আমার ‘ডাক’-এর সংগ্রহশালায় আরও একটা শূন্য যোগ হল। আমাকে নিয়ে জোক আর টিটকিরির সংখ্যাতেও! আমার তিনটে ‘ডাক’ নিয়ে যে পরিমাণ জোক তৈরি হচ্ছে, তাতে টুইটার বা ফেসবুকের কনটেন্ট টিমের কেউ নিশ্চয়ই প্রচুর টাকা লাভ করছে। ওয়েল ডান! আমিও চেষ্টা করছি এই ডাকগুলোর মজার দিকটা দেখার। যদিও এখন পর্যন্ত কাজটা করে উঠতে পারিনি। যখন পারব, আপনাদের নিশ্চয়ই জানাব।
শেষমেশ জয়টা ক্ষতের উপর মলমের কাজ করল। ম্যাচের ফল যদি আমাদের পক্ষে না যেত, তা হলে আমার কী প্রতিক্রিয়া হত জানি না। কোথাও গিয়ে আমার দুই ভারতীয় সতীর্থ এবং বন্ধু যুবরাজ সিংহ আর বিরাট কোহলির জন্য খারাপ লাগছিল। আমি জানি ওদের প্রচণ্ড খারাপ লাগছে। ম্যাচটা প্রায় ৩৯ ওভার পর্যন্ত আরসিবি-র নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু শেষে একটা চমৎকার হল বলেই আমার জিতে গেলাম। কেন জানি না মনে হচ্ছে, বৃহস্পতিবার বোধহয় ঈশ্বরও সোনালি-বেগুনি জার্সি পরে ‘কেকেআর...কেকেআর’ বলে চিৎকার করছিলেন!
না হলে আপনারাই বলুন, আরসিবির যখন ৯ বলে ১০ রান দরকার আর ক্রিজে যুবি আর এবি ব্যাট করছে, সেখান থেকে টিমটা কী ভাবে হারল? মাঠে আমি কখনও আশা ছেড়ে দিই না ঠিকই। কিন্তু সত্যি বলতে কী, বৃহস্পতিবার আমিও জানতাম যে, আমার টিমটা ভেন্টিলেটরে রয়েছে। ক্রিস লিনের ক্যাচ, উমেশ-বিনয়ের শেষ দু’টো ওভার আর আমাদের আত্মবিশ্বাস শেষ পর্যন্ত জিতিয়ে দিল। লিনের ক্যাচটাই ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছিল। আমি জানি না ও যেটা করল, সেটা কী ভাবে করল! ওই ক্যাচটা ওর ফিটনেস আর মানসিক শক্তির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।
অস্ট্রেলীয়রা যে ভাবে ক্রিকেটটা খেলে, তার বিশাল ভক্ত আমি। আমি সব সময় চাই আমার টিমে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার থাকুক। ওরা টাফ ক্রিকেট খেলে আর শেষ বলের আগে হাল ছেড়ে দেয় না। এই টুর্নামেন্টটা মাতিয়ে দিয়েছে আরও একজন অস্ট্রেলীয় গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। শনিবার ওদের বিরুদ্ধেই নামব। মনে হয় ম্যাচটা বেশ মজাদার হবে। কারণ ম্যাক্সওয়েলকে পাল্টা দেওয়ার মতো বোলিং আমাদের আছে। অবশ্য তার চেয়েও বেশি আমাদের দরকার আত্মবিশ্বাস।
যতটা ভেবেছিলাম, আমার দুঃখ তত হচ্ছে না দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। জয়ের তৃপ্তি আর একটা তরতাজা মনোভাব নিয়ে শুক্রবার সকালে ঘুম ভাঙল। আইপডে ‘জুগনি জি’ গানটা আমাকে সঙ্গ দিচ্ছিল। যতটা হাসা দরকার, ঠিক ততটাই হাসছি। দুবাই থেকে আবু ধাবির বাসযাত্রাটাও ভালই গেল। নির্লজ্জের মতো আমরা গুরগাঁও আর দুবাইয়ের শপিং মলগুলোর তুলনা করছিলাম। এটা জেনেও যে, দু’টোর মধ্যে কোনও তুলনা হয়ই না।
তখন পর্যন্ত মনে হচ্ছিল জীবনটা তো বেশ ভালই চলছে। কিন্তু তার পরই দিল্লির এক ‘শুভানুধ্যায়ী’-র কাছ থেকে একটা মেসেজ পেলাম। হ্যাঁ, আমাকে নিয়ে তৈরি একটা ডাক জোক। মেসেজটা ছিল অডি-র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হওয়া থেকে গৌতম আর শুধু একটা ডাক দূরে। কী করব? মেসেজের প্রেরককে ব্লক করে দেব? না। ফোন সুইচ অফ করে দেব? না, কখনওই না। ওই ‘শুভানুধ্যায়ী’-কে ফোন করে চিৎকার-চেঁচামেচি করব? সময় নষ্ট।
তা হলে সমাধান? ব্যাপারটাকে মেনে নিয়ে এটার বিরুদ্ধে লড়ব...অস্ট্রেলীয়দের মতো!