জেমস আর মর্গ্যান। তৈরি হচ্ছেন লোবোদের চ্যালেঞ্জ সামলাতে। বৃহস্পতিবার সাইয়ে কেরল প্র্যাকটিস। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
দু’ম্যাচে জয় নেই। ফিকরু, বোরহাদের বিরুদ্ধে চিন্তার মাঝেই ট্রেভর মর্গ্যানের টিমে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিলেন তাঁর-ই এক প্রাক্তন ছাত্র।
কেভিন লোবো।
যাঁকে কেরল ব্লাস্টার্স কোচ মর্গ্যানই কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ থাকার সময়।
আইএসএলে বিদেশিদের উজ্জ্বল আলো সরিয়ে বৃহস্পতিবার কেভিন লোবোর জোড়া গোল গোয়ার ম্যাচে পিছিয়ে পড়া কলকাতার ড্রেসিংরুমে দীপাবলির উত্সবে রংমশাল জ্বালিয়ে দিলেন। পাশাপাশি রবিবার আটলেটিকো কলকাতার পরের প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স শিবিরে জাগিয়ে তুলেছেন আতঙ্ক।
সচিন তেন্ডুলকরের দলের গোলকিপার সন্দীপ নন্দীর মতো সিনিয়র ফুটবলার সেটা মেনে নিলেও টিমের পেশাদার ব্রিটিশ কোচ অবশ্য টিভিতে ম্যাচ দেখে উঠে বলে দিলেন, “আইএসএলে এত দিন কেন লোবোকে খেলানো হচ্ছিল না সেটাই বরং বুঝতে পারছি না। লোবো দারুণ ইউটিলিটি ফুটবলার। তবে আমাদের তো রবিবার খেলতে হবে এগারো জনের বিরুদ্ধে। আমার কাছে সেই এগারোর মধ্যে লোবো এক জন। ব্যাস!”
দেশ জুড়ে দীপাবলির উত্সব চলা সত্ত্বেও এ দিন সন্ধেয় কলকাতা বনাম গোয়া ম্যাচ দেখার জন্য নিজের দলের সব ফুটবলারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কেরল ব্লাস্টার্স কোচ মর্গ্যান। সব ফুটবলারই সেটা মেনে শহরের টিম হোটেলে বসেছিলেন টিভির সামনে। ম্যাচের পর সন্দীপ নন্দী বলছিলেন, “খুব ভাল দু’টো গোল করেছে লোবো। খুব ভাল ফর্মেও আছে।”
ময়দান ফুটবলে পোড়খাওয়া কেরল ফ্র্যাঞ্চাইজির আর এক ফুটবলার ইসফাক আমেদ বললেন, “লোবো এ দিন না থাকলে কলকাতা কিছুতেই জিতে ফিরতে পারত না।”
আটলেটিকো দে কলকাতা কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস এত দিন খেলাচ্ছিলেন না লোবোকে। বছর তিনেক লাল-হলুদে নিয়মিত খেলা ফুটবলারটিকে বসিয়ে খেলানো হচ্ছিল রাকেশ মাসিকে। যিনি গত মরসুমে মহমেডানেই নিয়মিত সুযোগ পাননি। এ সব কিছুই হয়তো তাতিয়ে দিয়েছিল লোবোকে। আইএস এলে কলকাতার চার নম্বর ম্যাচে সুযোগ পেয়েই যেটা দেখিয়ে দিলেন তিনি। পরে ম্যাচ শেষে লোবো বলছিলেন, “দলকে জিততে সাহায্য করতে পেরেছি, এটা ভেবেই ভাল লাগছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পেরেছি।”
এ দিনের আগে আইএসএলে ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে বলবন্ত সিংহ, সুভাষ সিংহ একটি করে গোল করে বিদেশিদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। সেই গৌরবকেও এক দিনেই টপকে গেলেন গোয়ার ছেলে লোবো। জন্মভিটেতেই সেখানকার ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের মুখের গ্রাস কেড়ে নিলেন তিনি।
ডেম্পো থেকে মুম্বই এফসি হয়ে ২০১২-এ ইস্টবেঙ্গলে সই করেন লোবো। সেই অর্থে মর্গ্যানের হাতেই তাঁর উত্থান। ব্রিটিশ কোচ তাঁকে লাল-হলুদে ব্যবহার করতেন যে জায়গায় সেই পজিশনেই এ দিন লোবোকে খেলান আটলেটিকো কলকাতার স্প্যানিশ কোচ হাবাস। আর নিজের প্রিয় জায়গায় সুযোগ পেয়েই নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন লোবো। কলকাতার মার্কি ফুটবলার লুই গার্সিয়া পরের ম্যাচেও অনিশ্চিত। তাঁর জায়গায় লোবোই নামবেন রবিবার। ফলে মর্গ্যানকে নতুন করে অঙ্ক কষতে হবে প্রাক্তন ছাত্রকে নিয়ে।