বঙ্গ-গৃহযুদ্ধের আবহে আজও অনিশ্চিত কেপি

কেভিন পিটারসেন শনিবার কেকেআরের বিরুদ্ধে নামছেন? না, নামছেন না? দিল্লির ডেয়ারডেভিলদের কাছে যদি উপরোক্ত প্রশ্ন কোটি টাকার হয়, তা হলে শহরবাসীর জন্যও একটা থাকবে। কোটি না হলেও, লক্ষ টাকার তো বটেই! রাত আটটা থেকে শহর আজ কোন দিকে থাকবে? লক্ষ্মী-মনোজ-শামির দিল্লি? না কি, গম্ভীর-কালিস-নারিনের কেকেআর?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:২১
Share:

লক্ষ্মী-শামি-মনোজ: যাঁদের ঘিরে আবেগ দু’ভাগ।

কেভিন পিটারসেন শনিবার কেকেআরের বিরুদ্ধে নামছেন? না, নামছেন না?

Advertisement

দিল্লির ডেয়ারডেভিলদের কাছে যদি উপরোক্ত প্রশ্ন কোটি টাকার হয়, তা হলে শহরবাসীর জন্যও একটা থাকবে। কোটি না হলেও, লক্ষ টাকার তো বটেই!

রাত আটটা থেকে শহর আজ কোন দিকে থাকবে? লক্ষ্মী-মনোজ-শামির দিল্লি? না কি, গম্ভীর-কালিস-নারিনের কেকেআর?

Advertisement

প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়া জটিল। আঙুলের চোট এখনও সারেনি পিটারসেনের। দিল্লি অধিনায়কের কেকেআরের বিরুদ্ধে শনিবার নামার সম্ভবনা কম। খুবই কম।

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। সেখানে ধোঁয়াশা বর্তমান। এক দিকে বাংলা। অন্য দিকে কলকাতা। এক দিকে লক্ষ্মী-মনোজ-শামি। অন্য দিকে গম্ভীরের টিম কেকেআর। যদিও বঙ্গ ক্রিকেটের একটা অংশ পরিষ্কার বলে দিচ্ছে, আজ রাতে তারা থাকবে দিল্লির দিকে। কেকেআরের দিকে নয়!

কেপি-র ব্যাপারস্যাপার শুনলে টিম কেকেআরের হাসি চওড়া হওয়া উচিত। আঙুলের চোটের জন্য রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে নামতে পারেননি দিল্লি অধিনায়ক। টিমকেও বিশ্রী ভাবে ম্যাচ হারতে হয়। শোনা যাচ্ছে, সারে-র হয়ে প্রি-সিজন ক্যাম্প করতে গিয়ে আঙুলে লাগে কেপি-র। যা এখনও ভোগাচ্ছে। আবু ধাবিতে ফোন করে জানা গেল, শনিবার তাঁর নামার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শুধু তাই নয়, দিল্লি টিম ম্যানেজমেন্টের আশঙ্কা সত্যি হলে প্রখ্যাত ইংরেজ ব্যাটসম্যান নেই আরও বেশ কয়েকটা ম্যাচ। যাঁর না থাকাকে বড় ক্ষতি বলে ধরছেন তাঁর দিল্লি টিমের সতীর্থরা। দুমিনি যেমন বলে দিয়েছেন, “কেভিনের না থাকাটা নিঃসন্দেহে আমাদের পক্ষে বড় ক্ষতি। ও যত তাড়াতাড়ি টিমে আসবে, তত ভাল।” কেপি নিজে টুইটে জানিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিল্লির সঙ্গে যোগ দিতে।

ঘটনা হল, কেপি খেললেন কি খেললেন না, সেটা নয়। কলকাতার ক্রিকেটমহল অনেক বেশি আগ্রহীলক্ষ্মীরতন শুক্লকে শনিবারের ম্যাচে কেকেআরের বিরুদ্ধে দেখা যাবে কি না। বলা হচ্ছে, ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টিতে বাংলার সেরা ক্রিকেটারকে বসিয়ে রাখার কোনও যুক্তি হয় না। এ দিন আবু ধাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করতে দিল্লির পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল লক্ষ্মীকে। কিন্তু তাঁকে আজ প্রথম এগারোয় রাখা হবে কি না (আরসিবি ম্যাচে রাখা হয়নি) তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাংলা টিমে লক্ষ্মীর সতীর্থ সৌরাশিস লাহিড়ী বলছিলেন, “ওকে না নিলে বড় ভুল হবে।” অশোক মলহোত্র, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়রাও মনে করছেন যে, কোনও দিকে না তাকিয়ে লক্ষ্মীর প্রত্যাবর্তন শনিবারই ঘটানো উচিত।

কিন্তু সমর্থন সেটা কোন দিকে থাকবে? বঙ্গ ক্রিকেটার সমন্বিত দিল্লি না ঘরের টিম?

আবু ধাবি-র খবর যা, তাতে পাল্টা দেওয়ার ইচ্ছে দিল্লির বঙ্গ-ব্রিগেডে আছে। কিন্তু কোনও আগেভাগে বহিঃপ্রকাশ ছাড়া। লক্ষ্মী যেমন ফোনে বলছিলেন, “না, না। ও সব কিছু নেই। যারা আমাদের নিয়েছে, তাদের হয়ে ভাল খেলাটাই আসল। বাকি কিছু নিয়ে না ভেবে।” কিন্তু তাঁর সতীর্থদের বক্তব্য আলাদা। সৌরাশিস বলছেন, কোনও টিমকে সমর্থনের রাস্তায় তিনি নেই। বাংলা ক্রিকেটারদের সমর্থন করবেন। দু’দলেরই। কিন্তু বাংলা কোচ অশোক মলহোত্র পরিষ্কার বলে দিলেন, “কেকেআরের জন্য তেমন কোনও অনূভূতি আমার এ বার নেই। কারণ বাংলার ক্রিকেটারই নেই। অবশ্যই চাইব লক্ষ্মীরা জিতুক।” বাংলা পেসার শিবশঙ্কর পালও জানিয়ে দিলেন টিভি খুলবেন, দিল্লির জয় দেখতে! বললেন, “কেকেআরকে অন্য কোনও ম্যাচে সাপোর্ট করব। কিন্তু কাল করতে পারছি না।” বাংলার রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণাত্মক। বললেন, “দিল্লি। চাইব মনোজ-লক্ষ্মীরা বাইশ গজে প্রমাণ করে দিক নিলামে কেকেআরের ওদের না নেওয়া কত বড় ভুল ছিল!”

কী দাঁড়াল?

ইডেনের সেই ঐতিহাসিক ৫ মে কোনও ভাবে নয়। হওয়া সম্ভবও নয়। কিন্তু ক্রুদ্ধ আবেগের ছোট ছোট বর্গক্ষেত্র শনিবার মরুশহরের যুদ্ধ নিয়েও সমান বিদ্যমান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন