উৎকণ্ঠার প্রহর। ছবি: উৎপল সরকার
গোয়ার মাঠে হারের বদলা কি এ বার যুবভারতীতেই নিতে চান রবার্ট পিরেসরা?
আটলেটিকো দে কলকাতার মরণ বাঁচন ম্যাচে ফিকরুদের এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয় জিকোর এফসি গোয়া। লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা ছাড়াও কলকাতার বিরুদ্ধে হারের ক্ষতটা যে এখনও যন্ত্রণা দিচ্ছে পিরেসদের।
জিকো যেমন পরিষ্কার বলেই দিচ্ছেন, “আটলেটিকোর বিরুদ্ধে সেরাটা দিয়ে তিন পয়েন্ট পেতে চাই। এক নম্বরে থেকে সেমিফাইনাল খেলতে চাই।” পিরেস আবার বলেছেন, “আমরা এখানে আটলেটিকোকে ম্যাচ উপহার দিতে আসিনি।”
একটা টিমের কাছে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই। অন্য দলটার কাছে বদলার। প্রেক্ষাপটে রয়েছে মাস দেড়েক আগের সেই ম্যাচ। যেখানে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ফিকরু, হাবাস থেকে পিরেস। সে দিনের ঘটনা কি আজ বুধবারের ম্যাচে কোনও ভাবে প্রভাব ফেলতে পারে? কলকাতা বা গোয়া— দু’ টিমই ঘটনাকে অতীত বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। ত সত্ত্বেও এই ম্যাচকে ঘিরে উত্তাপের পারদ কিন্তু চড়ছে।
সেই উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন আন্দ্রে সান্তোস। যিনি এই মুহূর্তে জিকোর অন্যতম সেরা অস্ত্র। এ দিন বলেন, “কলকাতার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে আমরা ভাল খেলছিলাম। অনেক সুযোগও তৈরি করেছিলাম। কিন্তু গোল পাইনি। এ বার সে ভুলটা হবে না।” উল্টো দিকে কলকাতার হাবাস বললেন, “আমরা গোয়ার ম্যাচ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে এখন ভাবছি না। এই ম্যাচ জিততেই হবে।”
২০০৪ সালে জাপান টিমকে নিয়ে প্রথম কলকাতায় এসেছিলেন জিকো। ভারতের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ এখনও মানুষের মনে আছে আলো নিভে যাওয়ার কারণে। জিকো অবশ্য সেই বিতর্ক মনে রাখেননি। বরং মনে আছে কলকাতার দর্শকদের কথা। যাঁরা সে দিন তাঁর মন জিতে নিয়েছিলেন। “আলো নিভে যাওয়ার ঘটনায় আমি কখনওই বিরক্ত হইনি। আমার টিম তো ম্যাচ জিতেই গিয়েছিল। তা ছাড়া আলো নেভার চেয়েও এখানকার দর্শকদের কথা বেশি করে মনে আছে। অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল,” বলছিলেন গোয়া টিমের কোচ। আসলে যুবভারতী সে দিন তাঁকে খালি হাতে ফেরায়নি। আর সেই ঘটনার যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তবে সে দিনের ভারতের মতো আজ ঘরের মাঠ থেকে খালি হাতে ফিরতে হবে আটলেটিকোকেও। হয়তো বা ছিটকে যেতে হবে গ্রুপ লিগ থেকেই।
গার্সিয়া, ফিকরু, বোরহারা যখন এক পয়েন্টের খোঁজে, তখন ম্যাচ জেতার জন্য দেবব্রত, সান্তোস, পিরেসদের তাতাচ্ছে ফুটবলারদের প্রতি জিকোর অগাধ আস্থা দেখানোর মানসিকতা। আর এটাই নাকি গোয়া টিমের সাফল্যের মূল রহস্য। দেবব্রত রায় বললেন, “কোচ আমাদের উপর আস্থা রাখছেন, এর থেকে বড় মোটিভেশন কী হতে পারে?”
তবে এ বার জিকোর কপালের ভাঁজ চওড়া করেছে যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসের মাঠ। এ দিন মাঠের সমালোচনা করে জিকো বলেন, “কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলা খুবই কঠিন। ২০০৪-এ যখন এসেছিলাম তখন ঘাসের মাঠ ছিল। সেটা বরং ভাল ছিল।” তবে গার্সিয়ারা ছ’টি ম্যাচ এই কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলে ফেললেও এখনও সে ভাবে মানিয়ে নিতে পারেননি। যুবভারতীতে মাত্র দু’টি ম্যাচে জয় পেয়েছেন তাঁরা। হেরেছেন একটি। ড্র করেছেন তিনটি। পরিসংখ্যানের বিচারে যুবভারতীতে কিন্তু কলকাতার ড্রয়ের সংখ্যাই বেশি।