পঞ্জাবের সাফল্যের রসায়ন নিলাম থেকে কোচ-অধিনায়ক

মরুভূমিতে যেন সোনা, থুড়ি তেলের খনি খুঁজে পেয়েছে পঞ্জাব। তিন এম ম্যাক্সওয়েল, মিলার, ও মিচেল জ্বলে উঠছে এবং পঞ্জাব জিতে চলেছে। প্রথমে ব্যাটিং হোক বা পরে। বড় স্কোর হোক বা ছোট। দিন হোক বা রাত। ভারতীয় প্লেয়ার হোক বা বিদেশি। যে কোনও মাঠেই হোক, পঞ্জাবের বিজয়রথ কিন্তু থামছে না।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৫৬
Share:

মরুভূমিতে যেন সোনা, থুড়ি তেলের খনি খুঁজে পেয়েছে পঞ্জাব। তিন এম ম্যাক্সওয়েল, মিলার, ও মিচেল জ্বলে উঠছে এবং পঞ্জাব জিতে চলেছে। প্রথমে ব্যাটিং হোক বা পরে। বড় স্কোর হোক বা ছোট। দিন হোক বা রাত। ভারতীয় প্লেয়ার হোক বা বিদেশি। যে কোনও মাঠেই হোক, পঞ্জাবের বিজয়রথ কিন্তু থামছে না।

Advertisement

ব্যাটিং আর বোলিং দুটো ক্ষেত্রেই প্রথম পাঁচে দাপট এই তিন জনের। বেশির ভাগ ম্যাচেই যার অন্যথা নেই। টি-টোয়েন্টির খামখেয়ালিপনাতেও ওদের কিছু যায় আসে না। প্রশ্ন উঠতে পারে, পঞ্জাবের এই সাফল্যের কারণ কী?

প্রথমত সবচেয়ে আগে নিলাম। প্লেয়ার বাছায় বুদ্ধিদীপ্ততা। নিলামে মাত্র দু’জনকে ধরে রেখেছিল ওরা। তাতে অন্য প্লেয়ার কেনার জন্য বড় অঙ্কের অর্থ হাতে থাকার সুবিধেটা পেয়েছে। দু’জন প্রচণ্ড প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে তুলে নিয়েছে। পূজারা আর সহবাগ একজনকে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে অনন্তকাল ব্যবহার করা যায়। আর অন্য জন তো সুপারস্টার। সবচেয়ে বড় কথা, দু’জনেই ময়দান কাঁপাতে সব সময় প্রস্তুত। তার সঙ্গে অন্য প্লেয়াররা অকসর পটেল, ঋদ্ধিমান সাহা, জনসন আর বালাজি মিলে একেবারে ঘরোয়া একটা পরিবেশ তৈরি করেছে টিমে। কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের ভূমিকাও বিরাট। দীর্ঘ দিন জড়িয়ে থাকার সুবাদে ভারতীয় ক্রিকেট সার্কিটের প্রতিভাধরদের নিয়ে সঞ্জয়ের খুব ভাল ধারণা রয়েছে। অন্য কোচ, বিশেষ করে বিদেশি কোচদের তুলনায় (স্টিভন ফ্লেমিং বাদে) ওর কাজটা কী সেটা খুব ভাল করে জানত সঞ্জয়।

Advertisement

দ্বিতীয়ত নেতৃত্ব। ক্রিকেটীয় দক্ষতার থেকেও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার জন্যই হয়তো ক্যাপ্টেন বেছে নেওয়া হয়েছিল জর্জ বেইলিকে। অধিনায়ক হিসেবে বেইলি আবার অনেকটা ধোনির মতো। প্লেয়ারদের খোলা মনে খেলার সুযোগ দিয়ে সেরাটা বার করে নিতে পারে। ধোনির মতোই নজরের বাইরে থেকে কাজটা করে যায় বেইলিও। প্লেয়ারদের মধ্যে বিশ্বাসটা ঢুকিয়ে দেয়। তার সঙ্গে বেইলির ম্যাচ উইনার হওয়াটা পঞ্জাবের কাছে বিরাট বড় বোনাস।

তৃতীয়ত ম্যাক্সওয়েল। ওর ব্যাটিংয়ের পদ্ধতি একেবারে যুগান্তকারী। রজত ভাটিয়া, অমিত মিশ্র, অশ্বিনের মতো অনেক স্লো বোলারই ডিপ অনসাইড ফিল্ডিং নিয়ে বল করতে পছন্দ করে। ম্যাক্সওয়েল ওদের সুইচ হিটে মোক্ষম জবাব দিচ্ছে। স্লো বোলিং আর এই ফিল্ডিংয়ের বিরুদ্ধে এ ভাবেই ফায়দা তুলে নিচ্ছে ও। তাই কোনও বোলার বা ক্যাপ্টেনই ওকে আটকাতে ফিল্ডিং সেট করতে পারছে না। তা ছাড়া ও খুব সিরিয়াস টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান। সুইচ হিটটা আরও উন্নত করতে এর পর হয়তো উঠেপড়ে লাগবে। তাই বলছি, ম্যাক্সওয়েল আমিরশাহির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

চতুর্থ কারণ ভারতীয় বোলাররা। জনসন ছাড়া সবাই ভারতীয়। বালাজি আর সন্দীপ বিশাল সুইংয়ের পাশাপাশি নিখুঁত। পটেল যোগ দেওয়ায় বোলিং আক্রমণ আরও সমৃদ্ধ হয়েছে পঞ্জাবের। এদের মধ্যে জনসন এখনও সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছে। অতএব বুঝতেই পারছেন, ভারতীয় বোলারদের প্রভাব কতটা।

আর তিনটে ম্যাচ জিতলেই প্লে অফে কোয়ালিফাই করা নিশ্চিত হয়ে যাবে পঞ্জাবের। এক বা দু’নম্বর টিম হয়ে উঠলে প্লে অফে অতিরিক্ত একটা ম্যাচ খেলার সুবিধাও থাকবে। তার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও হয়তো ফের হুঙ্কার ছাড়তে দেখা যাবে এই টিমটাকে। এ ভাবে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর জন্য যারা পর্দার আড়ালে কাজটা করে যাচ্ছে, তাদেরই সবচেয়ে বেশি প্রশংসা প্রাপ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন