থাকবেন। তবু কেমন যেন একটু নার্ভাস লাগছে।’’
এমনিতে পনেরো ক্রিকেটারকে ‘রিটেইন’ করেছে কেকেআর। নিলামে মার্কি প্লেয়ারদের মধ্যে রয়েছেন ইশান্ত, ওয়াটসন, কেপি, যুবরাজ, স্টেন, ফিঞ্চদের মতো হেভিওয়েট তারকারা। শনিবার এঁদের কার কার উপর নজর থাকবে নাইটদের? জিজ্ঞাসা করায় হেসে কাটিচ বললেন, ‘‘পরিকল্পনা সব হয়েছে ঠিকই কিন্তু এর উত্তর এখন আপনাকে দিতে পারব না। নিলামের কৌশল যদি বলেই দিই, তা হলে তো অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরা আমাদের বলে বলে গোল দেবে। তবে এটুকু বলতে পারি, গতবারের মতোই একটা ব্যালান্স দল তৈরি করতে চাই। সব বিভাগের মধ্যেই যেন একটা ভারসাম্য থাকে। এমনিতেই ভাল প্লেয়ার রয়েছে আমাদের হাতে। নিলামে তাকে আরও ভাল করাই আমাদের লক্ষ্য।’’
কিন্তু কেকেআর অধিনায়ক গম্ভীরের সঙ্গে ২০০৮-এ কোটলায় যা ঝামেলা বেধেছিল আপনার, আম্পায়ার বিলি বাউডেন দু’জনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে না থামালে তো হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেত! সেই গম্ভীরের সঙ্গে এক ড্রেসিংরুম কী ভাবে ‘শেয়ার’ করবেন? ঘটনাটার কথা মনে করিয়ে দিতেই কাটিচ হেসে বলে ওঠেন, ‘‘সে তো অতীত। সে সব আমরা দু’জনে মিলে বসে আগেই মিটিয়ে নিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক ভাল এখন। পরের কয়েক মাসে আরও ভাল হবে।’’
খেলোয়াড়জীবনে যে কালিস ছিলেন কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী, তাঁর সঙ্গেই এ বার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। যে ব্যাপারে বলছেন, ‘‘ওর সঙ্গে কখনও মেশার সুযোগ পাইনি। তবে এটুকু জানি ও খুব ঠান্ডা আর ভদ্র প্রকৃতির লোক। মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না।’’
ইডেন টেস্ট খেলতে না পারার আফসোস তাঁর চিরকালের। এ বার কেকেআরের সঙ্গে ইডেনকে ঘরবাড়ি বানিয়ে সেই আফসোস কিছুটা হলেও যাবে বলে মনে করেন এই অস্ট্রেলীয়। কলকাতায় কয়েক মাস কাটাতে হবে বলে বাংলাও শিখতে শুরু করে দিয়েছেন। উদাহরণও দিলেন ভাঙা বাংলায় ‘আপনি কেমন আছেন?’ বলে। বললেন, ‘‘কলকাতায় গিয়ে না হয় আরও বাংলা শিখে নেওয়া যাবে। ওখানে পৌঁছতে মুখিয়ে আছি।’’
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেললেও বিগ ব্যাশে খেলার সময় থেকেই আসনে এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটের সঙ্গে ভাল ভাবে জড়িয়েছেন কাটিচ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ উঠতে কাটিচ বললেন, ‘‘ভারতই ফেভারিট। নিজেদের দেশে ওদের আটকানো কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের চোট। তারা দলে ফিরে এলে দেখবেন আমাদের দলটাও দারুণ খেলবে বিশ্ব কপে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দেবেন না। ওরা ‘ডার্ক হর্স’।’’