আনন্দবাজার এক্সক্লুসিভ: কোয়ার্টার ফাইনাল প্রাক্কালে টিমের কাছে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের আবেদন

ব্রাজিল যেন খেলায় মন দেয়, কান্নায় নয়

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৯
Share:

মারাকানায় কাফু। বৃহস্পতিবার। ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য

আসল নাম মার্কোস ইভাঞ্জেলিস্তা দি মোরায়েস। বয়স চুয়াল্লিশ। দেখলে মনে হবে চৌত্রিশ, এমনই পেটানো! পৃথিবী তাঁকে চেনে কাফু নামে! তিনি ব্রাজিলের শেষ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। ব্রাজিলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন। দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তার মধ্যে। এক বার অধিনায়ক। ফাইনাল খেলেছেন তিনটে। মারাকানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাজিলীয় টিভি নেটওয়ার্কে কাফু ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় হঠাৎ করে দেখা হয়ে গেল। ব্রাজিলীয় ফুটবল সংস্থার মাধ্যমে আনন্দবাজারের ইন্টারভিউয়ের আবেদন আগেই পাঠানো ছিল। তাঁর মহিলা ম্যানেজার এ দিন হঠাৎ জানালেন, লম্বা সময় দেওয়া যাবে না। বিশ্বকাপের সময় কাফু খুব ব্যস্ত। এখনই করতে হবে আর গুণে গুণে ঠিক ছ’টা প্রশ্ন। কাফু এটুকু ইংরেজি বলতে পারেন, আই ডোন্ট নো ইংলিশ... জানেন ইতালিয়ান, স্প্যানিশ আর পর্তুগিজ। অগত্যা তাঁর মহিলা ম্যানেজারই দোভাষীর কাজ করলেন। টেনেটুনে প্রশ্নসংখ্যা দশের বেশি নিয়ে যাওয়া গেল না...

Advertisement

প্রশ্ন: ব্রাজিল টিমের কাছে দেশের শেষ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হিসেবে আপনার মেসেজ কী?

Advertisement

কাফু: মেসেজ বলতে?

প্র: মানে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে যদি আপনি টিমকে টেক্সট করতেন, কী লিখতেন?

কাফু:লিখতাম, কাঁদো কম। খেলো বেশি।

প্র: তাই?

কাফু: (উত্তেজিত শরীরী ভাষায়) হচ্ছেটা কী! কাঁদবে এক বারই, যখন কাপটা হাতে নেবে। তোমরা কি না কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গোটা মাঠ কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছ! কোথায় নামাচ্ছ ব্রাজিল ফুটবলকে। গোটা বিশ্ব দেখছে নিজের দেশে ব্রাজিল চিলিকে হারিয়ে— চিলি— জার্মানি নয়, ফ্রান্স নয়, চিলি। তাকে হারিয়ে এমন করছ! ভুলে গেলে বিশ্বকাপে তোমার ঐতিহ্যের কথা! তোমার রেকর্ডের কথা।

প্র: আপনি কি ব্রাজিলের ওপর সব আশা হারিয়ে ফেলেছেন?

কাফু: একটুও হারাইনি। আমি মনে করি ব্রাজিলের যা টিম, ফাইনালে যাওয়া উচিত। কলম্বিয়া কোনও ফ্যাক্টর হওয়ার কথা নয়।

প্র: আপনি তো ডিফেন্সে খেলতেন। হামেস রদ্রিগেজকে কী ভাবে আটকানো উচিত?

কাফু: ডিফেন্ডারদের নিজেদের দেশের পুরনো ভিডিওগুলো দেখে। অতীতে কাদের কাদের ব্রাজিল আটকেছে সেটা দেখে ধুকপুকানি কমানো উচিত!

প্র: আপনি কি ব্রাজিলের মানসিকতায় সমস্যা দেখছেন, খেলায় নয়?

কাফু: হ্যাঁ। ব্রাজিলকে সাহসটা ফেরাতে হবে। ব্রাজিল সাহস ফেরালে কলম্বিয়া কোনও ফ্যাক্টর নয়।

প্র: নেইমারকে দেখে কখনও কি আফসোস হচ্ছে, আমার সোনার টিমে যদি ওকে পেতাম!

কাফু:একটুও না। আমার টিমে এক-এক জন লেজেন্ড ছিল ফরোয়ার্ড লাইনে। নেইমার নিশ্চয়ই ভাল। কিন্তু আমার জিভে জল গড়াচ্ছে না।

প্র: ফ্রান্স-জার্মানি কী হবে?

কাফু: (অবাক করে দিয়ে মহিলা ম্যানেজার বললেন, না এটা করা যাবে না। কাফু ব্রাজিল ছাড়া আর কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না।)

প্র: ফাইনাল কি ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা হতে পারে?

কাফু: হতেই পারে (মহিলা তাড়া শুরু করেছেন, শেষ করুন শেষ করুন, ওঁকে যেতে হবে।)

বিশ্বকাপ ২০০২।

প্র: ও-কে। শেষ প্রশ্ন, ব্রাজিল ফাইনালে উঠলে মেসিকে সামলাতে পারবে?

কাফু: মেসি! না পারার কারণ নেই। তবে আগে তো কলম্বিয়াকে হারানোর মানসিক শক্তি ফিরিয়ে আনুক! ব্রাজিলের টেকনিক্যালি কোনও প্রবলেম নেই। সব হার্টের গণ্ডগোল (বুকের বাঁ দিকে হার্টের জায়গাটা দেখালেন)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন