মেসির থেকে আজ আরও বেশি নেতৃত্ব আশা করব

কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের যে পরিমাণ কড়া টক্কর আর্জেন্তিনা সফল ভাবে সামলেছে, বিশেষত দ্বিতীয়ার্ধে, সেটা মনে হয় তাদের সেমিফাইনালের জন্য ভালই হবে। যে ম্যাচে আর্জেন্তিনা মুখোমুখি হচ্ছে বেলজিয়ামেরই প্রতিবেশী দেশের। নেদারল্যান্ডস। বেলজিয়াম ম্যাচেই সম্ভবত টুর্নামেন্টে প্রথম আর্জেন্তিনাকে দেখে মনে হয়েছে, ওদের প্রতিটা আক্রমণের পিছনে মেসির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা না থাকলেও ওরা ভাল খেলতে পারে।

Advertisement

পিটার শিলটন

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের যে পরিমাণ কড়া টক্কর আর্জেন্তিনা সফল ভাবে সামলেছে, বিশেষত দ্বিতীয়ার্ধে, সেটা মনে হয় তাদের সেমিফাইনালের জন্য ভালই হবে। যে ম্যাচে আর্জেন্তিনা মুখোমুখি হচ্ছে বেলজিয়ামেরই প্রতিবেশী দেশের। নেদারল্যান্ডস।

Advertisement

বেলজিয়াম ম্যাচেই সম্ভবত টুর্নামেন্টে প্রথম আর্জেন্তিনাকে দেখে মনে হয়েছে, ওদের প্রতিটা আক্রমণের পিছনে মেসির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা না থাকলেও ওরা ভাল খেলতে পারে।

বিশেষ করে নাপোলি স্ট্রাইকার গঞ্জালো ইগুয়াইনকে পুরনো ফর্মে ফিরতে দেখাটা আর্জেন্তিনার বুকের জোর দারুণ বাড়িয়ে তোলার মতোই। কোয়ার্টার ফাইনালে ইগুয়াইনের কমপক্ষে দুটো গোল করা উচিত ছিল। কিন্তু ওই ম্যাচে তার চেয়েও বড় বাস্তব আর্জেন্তিনার হল, এবং নিষ্ঠুর বাস্তব যে, অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া চোটের জন্য বিশ্বকাপেরই বাইরে ছিটকে গিয়েছে! ওর মতো প্রচণ্ড গতির, দুর্দান্ত পরিশ্রমী মিডফিল্ডার যে কোনও আন্তর্জাতিক দলে খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। সেমিফাইনালে দি’মারিয়ার অভাব আমার মনে হয়, আর্জেন্তিনা দলে ওর বাকি সব সতীর্থের মনে যথেষ্ট চেপে থাকবে।

Advertisement

তবে বেলজিয়াম ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্তিনীয় ডিফেন্স দারুণ ভাল খেলেছিল। গোলকিপার সের্জিও রোমেরোকে সে ভাবে বড় পরীক্ষার সামনে পড়তেই হয়নি। আমার মতে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্তিনার বোনাস হল, ওরা দারুণ টিম স্পিরিট দেখানোর পাশাপাশি এগারো জনই খুব ভাল বোঝাপড়া দেখিয়েছে।

আশ্চর্যের হল, আর্জেন্তিনার আগের ম্যাচটায় যেটা আমার কাছে একমাত্র খচখচানির কারণ, সেটা হল লিওনেল মেসি! সে দিনও অন্য সব ম্যাচের মতোই অসাধারণ পাস করেছে মেসি। গোড়ার দিকে খুব সুযোগসন্ধানী ফুটবলটাও খেলেছে। কিন্তু যখন ওর টিম শুরুকেই পাওয়া এক গোলের ‘লিড’ ধরে রাখতে কঠিন সংগ্রাম করছিল, ম্যাচের সেই সময়টায় মেসির থেকে আরও বেশি নেতৃত্ব আশা করেছিলাম!

যদিও আমার মতে একজন অধিনায়ক ততটাই ভাল, যতটা ভাল তার টিম। তার বাকি সতীর্থরা। তা সত্ত্বেও বল সমেত মেসিকে বিপক্ষ দল কয়েক বার আটকে দিয়েছে দেখাটা কেমন যেন চোখের পক্ষে পীড়াদায়ক। সম্ভবত মেসির উপর আমাদের প্রত্যাশাটা আকাশকুসুম বলেই! কিন্তু কঠিন বাস্তবটা হল, মেসি যত বেশি এ রকম আটকে যাবে, তত বেশি মাঠে ওর সতীর্থেরা ওই বল সমেত লোকটার দিকেই তাকাবে, শুধু বলটার দিকে তাকানোর পরিবর্তে। কিন্তু পরেরটাই তখন মেসির সতীর্থদের বেশি করা উচিত। মেসির হারানো বলটা নিজেদের দখলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নকে আবার স্বমেজাজে ফিরতে সাহায্য করা।

আর্জেন্তিনার সেমিফাইনালিস্ট প্রতিপক্ষ আবার টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ছন্দে। কোস্টারিকার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস যে একশো কুড়ি মিনিট গোল করতে পারেনি, তার প্রধান কারণ হল, কেলর নাভাসের অনবদ্য গোলকিপিং। রবিন ফান পার্সি-ওয়েসলি স্নাইডার-আর্জেন রবেন আক্রমণে একটা চমৎকার ত্রিভূজ তৈরি করছে সব ম্যাচে। বিশেষ করে রবেনকে এক-এক সময় অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে। ওর খেলায় একটাই দোষ পেনাল্টি আদায় করার জন্য বিপক্ষের বক্সে ওর ইচ্ছাকৃত ডাইভিং। এবং বিশ্বকাপে এই ট্যাকটিক্সটা রবেন অনেকবার নিয়েছে। এ রকম ছেলেমানুষী ওর মতো দুর্দান্ত ফুটবলারের পক্ষে বেমানান। আমি নিশ্চিত, রবেনের ডাইভিং ছাড়াও ও স্বয়ং আর ওর সতীর্থরা আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে আজ তীব্র লড়াই দিতে পারে।

সব শেষে আমি ঝুঁকি নিয়েই বিশ্বকাপ শুরুর আগে আমার বাছা ফেভারিটের উপর এখনও বাজি লাগাচ্ছি। হ্যাঁ, এখনও বলছি, কাপ জেতার ব্যাপারে আর্জেন্তিনাই সবার চেয়ে এগিয়ে। তবে ওদের আজকের সেমিফাইনালের স্কোরলাইনের উপর কোনও বাজি ধরতে আমি রাজি নই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন