গত বুধবার ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল। তার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে মোহনবাগান ক্লাবের হিসাব-নিকাশ নিয়ে সচিবকে চরমপত্র দিলেন সবুজ-মেরুন কর্মসমিতিরই এক প্রভাবশালী সদস্য।
কর্মসমিতির সদস্য অতীন ঘোষ শুক্রবা ক্লাব সচিবকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন, ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ (জানুয়ারি পর্যন্ত) অর্থবর্ষের হিসাব। এ ছাড়াও এই সময়ের মধ্যে সদস্য চাঁদা, স্পনসর এবং অন্যান্য অনুদান বাবদ ক্লাবের আয় এবং আইএসএলে ফুটবলার ছাড়ায় কত টাকা বাজেটে বাঁচানো গিয়েছে তা-ও জানতে চেয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে অতীনবাবু বলেন, “পাঁচ জানুয়ারি ও তিন ফেব্রুয়ারি দু’বার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনও উচ্চবাচ্য করেননি শীর্ষ কর্তারা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর না পেলে সদস্যদের নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া অন্য পথ নেই।”
ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে বললেন, “চার ফেব্রুয়ারি কর্মসমিতির বৈঠকে সব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর পরেও ওই সদস্য হিসাব নিয়ে কিছু জানতে চাইলে আগামী বুধবারের পর তিনি ক্লাবে আসুন। সব দেখিয়ে দেব।” যার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অতীনবাবু কড়া ভাষায় বললেন, “সচিব সত্যের অপলাপ করে তথ্য গোপন করছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি হিসেবের কোনও ব্যাখ্যা করা হয়নি।” জবাবে ক্লাব সচিবের পাল্টা মন্তব্য, “ক্লাবের ঐতিহ্যের কথা ভেবে সদস্যদের শালীন মন্তব্য ও আচরণ বাঞ্ছনীয়। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন।”
প্রশাসনিক ডামাডোলে ভেস্তে যাওয়ার মুখে ডার্বি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
পুলিশি ‘অসহযোগিতা’য় ভেস্তে যাওয়ার পথে বুধবারের বড় ম্যাচ। নেপথ্যে আসন্ন বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচন। যার জেরে কার্যত ঘুম ছুটেছে ম্যাচের আয়োজক ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের।
এ দিনই রাজ্য প্রশাসনের তরফে এই ডার্বির আয়োজক ইস্টবেঙ্গলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি বনগাঁয় উপনির্বাচনের জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি যুবভারতীতে পুলিশ দেওয়া সম্ভব হবে না। বিধাননগর কমিশনারেটের নবনিযুক্ত নগরপাল জাভেদ শামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বললেন, “উপনির্বাচনের জন্য ম্যাচের দিন পর্যাপ্ত পুলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।” তবে সূত্রের খবর, অন্য জেলা থেকে পুলিশ এনে ম্যাচ আয়োজন করা যায় কি না তা নিয়ে রাত পর্যন্ত আলোচনা চলছে প্রশাসন এবং ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মধ্যে। কারণ, আই লিগের নিয়মে, ম্যাচ যদি একেবারেই না আয়োজন করা যায়, তা হলে অ্যাওয়ে টিমকে (এক্ষেত্রে মোহনবাগান) তিন গোল ও তিন পয়েন্ট দেওয়া হবে। লাল-হলুদ সচিব কল্যাণ মজুমদারের মন্তব্য, “আমরা তো ম্যাচটা খেলতেই চাই। কিন্তু পুলিশ না থাকলে অবৈধ জনসমাগম করে জেলে তো যেতে পারি না।” আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর বলছেন, “বর্তমান সূচি অনুযায়ী, আই লিগ শেষ হবে ৩১ মে। ম্যাচ পিছোলে লিগ শেষ করব কী ভাবে?”
ইস্টবেঙ্গল জরুরি পরিস্থিতিতে ম্যাচ আয়োজনের জন্য স্বরাষ্ট্রসচিব, মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। ক্রীড়া দফতর এখন দেখভাল করছেন আবাসন ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ফোনে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন যদি উপনির্বাচনের জন্য পুলিশ চায় তা হলে তো দিতেই হবে। আর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের জন্য কোনও টুর্নামেন্টেই কারও পয়েন্ট কাটা রীতিসম্মত নয়।”