নিজের দেশকেই আসন্ন বিশ্বকাপে ফেভারিট বাছলেন না পেলে। বিশ্বের সর্বকালের সেরা ব্রাজিলীয় ফুটবলার বরঞ্চ একটি সাক্ষাৎকারে বলে দিলেন, মাস দু’য়েক পরেই শুরু বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় উৎসবে এগিয়ে থাকবে দুই ইউরোপিয়ান টিম। তারা-- জার্মানি ও গত বারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন।
“বিশ্বকাপে কোন টিম এগিয়ে থাকবে, সেটা এখন থেকেই বলা মুশকিল। ফুটবল বিশ্বকাপে চমক লেগেই থাকে। তবে এর মধ্যেও কিছু টিম বরাবরের মতোই রয়েছে যারা হিসাব উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ইতালি, ইংল্যান্ড, আর্জেন্তিনা, ফ্রান্সও সে রকম টিম। এর মধ্যে কয়েকটা টিমের খেলা তো আমি নিয়মিত নজরে রাখি। তবে মাস দেড়েক বা দু’য়েক পর টুর্নামেন্টে ফেভারিট বাছতে বললে আমি বলব স্পেন আর জার্মানি,” বলেছেন পেলে। কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য ব্রাজিলের প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলে দেন, “ফেভারিট টিমের কথা বললে অবশ্যই প্রথমে আমার মাথায় ব্রাজিলের নামই আসে। আমাদের বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা তো কম নয়। আর্জেন্তিনা, ফ্রান্স বা ইতালির বিরুদ্ধে ব্রাজিলের জয় পাওয়া সহজ হবে না। তবে এখন সেরা টিমের কথা বললাম মানে যে স্পেন বা জার্মানিই চ্যাম্পিয়ন হবে তা নয়।”
তা হলে কোন টিম এ বারের বিশ্বকাপ জিততে পারে? প্রথমে কিছুটা রক্ষণাত্মক থাকলেও এ বার পেলে বলেন, “জানি না। তবে আমার কাছে সেরা দুটো টিম ওই যে বললাম জার্মানি আর স্পেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার দিক থেকে এই দুটো টিম এগিয়ে রয়েছে।”
তা হলে নিজের দেশকে কোথায় রাখছেন তিনি? পেলের মতে ডিফেন্স আর মিডফিল্ডে শক্তিশালী হলেও ফরোয়ার্ড পজিশনে সমস্যা আছে ব্রাজিলের। “ব্রাজিল সব সময়ই দুরন্ত আক্রমণাত্মক টিম। পেলে, ডিডি, রোনাল্ডিনহো, রোমারিও। এই প্রথম ব্রাজিলের আক্রমণ সাজাতে সমস্যা রয়েছে। তবে মিডফিল্ড বা ডিফেন্সে কিন্তু টিম দুরন্ত।” তা হলে কনফেড কাপে ব্রাজিলের নায়ক নেইমারকে নিয়ে আশাবাদী হতে পারছেন না তিনি। পেলে বলেন, “নেইমার দুরন্ত তরুণ ফুটবলার। কিন্তু এটা ওর প্রথম বিশ্বকাপ।”
শুধু টিমেই নয়, রাজনৈতিক সমস্যা আর প্রত্যাশার চাপও ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বড় বাধা বলে মনে করেন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী। বলেন, “ব্রাজিলের মানুষ জেতা ছাড়া আর কিছু ভাবে না। সেটা বড় চাপ। ১৯৫০-এ আমরা দেশের মাঠেই বিশ্বকাপে জিততে পারিনি। এটা একটা বিরাট চাপ তাতে সন্দেহ নেই। তার সঙ্গে রাজনৈতিক সমস্যা তো আছেই।” তবে সমস্যার পাশাপাশি আশার কথাও বলেন তিনি, “আমরা কনফেডারেশন কাপ জিতেছি। ওই টুর্নামেন্টেও কিন্তু চাপ কম ছিল না। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমরা ফাইনালে স্পেনের বিরুদ্ধে জিতেছি। তাতে ব্রাজিলে ক্রমাগত বাড়তে থাকা সমস্যাগুলো কিছুটা হলেও কমেছে।”