রবিন আবার রবিনহুড

মণীশের ব্যাটিং মনে করাল চিন্নাস্বামীর ফাইনালের রাত

যুদ্ধটা শুরু হওয়ার আগেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এমন একটা তুলনা ভেসে উঠল, যা দেখে লোকের আন্দাজ পাওয়া উচিত পরবর্তী সাড়ে তিন ঘণ্টায় কী হতে যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০৩
Share:

৫৫ বলে ৮৫*। ছবি: পিটিআই

যুদ্ধটা শুরু হওয়ার আগেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এমন একটা তুলনা ভেসে উঠল, যা দেখে লোকের আন্দাজ পাওয়া উচিত পরবর্তী সাড়ে তিন ঘণ্টায় কী হতে যাচ্ছে।

Advertisement

ডলফিন্স— তিনটে ম্যাচ, তিনটে হার, টুর্নামেন্ট থেকে ইতিমধ্যেই বিদায়। এই ম্যাচ জেতা না জেতা কোনও অর্থ রাখে না। কেকেআর তিন ম্যাচ, তিন জয়, সেমিফাইনালে উঠে পড়েছে ইতিমধ্যেই। এই ম্যাচ জেতা না জেতা কোনও অর্থ রাখে না।

ভীমগতিতে ২০ ওভারে ১৮৭ তুলে ৩৬ রানে কেকেআরের জয় তাই আশ্চর্যের নয়। ডলফিন্স তাদের সীমিত ক্ষমতায় যুদ্ধ করেছিল। প্রথম দিকে সুনীল নারিনকে পর্যন্ত রিভার্স সুইপ মারার সাহস তারা দেখিয়েছে। কিন্তু একটা সাধারণ টি-টোয়েন্টি টিম আর একটা চ্যাম্পিয়ন টি-টোয়েন্টি টিমের মধ্যে যে ফারাকটা থাকে, সেটাই শেষ পর্যন্ত থেকে গেল কেকেআর আর ডলফিন্সের মধ্যে। তেরোয় তেরো হল নাইটদের। মহাষ্টমীর সেমিফাইনালে চোদ্দোয় চোদ্দো হলে অধরা স্বপ্নের খুব কাছে চলে যাবেন গৌতম গম্ভীর।

Advertisement

জয়ের মঞ্চটা তৈরি হয়ে গিয়েছিল কেকেআর ব্যাটিংয়ের সময়ই। এত দিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কেকেআর টানা জিতলেও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছিলেন টপ অর্ডার নিয়ে। বলা হচ্ছিল, নারিন এবং কুলদীপ যাদবকে পেয়ে নাইটদের অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে। গম্ভীরের তাই এ দিনের প্রাপ্তি ডলফিন্সের বিরুদ্ধে জয় হওয়া উচিত নয়। হওয়া উচিত তাঁর টপ অর্ডারের ফর্মে ফেরা। রবিন আবার রবিনহুড। মণীশ পাণ্ডে আবার যেন চিন্নাস্বামীর মায়াবী মণীশ।

গম্ভীর-কালিস তাড়াতাড়ি আউট হয়ে গেলেও যে ভাবে দু’জন সামলে দিলেন, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ৫৫ বলে ৮৫ নটআউট উথাপ্পা। কিন্তু তার চেয়েও বেশি নির্মম মণীশ। পাঁচটা বাউন্ডারির সঙ্গে পাঁচটা বিশাল ওভার বাউন্ডারি, ৪৭ বলে ৭৬ নট আউট। বিপক্ষ পেসারদের মধ্যে একমাত্র কাইল অ্যাবটকে শুরু থেকে মারাত্মক দেখাচ্ছিল। প্রথম দু’ওভারে দিয়েছিলেন ৮। আঠারো নম্বর ওভারে ওই অ্যাবটকেই মেরে ২২ নিলেন মণীশ! তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিটাও (আইপিএল ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিলিয়ে) করে গেল রবিন-মণীশ জুটি (৯১ বলে ১৫৩)। ম্যাচ-সেরার পুরস্কার নিয়ে রবিন বলে গেলেন, “মণীশকে যত ফ্রি খেলতে দেবেন, ও তত ভাল খেলবে।”

কেকেআর ক্যাপ্টেনকেও শোনা গেল দুই ব্যাটসম্যানের ভূয়সী প্রশংসা করতে। ব্যাটসম্যান গম্ভীর রান পাচ্ছেন না। কিন্তু টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, তত অধিনায়ক গম্ভীরের ঔজ্জ্বল্য বাড়ছে। এ দিন ডেথে কলুদীপ যাদবকে দিয়ে করালেন এবং সফল হলেন। টিমে ফাস্ট বোলার রাখছেন না, প্যাট কামিন্স ডাগআউটে বসে দু’টো ম্যাচ হয়ে গেল, তবু ক্যাপ্টেন গম্ভীরের ম্যাচ জিততে অসুবিধে হচ্ছে না। টিমের থেকে শুধু একটা জিনিস চান গম্ভীর। বললেন, “আত্মতুষ্টিটা যাতে না ঢোকে দেখব। বাকি কিছু নিয়ে চিন্তা নেই।”

২ অক্টোবরের হায়দরাবাদে হোবার্ট হারিকেন্সকে না আসল হারিকেনের সামনে পড়তে হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন