পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে তাঁরা চিহ্নিত সবথেকে ‘ব্যলান্সড দল’ হিসাবে। যাঁদের রক্ষণ থেকে আক্রমণ তারকাখচিত। এডেন হ্যাজার্ড থেকে থিবাউ কুর্তোয়া, বিশ্বের সব দামি অস্ত্র রয়েছে দলে। তারা-- মার্ক উইলমটসের দল বেলজিয়াম। মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ২-১ হারিয়ে যারা এখন শেষ আটে। কেভিন দে ব্রায়ান ও রোমেলু লুকাকুর গোলের সৌজন্যে ২-০ এগোলেও জুলিয়ান গ্রিন গোল করে ব্যবধান কমান। তবুও শেষ কয়েক মিনিট লিড ধরে রাখতে সফল হলেন কোম্পানিরা।
যুক্তরাষ্ট্র বাঁধা টপকানো হয়ে গিয়েছে। পরের স্টপেজে অপেক্ষা করছেন সাবেয়া। এবং তাঁর কোটি টাকার আক্রমণ। যাঁর মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং লিওনেল মেসি। কিন্তু আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে নামার আগেই আত্মবিশ্বাসী মেজাজে বেলজিয়ান কোচ মার্ক উইলমটস। খাতায় কলমে তাঁদের যতই আন্ডারডগ বলা হোক না কেন, মেসি-ইগুয়াইনদের বাড়ি পাঠাতে তৈরি বেলজিয়াম। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের দু’দিন আগে উইলমটস বলেন, “আমি বুঝতে পারছি না আর্জেন্তিনা কী ভাবে দল সাজাবে আমাদের বিরুদ্ধে। ওদের দুর্দান্ত সব ফুটবলার আছে, কিন্তু দলে কোনও ব্যালান্স নেই।” বিশ্বকাপের ইতিহাসে দু’বার মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্তিনা-বেলজিয়াম। ১৯৮২-তে একটা জয়ও আছে রেড ডেভিলসের।
এখন থেকেই উইলমটসের মাথায় ঘুরছে, কী করে থামাবেন মেসিকে? বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে গোলের মুখ না দেখানোর ওষুধ এখন থেকেই ছকে রেখেছেন বেলজিয়াম কোচ। বলেন, “মেসিকে কোনও রকম জায়গা দেওয়া মানেই বিপদ ডেকে আনা। যতটা পারব ওকে ব্লক করার চেষ্টা করব। এই প্রথম বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচে আমরা ফেভারিট নই, কিন্তু তাতে কোনও ভয় নেই আমাদের।” ম্যাচ জিততে শুধু শারীরিক শক্তি নয়, মানসিক চাপও অতিক্রম করতে হবে দুই দলকে। যে ক্ষেত্রে বেলজিয়ামকে এক ধাপ এগিয়ে রাখলেন উইলমটস। বলেন, “ম্যাচ জিততে শুধু ছক নয়। কে কতটা মানসিক চাপ সামলাতে পারে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যাবে।” আবার উইলমটসের দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র এডেন হ্যাজার্ড স্বীকার করেছেন, কিংবদন্তিদের কাছাকাছি পৌঁছতে হলে তাঁকে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ জিতে উঠে বেলজিয়াম ফুটবলার বলেন, “মেসির মতো ফুটবলারকে খুব ভাল লাগে। আজ হয়তো আমি মেসির মতো খেলছি না। কিন্তু এক দু’বছরের মধ্যে আরও ভাল খেলব। মেসিদের বিরুদ্ধে লড়াই জিততে সর্বশক্তি লাগিয়ে দেব।”
এক দিকে যখন হ্যাজার্ড মরিয়া এলএম টেনের মতো খেলতে, তাঁর সতীর্থ এখন থেকেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তারকা মারুয়ান ফেলাইনি খারাপ ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপে আসলেও, প্রতিটা ম্যাচেই উন্নতি করেছেন আর হয়ে উঠেছেন দলের অপরিহার্য অঙ্গ। ফেলাইনি বলেন, “আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে পরীক্ষাটা কঠিন। কিন্তু আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা রাখি। আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই।”