বাংলাদেশ অঘটন ঘটালে অবাক হব না

ক’দিন আগের এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে আফগানিস্থান টিমের উচ্ছ্বাসের ছবিটা মনে পড়ছিল। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচটার পরে শাপুর, নবি, শেনওয়ারিরা নিজেদের দেশে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০২:৫৭
Share:

ক’দিন আগের এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে আফগানিস্থান টিমের উচ্ছ্বাসের ছবিটা মনে পড়ছিল। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচটার পরে শাপুর, নবি, শেনওয়ারিরা নিজেদের দেশে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে নামার আগে আফগানদের কাছে হারের টাটকা স্মৃতি বাংলাদেশকেও নিশ্চয়ই অস্বস্তিতে রেখেছিল। তাই সহজে জেতার পর মুশফিকুররা নিশ্চয়ই স্বস্তির হাঁফ ছেড়েছে। আমার কাছে বড় টিমগুলোর যুদ্ধের মতোই ছোট টিমগুলোর মধ্যে লড়াইটাও সমান আকর্ষণীয়। আর আফগানিস্থানের কাছে বাংলাদেশের হারের মতো ঘটনা দু’টো দেশের ক্রিকেটকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

Advertisement

বাংলাদেশ গত বারের এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলেছিল। ওদের দেশে ক্রিকেট প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু এই সব প্রতিভাকে ঠিকমতো ঘষেমেজে আন্তর্জাতিক মঞ্চের উপযুক্ত করে তৈরি করে নেওয়াটা জরুরি। যে কাজটা করার কোনও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা বাংলাদেশ এখনও গড়ে তুলতে পারেনি। আমার মনে হয়, ক্রিকেটের উন্নতির জন্য ওদের একটা ঠিকঠাক সিস্টেম দরকার। এই সিস্টেমটা গড়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশের ক্রিকেট কিন্তু অনেকটাই এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল অবশ্য এশিয়া কাপে ওদের এক দিনের যে দলটা খেলেছিল, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। আর ঘরের মাঠের এই বিশ্বকাপে ওরা নিজেদের সেরাটা দিতে তৈরি থাকবে। তাই বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত যে গ্রুপেই পড়ুক, বড় টিমগুলোকে সমস্যায় ফেলছে দেখলে আমি এতটুকু অবাক হব না। বাংলাদেশকে কোয়ালিফায়ার খেলে মূলপর্বে আসতে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এর ভিত্তিতে টি-টোয়েন্টিতে ওদের আসল শক্তি মাপতে বসলে ভুল করবেন।

টেস্ট খেলিয়ে দেশগুলোর বাইরে আর একটা দল যাদের ক্রিকেটে দারুণ উন্নতি করতে দেখছি, হল আয়ারল্যান্ড। বারবার অঘটন ঘটিয়েছে ওরা। ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল। ২০১১-য় ইংল্যান্ডের মতো টিমকে হারিয়ে চমকে দেয়। এ বারও উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স আইরিশদের। জিম্বাবোয়ের মতো আরও একটা টেস্ট খেলিয়ে দেশকে হারিয়েছে ওরা। এবং নিজেদের গ্রুপে এক নম্বর হয়ে সুপার ১০-এ জায়গা করে নেওয়ার দৌড়ে ওরাই এগিয়ে।

Advertisement

মানতেই হবে, আইসিসি ক্রিকেট খেলিয়ে ছোট দেশগুলোকে যে কোনও ফরম্যাটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টগুলো খেলার সুযোগ করে দিয়ে নিজেদের প্রমাণ করার আদর্শ মঞ্চ দিয়েছে। এর ফলে ছোট টিমগুলো ধারাবাহিক ভাবে ক্রিকেটের সেরা শক্তিদের বিরুদ্ধে লড়ে নিজেদের প্রকৃত ক্ষমতা যাচাই করে নিতে পারে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতাটা যে ঠিক কতটা তীব্র আর কঠিন, সেটার স্বাদ ইতিমধ্যেই পেয়েছে আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং আইসিসি-র আরও কয়েকটি অ্যাসোসিয়েট সদস্য দেশ। সর্বোচ্চ পর্যায়ের লড়াইয়ের জন্য নিজেদের তৈরি করতে এই সব টিমের প্লেয়াররা টেস্ট খেলিয়ে দেশগুলোয় গিয়ে টি-টোয়েন্টি বা অন্য কোনও লিগ খেলছে। এতে নির্দিষ্ট প্লেয়ার নিজের দক্ষতায় যেমন শান দিয়ে নিতে পারছে, তেমনই তাকে কেন্দ্র করে তার দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহ আরও বাড়ছে। সেরা উদাহরণ আয়ারল্যান্ড। এই ব্যবস্থার সুফল ওরা ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছে।

তবে ক্রিকেটের স্বার্থেই আইসিসি-কে এই সব দেশের ক্রিকেট পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে বাড়তি মন দিতে হবে। যাতে ক্রিকেটকে বিশ্বের নতুন নতুন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। সেটা নেপালই হোক বা অন্য কোনও জায়গা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন