এক দিকে ইন্দ্রজিৎ সিংহ বিন্দ্রার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এন শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধে নেমে পড়া। অন্য দিকে বম্বে হাইকোর্টের খারিজ হয়ে যাওয়া মামলার পুনরাবির্ভাব।
প্রাথমিক ভাবে বিচার করলে সোমবার দিনটা শ্রীনিবাসনের বিরোধীপক্ষের দিনই হয়ে থাকল।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিন্দ্রার আইনজীবী হাজির হয়ে শ্রীনির বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের মামলা তোলেন। আদালতকক্ষে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী শ্রীনির বিরুদ্ধে বলা হয়, সিএসকের টেন্ডারের ‘বিড’ যখন অনুমোদন করা হয়েছিল, নিয়ম বদলে সেটা করা হয়েছিল। আরও বলা হয়, শ্রীনিবাসন পুরো দুর্নীতিকে দেখেও ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যা অন্যায়। শোনা গেল, শ্রীনির স্বার্থের সংঘাতের প্রসঙ্গ নাকি এ বার কোর্ট আরও গুরুত্ব দিয়ে শুনবে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আবার আইপিএল স্পট-ফিক্সিং মামলার শুনানি রয়েছে। আর স্বার্থ-সংঘাতের প্রসঙ্গ নয়, শ্রীনি-বৈরিতার আর এক মুখ আদিত্য বর্মার মনে হচ্ছে, বম্বে হাইকোর্টের খারিজ হয়ে যাওয়া মামলার সুপ্রিম কোর্টে ফের আবির্ভাব ঘটাটা শ্রীনির সবচেয়ে বড় ধাক্কা হতে চলেছে। বম্বে হাইকোর্টে আদিত্য মামলা করেছিলেন এই মর্মে যে, ২০১২ সালে শ্রীনিবাসন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পুনর্নির্বাচনের রাস্তা প্রশস্ত করতে গঠনতন্ত্র বদলেছিলেন বোর্ডের। আগের নিয়ম অনুযায়ী যে অঞ্চলের যখন টার্ন আসত, তখন তাদের প্রতিনিধিই বোর্ড প্রেসিডেন্ট হতেন। কিন্তু শ্রীনি তা পাল্টে দেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী টার্ন না থাকলেও অন্য অঞ্চল থেকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়া যাবে। যদি যে অঞ্চলের টার্ন, তাদের এক সংস্থা সেই নাম প্রস্তাব করে আর এক সংস্থা সমর্থন করে।
এ দিন রাতে নয়াদিল্লি থেকে আদিত্য বললেন, “সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার মামলাটা আবার বিচার করবে। বম্বে হাইকোর্ট এটা খারিজ করে দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি সব শুনে নতুন রায় দিয়ে দেয়, তা হলে তো শ্রীনির প্রেসিডেন্ট হওয়াটাই গেল।” কারণ আর কিছুই নয়, বোর্ডের ওই নিয়ম পাল্টে ফেলা যদি কোর্টের বেআইনি মনে হয়, তা হলে ফিরবে আগের নিয়ম। যা হলে শ্রীনির পুনর্নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্ট বাছতে হবে পূর্বাঞ্চল থেকে। এ বার যাদের টার্ন।
আইপিএল সিইও সুন্দর রামনকেও এ দিন আদালতে যথেষ্ট তিরস্কৃত হতে হল। আদালত বলে দিল, আইপিএলে দুর্নীতি যখন চলেছে তখন সুন্দর বসে বসে ‘মজা দেখেছেন’। তাঁকে আদালত আরও বলে ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরেও তুমি কিছু করোনি। কারণ তুমি তখন সেলিব্রিটিদের ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত ছিলে। এখানেই শেষ নয়। সুন্দরকে নাকি আরও বলা হয়েছে, সিএসকের মুখ্যকর্তা গুরুনাথ মইয়াপ্পনের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তিনি চুপচাপ বসে ছিলেন। বোর্ডকে কিছুই জানাননি। প্রশ্ন করা হয়, জানাননি কেন? বোর্ডের বেতনভুক কর্মচারী বলে?
খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার মুদগল রিপোর্ট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তর্কবিতর্কের নাকি শেষ দিন। শ্রীনি-শিবির শেষ দিনে কতটা কী নিজেদের দিকে এখন পরিস্থিতি ঘোরাতে পারে, সেটাই দেখার।