মোহনবাগানের ‘ন্যায্য’ গোল বাতিল ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, আই লিগ কত অপেশাদার ভাবে চলছে। আইএসএল-এর সঙ্গে ফারাকটা কোথায়?
শুধু তাই নয়, দেশের এক নম্বর টুর্নামেন্ট আই লিগে কেন গোল লাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না, সেই প্রশ্নও জোরদার হয়ে উঠল!
বুধবার সালগাওকরের বিরুদ্ধে বাগানের গোল বাতিলের পর ম্যাচ কমিশনার এবং ফেডারেশনের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছিলেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। এই চিঠির ভিত্তিতেই ছ’জন প্রাক্তন ফিফা রেফারির কাছে বাতিল গোলের ‘ভিডিও ফুটেজ’ পাঠানো হয়েছে। এই ছ’জনের মধ্যে আবার একজন রেফারি বিদেশি-- সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর।
সুব্রত পালের হাতে লেগে যে বলটি জালে জড়িয়ে গিয়েছিল, সেটা কি আদৌ গোল ছিল? সত্যি কি বলবন্ত ধাক্কা দিয়েছিলেন সালগাওকর কিপারকে? আর যদি লেগেও থাকে তবে সেটা কতটা ইচ্ছাকৃত ছিল? এ ব্যাপারগুলোই খুঁটিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন অভিজ্ঞ রেফারিদের।
কিন্তু ‘ভিডিও ফুটেজ’ দেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে তাঁরা রীতিমতো ধন্ধে পড়ে গিয়েছেন বলে খবর। কারণ আই লিগের সম্প্রচার হচ্ছে মাত্র চার-পাঁচটি ক্যামেরায়। স্বভাবতই সঠিক কী ঘটেছিল সেটা বোঝা যাচ্ছে না। আইএসএলের সময় ম্যাচের সম্প্রচারের জন্য ১৭টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হত। বিভিন্ন কোণ থেকে। তাই যে কোনও সিদ্ধান্তই সহজে নেওয়া যেত। ফেডারেশেনের রেফারি বোর্ডের প্রধান গৌতম কর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “আইএসএলের সময় টিভি ক্যামেরা বেশি থাকায়, ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছে, সেটা বুঝতে সুবিধে হত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্যামেরা নানা কোণ থেকে তা না দেখানোয় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে। আমি তো বলেছিলাম অন্তত ন’টা ক্যামেরা ব্যবহার করতে। কিন্তু অর্ধেকও ব্যবহার হচ্ছে না।” এক কথায়, আইএসএলের থেকে আই লিগ যে কতটা পিছিয়ে রয়েছে, তা গৌতমবাবুর বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার।
কিন্তু এখন যদি প্রমাণিত হয়, মোহনবাগানের গোলটি ন্যায্য ছিল, সে ক্ষেত্রে কি সঞ্জয় সেনের টিম তিন পয়েন্ট পাবে? গৌতমবাবু পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, “বিশ্বের কোথাও এ ভাবে পয়েন্ট ফেরত দেওয়া যায় না। তবে এটা আমাদের কাছে শিক্ষার অঙ্গ হবে। এ ঘটনার উল্লেখ করে রেফারিদের আরও সতর্ক করতে হবে, যাতে এ রকম ভুল ভবিষ্যতে না হয়।” এর সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছেন, “বুধবার গোল বাতিলের ঘটনাটি ঘটার সময় রেফারি সন্তোষ কুমার যে পজিশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেখান থেকে ভুল করা উচিত ছিল না। কিন্তু সবাই যখন বলছে তখন তো আমাদের সতর্ক হতেই হবে।”
আফসোস আর হতাশা নিয়েই এ বার পুণে এফ সি-র বিরুদ্ধে শনিবার থেকে ফের প্রস্তুতি শুরু করবেন সনি নর্ডিরা।