বিশ্বকাপে অনেক আজব কিছু ঘটেই থাকে, বলে গেলেন আবেগাপ্লুত মেসি

সাধারণত ম্যান অব দ্য ম্যাচের সাংবাদিক সম্মেলনটা হয়ে যায় খেলা শেষে খানিকক্ষণ বাদেই। তা খেলা শেষ হয়েছে মিনিট কুড়ি হয়ে গেল। পরপর দুই কোচ অটমার হিৎজফেল্ড আর সাবেয়ার প্রেস কনফারেন্স হয়ে গেল। ম্যান অব দ্য ম্যাচ গেলেন কোথায়? ফিফার লোক এসে জানালেন, আরও দশ মিনিট বসতে হবে। তার চেয়েও বেশি সময় পর আবির্ভূত হলেন লিওনেল মেসি! প্রথমে ভেবেছিলাম, মাঠে আজ এত ট্যাকল সামলেছেন। হয়তো ফিজিওর কাছে পরিচর্যা চলছে তাঁর। কথা শুনে মনে হল, আবেগ সামলাতে এই সময়টা ব্যায় হয়েছে।

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

সাও পাওলো শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৭
Share:

গ্যালারিতে তখন টেনশনে আক্রান্ত মেসির বান্ধবী আন্তোনেলা। ছবি: টুইটার

সাধারণত ম্যান অব দ্য ম্যাচের সাংবাদিক সম্মেলনটা হয়ে যায় খেলা শেষে খানিকক্ষণ বাদেই। তা খেলা শেষ হয়েছে মিনিট কুড়ি হয়ে গেল। পরপর দুই কোচ অটমার হিৎজফেল্ড আর সাবেয়ার প্রেস কনফারেন্স হয়ে গেল। ম্যান অব দ্য ম্যাচ গেলেন কোথায়?

Advertisement

ফিফার লোক এসে জানালেন, আরও দশ মিনিট বসতে হবে। তার চেয়েও বেশি সময় পর আবির্ভূত হলেন লিওনেল মেসি! প্রথমে ভেবেছিলাম, মাঠে আজ এত ট্যাকল সামলেছেন। হয়তো ফিজিওর কাছে পরিচর্যা চলছে তাঁর। কথা শুনে মনে হল, আবেগ সামলাতে এই সময়টা ব্যায় হয়েছে। কারণ এখনও যেন আর্জেন্তিনীয় অধিনায়ক ১১৮ মিনিটের মৌতাতে। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল তো আগের বারও খেলেছেন। কিন্তু এ বারে এ ভাবে যাওয়াটা মনে হচ্ছে তাঁকে সম্ভাব্য শোক থেকে সমৃদ্ধিতে এনে দিয়েছে!

স্বীকারও করলেন, “প্রচণ্ড নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। শেষ দিকে যখন গোল হচ্ছে না তখন ভাবছি ম্যাচ তো টাইব্রেকারে চলে গেল। এখন কী হবে? হেরে তা হলে চলে যাব? আউটই হয়ে যাব বিশ্বকাপ থেকে? দেশে এত লোক আশা করে রয়েছে, সব শেষ হয়ে যাবে।”

Advertisement

মেসি বললেন, “আজকের ম্যান অব দ্য ম্যাচের যোগ্য আমি কি না জানি না। অন্যগুলোর ব্যাপারে এটা মনে হয়নি। তবে শেষ দিকে যখন গোল হচ্ছে না তখন সিদ্ধান্ত নিই, আমাকেই কিছু করতে হবে!”

হেডফোনে অনুবাদে শুনতে শুনতেও রোম খাড়া হয়ে যাবে এক হাত দূরে বসে মেসি বলছেন, তখন আমি ঠিক করি আমাকেই কিছু করতে হবে।

“দৌড়টা শুরু করলাম। শুধু ওই গতির মধ্যে একটাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ছিল নিজে মারব না দি’মারিয়াকে দেব? যেহেতু ও ভাল জায়গায় ছিল ওকেই বলটা ঠেলি। বাকিটা আপনারা দেখেছেন।” একটু আগে সুইস কোচকে ব্রিটিশ মিডিয়া ছিঁড়ে খেয়েছে যে, তিন জনকে আলাদা করে মেসির জন্য লাগিয়েও আপনি ওর ১১৮ মিনিটের ম্যাজিক বন্ধ করতে পারলেন না। কোচ কথা শুনে বেশ রেগেই গিয়েছেন। কেউ কেউ তাঁকে এমনও বলেছে, এত বেশি ডিফেন্সিভ হয়ে কী লাভ হল। সেই তো মেসির কাছে হারলেন। মেসি সুইস টিম নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্যে যাননি।

এত প্রাণান্তকর খাটুনি কেন হল কটাক্ষের উত্তরে শুধু বললেন, “এটা বিশ্বকাপ হচ্ছে মনে রাখবেন। অনেক আজব কিছু বিশ্বকাপে ঘটে। কারা কারা বাড়ি চলে গিয়েছে দেখুন। স্পেন, ইতালি, উরুগুয়ে, ইংল্যান্ড। এক একটা বাঘা বাঘা দল। আর অনেকে আছে যাদের কেউ ভাবেইনি যে এত দূর যেতে পারে।” বললেন, “আমি জানতাম সুইস ম্যাচটা খুব কঠিন হবে। তবে এই পর্যায়ের ঠকঠকানি ধরাতে পারে ভাবিনি।”

হেডটা সাইডপোস্টে লেগে শেষ মিনিটের বেঁচে যাওয়ার প্রসঙ্গটা উঠল। মেসি বললেন, “ভাগ্যের বদান্যতা। বোঝাল কাপ জেতার যুদ্ধে আজ আমাদের সঙ্গে ছিল।” উঠে পড়লেন এ বার। দেখে মনে হল টাইব্রেকার পরীক্ষায় না বসেই টাইয়ে জেতার বেশ কয়েকটা ফোস্কা নিয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন