হ্যাটট্রিক করে। ছবি: পিটিআই
মুম্বই সিটি ৫ (মরিতজ ৩ হ্যাটট্রিক, সুভাষ, জোহান)
পুণে সিটি ০
লড়াইটা রণবীর কপূর বনাম হৃতিক রোশনের। সেটাই ছিল ইউএসপি। রুপোলি পর্দায় নয়, ফুটবল মাঠে। আইএসএলে দুই তারকার টিমের মুখোমুখি যুদ্ধে। টিমকে উত্সাহ দিতে ম্যাচের আগে হৃতিক টুইটও করেছিলেন, ‘আমাদের জন্য খুব বড় ম্যাচ। প্রথম মহারাষ্ট্র ডার্বি। হৃদয় উজাড় করে শুধু খেলে যাও পুণের ফুটবলাররা। অল দ্য বেস্ট।” কিন্তু শেষ রক্ষা হল না! শনিবার বলিউডের এক মাত্র ‘সুপারহিরো’র টিমকে সহজেই হারিয়ে দিল রণবীরের মুম্বই।
সচিন, সৌরভদের পর এখন বিরাট, ধোনি, কোহলিরা-- যে মাঠ এত দিন ভারতীয় মহাতারকা ক্রিকেটাররা শাসন করেছেন, এ দিন সেই ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামেই তিরিশ হাজারেরও বেশি দর্শক দেখল আর এক দাপট। মুম্বই সিটি এফসির। মহারাষ্ট্র ডার্বিতে শুধু পাঁচ গোলে পুণে সিটিকে উড়িয়ে দেওয়াই নয়, টুর্নামেন্টের শুরুতেই হোঁচট খাওয়ার পর এই ম্যাচ থেকেই যেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে হরিণের গতিতে ছোটার ইঙ্গিতটাও দিয়ে রাখল পিটার রিডের দল। যার নেপথ্যে মুম্বইয়ের ব্রাজিলীয় অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আন্দ্রে মরিতজ। আইএসএলের প্রথম হ্যাটট্রিক করে দলকে স্বস্তি দেওয়ার সঙ্গে রেকর্ডবুকেও নিজের নামটা যিনি তুলে ফেললেন।
ঘরের মাঠে ফিরেই যে এ ভাবে মুম্বই দাপট দেখাবে সেটা বোধহয় তাঁদের সমথর্করাও ভাবেননি। আইএসএলের প্রথম ম্যাচেই যাঁদের আটলেটিকো কলকাতার কাছে ০-৩ ধরাশায়ী হতে হয়েছিল, তাদের কাছে এতটা আশা করা যায় কোথায়! অবশ্য ম্যাচের আগের দিনই মুম্বইয়ের প্র্যাকটিসে ঝড়ের একটা পূর্বভাস ছিল। পাসিং, শুটিং, ড্রিবলে দেখা গিয়েছিল আলাদা গতি ও ক্ষিপ্রতা। যেটা উদ্বোধনী ম্যাচে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। কোচ পিটার রিড যার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ঘাসের মাঠে স্বচ্ছন্দ থাকার কথাই বলেছিলেন। যুবভারতীর কৃত্রিম টার্ফে যেটা পায়নি তাঁর টিম। তার উপর চোটের জন্য প্রথম ম্যাচে না থাকা টিমের সুইডিশ তারকা ফুটবলার ফ্রেডরিক লিউনবার্গের ফিরে আসাটা দলের আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়েছিল।
সবাইকে অবশ্য এ দিন ছাপিয়ে গেলেন মরিতজ। প্রধমার্ধে জোড়া গোলে মুম্বইকে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে যিনি দুরন্ত হ্যাটট্রিকে পুণের ম্যাচে ফিরে আসার পথে ঠান্ডা জল ঢেলে দেন। ২৮ বছরের ব্রাজিলীয় ইন্টারন্যাশিওনালে সিনিয়র কেরিয়ার শুরু করার পর ফ্লুমিনেন্সে, তুরস্কের কাসিমপাসা, ইপিএলের ক্রিস্টাল প্যালেস, বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের মতো ক্লাবে খেলেছেন। তবে স্বদেশীয় ফুটবল মহলে তাঁর একটা পরিচয় রয়েছে ‘ত্রাতা’ হিসেবে। ফ্লুমিনেন্সে থাকার সময় খুব একটা সুযোগ পাননি মাঠে নামার (চার ম্যাচে তিন গোল)। কিন্তু মরসুমের শেষ ম্যাচে তিনিই ক্লাবের অবনমন বাঁচিয়েছিলেন। ২০০৭ কোপা দো ব্রাজিল জিততে সাহায্য করেন ফ্লুমিনেন্সেকে। বছর দু’য়েক আগে ক্রিস্টাল প্যালেসের হয়েও ইপিএলে একই ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এ বার মুম্বই সিটি এফসি-র জার্সিতেও ‘ত্রাতা’ হয়ে উঠতে পারেন কি না সেটাই দেখার।