ম্যাচ ঘোরাতে পারেন যে দুই ‘ইন্দ্রজিৎ’

লিও মেসি, না টমাস মুলার? কার গোলে কাপ ফাইনালের মীমাংসা হবে? নয়্যার, না রোমেরো? কার দস্তানায় আটকে যাবে বিপক্ষের বিশ্বকাপ জয়ের সোনালি স্বপ্ন? আর্জেন্তিনা-জার্মানি মহাযুদ্ধের সম্ভাব্য নায়ক হিসাবে এই সব নামগুলোই ফুটবলদুনিয়া জুড়ে উড়ছে। কিন্তু দু’দলের লকাররুমেই একজন করে এমন ব্যক্তিত্ব আছেন, মেঘের আড়ালে ইন্দ্রজিতের মতোই যাঁরা অলক্ষ্যে মারাকানা মহারণের উপর প্রভূত প্রভাব ফেলতেই পারেন। দিনের শেষ দেখা যেতেই পারে, তাঁদের কারও হাতেই ছিল কাপ ফাইনালের আসল চাবিকাঠি!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:৪২
Share:

বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার: ম্যাচ ৫, মিনিট ৩৮৫, গোল ০, ক্রস ৪০%, ট্যাকল ১২, বল কেড়েছেন ২৩, সঠিক পাস ৩১০, ফাউল ৯, হলুদ কার্ড ১, সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৯.২ কিমি, দৌড়েছেন ৪৭.৮ কিমি

লিও মেসি, না টমাস মুলার? কার গোলে কাপ ফাইনালের মীমাংসা হবে?

Advertisement

নয়্যার, না রোমেরো? কার দস্তানায় আটকে যাবে বিপক্ষের বিশ্বকাপ জয়ের সোনালি স্বপ্ন?

আর্জেন্তিনা-জার্মানি মহাযুদ্ধের সম্ভাব্য নায়ক হিসাবে এই সব নামগুলোই ফুটবলদুনিয়া জুড়ে উড়ছে।

Advertisement

কিন্তু দু’দলের লকাররুমেই একজন করে এমন ব্যক্তিত্ব আছেন, মেঘের আড়ালে ইন্দ্রজিতের মতোই যাঁরা অলক্ষ্যে মারাকানা মহারণের উপর প্রভূত প্রভাব ফেলতেই পারেন। দিনের শেষ দেখা যেতেই পারে, তাঁদের কারও হাতেই ছিল কাপ ফাইনালের আসল চাবিকাঠি!

তাঁরা আর্জেন্তিনার জাভিয়ার মাসচেরানো আর জার্মানির বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার। দুই ফাইনালিস্ট দলের দুই নেপথ্য নায়ক!

সেমিফাইনালের শেষ মিনিটে নেদারল্যান্ডসের আর্জেন রবেনকে যে ফাইনাল ট্যাকলটা করে আর্জেন্তিনার নিশ্চিত পতন রোধ করেছিলেন মাসচেরানো, সেটাকে এ বারের বিশ্বকাপের সেরা ট্যাকল বলা হচ্ছে। অথচ সর্বদা মেসির আড়ালে থাকা মাসচেরানো বলে দিচ্ছেন, “পা-টা বাড়িয়ে দেওয়ার মুহূর্তেও ভেবেছিলাম, এই বুঝি রবেন পেরিয়ে গেল! তা হলেই সব শেষ! ও গোল করবেই। ভাবতেই পারিনি ট্যাকলটার টাইমিং একেবারে ঠিকঠাক হয়েছে!”


জাভিয়ের মাসচেরানো: ম্যাচ ৬, মিনিট ৬০০, গোল ০, ক্রস ০, ট্যাকল ১৮, বল কেড়েছেন ৪২,
সঠিক পাস ৪৭৮, ফাউল ৭, হলুদ কার্ড ০, সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০.৩ কিমি, দৌড়েছেন ৬৭.২ কিমি

উল্টো দিকে আবার সোয়াইনস্টাইগার ফাইনালে জার্মানির মিশন মেসি-র মুখ্য চরিত্র। অথচ মুলার-ক্লোজেদের আড়ালে থাকা সোয়াইনস্টাইগারের কথায় আগে দল পরে ব্যক্তি। “মিশন মেসি গোটা জার্মানির। আমার একার নয়। টিমমেটদের পাশে না পেলে মেসিকে আমার একার সাধ্য কী আটকাব!”

আর্জেন্তিনার হয়ে ১০৪ ম্যাচ খেলা মাসচেরানোর মতোই জার্মানি দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ফুটবলার সোয়াইনস্টাইগার। কিন্তু টুর্নামেন্টে জার্মানির প্রথম ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালকে ৪-০ নিধনে তিনি অংশীদার ছিলেন না। কোচ জোয়াকিম লো-র বেঞ্চে সোয়াইনস্টাইগারকে দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, ছোটখাটো চোটের বাহানায় তাঁকে এ বারের বিশ্বকাপে হয়তো ব্যবহারই করা হবে না। কিন্তু ঘানা ম্যাচে জার্মানির খুব খারাপ সময়ে মাঠে ফেরা ইস্তক মাঝমাঠের শাসন নিজের পায়ে তুলে নিয়েছেন সোয়াইনস্টাইগার। আর কয়েক সপ্তাহ বাদেই তিরিশে পা দিতে চলা বায়ার্ন মিউনিখ মিডিওর খেলার ধরনটাই যেন, এলেন-দেখলেন-জয় করলেন। শক্তি, ডিস্ট্রিবিউশন, গতি, বল কন্ট্রোল মিলিয়েটিলিয়ে একটা বিরাট প্রভাবশালী ফুটবল খেলেন তিনি। ব্রাজিলেও খেলছেন।

মাসচেরানোর ফুটবলটা আবার একবগ্গা। কিন্তু তীব্র কার্যকরী। হালকাচ্ছলে বিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিলেন! বল পজেশনে টিমমেটদের মধ্যে এক নম্বরে থাকলেন! সঠিক পাস বাড়ালেন সংখ্যায় যা পাস-মাস্টার আন্দ্রে পির্লোর চেয়েও বেশি! মাহেন্দ্রক্ষণে বিপক্ষের সেরা অস্ত্রকে ফাইনাল ট্যাকল করে নিজেদের দুর্গরক্ষা করলেন। এবং এ সব কঠিন কাজ মাসচেরানো ব্রাজিলের মাটিতে করছেন এমন সহজ ভঙ্গিতে, সাধারণ চোখে ধরাই পড়ছে না যে, মেসি-সাবেয়ার আর্জেন্তিনা কোন নেপথ্য নায়কের কল্যাণে আজ মারাকান ফাইনালে! ঠিক যেমন জার্মানিও!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন