প্রথম দিন বাংলা ১৪১-৪

বাদ পড়তে পারেন অরিন্দম, তোপের মুখে সিনিয়ররাও

আড়াই ঘণ্টার উপর ক্রিজে থেকে ১০৮টা ডেলিভারি খেলে ১৯ রানের যে ইনিংসটা এ দিন ‘উপহার’ দিলেন অরিন্দম দাস, সেটাই তাঁর রঞ্জি কেরিয়ারের শেষ ইনিংস হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলা নির্বাচকরা বিরক্ত, গাজিয়াবাদে টিমের সঙ্গে থাকা বাংলা ম্যানেজমেন্ট হতাশ। যার কারণ বাংলা ওপেনারের দীর্ঘ, যন্ত্রণাদায়ক, এবং শেষ পর্যন্ত নিষ্ফলা ইনিংস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৬
Share:

বৈঠক ছিল অনূর্ধ্ব-২৩ বাংলা দল নির্বাচনের। কিন্তু আলোচনায় উঠে এল সিনিয়রদের ভবিষ্যৎ। বুধবার সিএবি-তে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে চার নির্বাচক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আইবি রায়, অলোক ভট্টাচার্য ও রাজু মুখোপাধ্যায়। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

আড়াই ঘণ্টার উপর ক্রিজে থেকে ১০৮টা ডেলিভারি খেলে ১৯ রানের যে ইনিংসটা এ দিন ‘উপহার’ দিলেন অরিন্দম দাস, সেটাই তাঁর রঞ্জি কেরিয়ারের শেষ ইনিংস হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলা নির্বাচকরা বিরক্ত, গাজিয়াবাদে টিমের সঙ্গে থাকা বাংলা ম্যানেজমেন্ট হতাশ। যার কারণ বাংলা ওপেনারের দীর্ঘ, যন্ত্রণাদায়ক, এবং শেষ পর্যন্ত নিষ্ফলা ইনিংস।

Advertisement

এ দিন বাংলার অনূর্ধ্ব ২৩ দল বাছতে সিএবিতে হাজির ছিলেন বঙ্গ নির্বাচকেরা। ছিলেন যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। সেখানেই অরিন্দমের ইনিংস নিয়ে আলোচনার পর কার্যত সিদ্ধান্ত হয়ে যায় যে, এই ম্যাচের পর অরিন্দমকে আরও সুযোগ দেওয়ার মানে হয় না। সৌরভও নাকি সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন। দলের কয়েক জন সিনিয়রের পারফরম্যান্সেও খুশি নন সৌরভরা। এ দিন আলোচনা হয় যে, এই ম্যাচে আশাপ্রদ কিছু না দেখা গেলে বাংলা টিমে প্রচুর বদল আনতে হবে। বলা হয়, তিন-চার বছর পর এমনিতেই সিনিয়রদের আর পাওয়া যাবে না। তখন একেবারে আনকোরা টিম না নামিয়ে এখন থেকেই কিছু জুনিয়রকে দেখে নেওয়া ভাল। আরও বলা হয়, গাজিয়াবাদের যা পরিস্থিতি তাতে উত্তরপ্রদেশ ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্ট তোলা কার্যত অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে বাংলার রঞ্জি স্বপ্ন এ বারের মতো এখানেই শেষ। মনে করা হচ্ছে, বাংলা এখন যে অবস্থায় আছে, পরিস্থিতি এর চেয়েও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি নেই। তাই টিম নিয়ে যা পরীক্ষানিরীক্ষা করার, এখনই করে নেওয়া যায়।

কুয়াশায় ঢাকা গাজিয়াবাদে ম্যাচ ঠিক সময় শুরু হবে না, জানাই ছিল। এ দিন কুয়াশার জন্য গোটা একটা সেশন খেলা যায়নি। দিনের খেলা শুরু হয় একেবারে লাঞ্চের পর। তরুণ অভিমন্যু ঈশ্বরন (৫) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে অরিন্দম যে ইনিংসটা খেললেন, সেটা ব্যাখ্যাতীত। যে ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্ট তোলা লক্ষ্য, যেখান থেকে অন্তত তিন না পেলে খাতায়কলমেও কোয়ার্টার-যুদ্ধে টিকে থাকা যাবে না, সেখানে টিমের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানই কি না নিজেদের ইনিংসটাকে ‘খুন’ করতে বসেছিলেন। ৮ ওভারে ১১, ১৪ ওভারে ১৮ এ ভাবেই এগোচ্ছিল বাংলার ইনিংস।

Advertisement

বাংলার সংসারে চোদ্দো বছর কাটিয়ে দেওয়া ওপেনারকে নিয়ে এ বারের রঞ্জি মরসুমে কম অসূয়া তৈরি হয়নি। কর্নাটকের বিরুদ্ধে ইডেনে ৯৪ বলে ২৭-এর পরেও প্রশ্ন উঠেছিল টিমে তাঁর কার্যকারিতা নিয়ে। চলতি মরসুমে ছ’ম্যাচে অরিন্দমের রান ৩৪৬, সর্বোচ্চ ৮০ নটআউট। কিন্তু ঘটনা হল, তাঁর বেশির ভাগ ইনিংসই টিমের দরকারের সময় আসেনি। যখন দ্রুত রান তোলা দরকার, নিয়ম করে বলের পর বল ছেড়ে গিয়েছেন ‘ডন’। এ দিন তিনি আউট হওয়ার পর ‘মৃত’ স্কোরবোর্ডে প্রাণপ্রতিষ্ঠার কাজটা করছিলেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (৬০) এবং ঋদ্ধিমান সাহা (৪৫ ব্যাটিং)। সুদীপের রান আউটের পর জুটি ভেঙে গেলেও দিনের শেষে আশা শেষ হয়ে যায়নি। কারণ ঋদ্ধির সঙ্গে ক্রিজে আছেন বাংলা অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল (৫ ব্যাটিং)। মনোজ তিওয়ারি অবশ্য ব্যর্থ। ইনিংসের শুরুর দিকে স্টেপ আউট করে মারতে গিয়ে ১ রানে ফিরে যান তিনি। প্রথম দিনের শেষে বাংলা ১৪১-৪।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন