একচল্লিশের ফিটনেস মন্ত্র ফাঁস করলেন লিয়েন্ডার

রিঙ্ক ফুটবল থেকে মাঝরাতের কার্ডিও

মোটামুটি আর মাস চারেক পরেই তিনি পা দেবেন বিয়াল্লিশে। অথচ এখনও দিব্য গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতছেন। পরের বছর নিজের সপ্তম অলিম্পিক খেলা প্রধান টার্গেট। অবসর? এই মুহূর্তে যার কোনও চিন্তাভাবনাই নেই। তিনি লিয়েন্ডার পেজের এ হেন সাফল্যের, দৈহিক ও মানসিক শক্তির রহস্য কী?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১৫
Share:

মোটামুটি আর মাস চারেক পরেই তিনি পা দেবেন বিয়াল্লিশে। অথচ এখনও দিব্য গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতছেন। পরের বছর নিজের সপ্তম অলিম্পিক খেলা প্রধান টার্গেট। অবসর? এই মুহূর্তে যার কোনও চিন্তাভাবনাই নেই। তিনি লিয়েন্ডার পেজের এ হেন সাফল্যের, দৈহিক ও মানসিক শক্তির রহস্য কী?

Advertisement

অস্ট্রেলীয় ওপেনে মিক্সড ডাবলস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেলবোর্ন থেকে দেশে ফিরে ক’দিন মাত্র কাটিয়ে মুম্বই থেকে রটারডাম রওনা হওয়ার আগের দিন স্বয়ং লিয়েন্ডারই সেই রহস্য ফাঁস করলেন।


পেশাদার ট্যুরের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: বারো বছর আগেও মরসুমে চল্লিশ সপ্তাহ পৃথিবী জুড়ে খেলে বেড়াতাম। এখন সেখানে অনেক কম সপ্তাহ খেলি। সেটাও বেছে-বেছে। তার জন্য কতটা জার্নি করতে হবে সেটা বুঝে। তাতে অহেতুক স্ট্যামিনা ক্ষয় হয় না।

Advertisement

গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য শারীরিক প্রস্তুতি: টুর্নামেন্টের ছয় সপ্তাহ আগে থেকে স্পেশ্যাল ট্রেনিং শুরু করি। গোটা শরীরের ট্রেনিং।

পায়ের জন্য: বিশেষ করে থাই মাসলের শক্তি বাড়ানোর জন্য টানা অনেকক্ষণ বাইসাইকেল চালাই।

শরীরের উর্ধাঙ্গের জন্য: বিশেষত কাঁধ আর কব্জির শক্তি বাড়াতে জিম করি। কিছু স্পেশ্যাল ওয়েট ট্রেনিং। যাতে নিজের একটা সার্ভিস গেমে অন্তত তিনটে ‘এস’ মারতে পারি।

মাঝরাতে কার্ডিওভাসকুলার এক্সারসাইজ: এটা সারা দিনে সময় পেলেই চলে আমার। এমনকী মাঝরাতেও। সময়-সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গেও রিঙ্ক ফুটবল (ফাইভ আ সাইড ইন্ডোর সকার) খেলি। সেটাও মাঝরাতে। যেটার অবশ্য কেবল আমেরিকা-ইউরোপেই সুযোগ ঘটে।

মেডিটেশন, যোগা, আত্মিক প্রার্থনার অনুশীলন: আমার এখনও পর্যন্ত ৯৯ জন ডাবলস পার্টনার আর ২৬ জন মিক্সড ডাবলস সঙ্গীকে নিয়ে খেলার কেরিয়ারে পাঁচবার খুব খারাপ মানসিক অবস্থা এসেছে। নানা কারণে। প্রতিবারই সেই সময়টায় যোগা, প্রার্থনা খুব গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে আমার সেই কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে আসার লড়াইয়ে। এখনও প্রতিদিন নিয়মিত যোগা করি। মেডিটেশন সেশন করি। এমনকী এখন সময়ে সময়ে দাবাও খেলি আরও মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য।

ফিটনেসের সেরা সময়: ট্রেনিং যত নিখুঁত হবে, তার ফল ততই বেশি পাওয়া যাবে। নিজের এখনকার ট্রেনিং শিডিউলের জ্ঞানটা যদি কুড়ি বছর বয়সে থাকত আমার! এত দিনের অভিজ্ঞতায় জানি, কারও শরীর যখন একেবারে তাজা অবস্থায় থাকে, তখন তার মন কিন্তু সব কিছুই শেখার মতো পরিপক্ক থাকে না। আবার যখন কারও মন সম্পূর্ণ পরিণত হয়ে ওঠে, তখন তার শরীরের আস্তে আস্তে অবনতি ঘটা শুরু হয়ে যায়। আমার টেনিসের শারীরিক চ্যালেঞ্জ হল— নিজের এই সম্পূর্ণ পরিণত মানসিক সময়ে শরীরকেও পাশপাশি সম্পূর্ণ পরিণত রাখতে পারাটা। শরীরের অবনতি আটকানো। সেটাই করে সাফল্যের সঙ্গে খেলে বেড়াচ্ছি। আমার জীবনযাত্রা খুব সহজ-সরল। মদ, সিগারেট ছুঁই না। প্রতিদিন খাওয়াদাওয়া সম্পূর্ণ ডায়েটিশিয়ানের প্রেসক্রিপশন মেনে করি। নির্দিষ্ট সময় ঘুমোই। আসল ব্যাপার হল ট্রেনিং রেজিমকে অনুপুঙ্খ অনুসরণ করা। ফল এমনিই আসবে।

আগের চেয়েও ফিট অনুভব করা: পঁচিশ বছর এটিপি পেশাদার সার্কিটে কাটানোর পরেও আমি নিজেকে মনে করি, আগের চেয়ে কোর্টে দ্রুত, শক্তিশালী, তৎপর একজন টেনিস প্লেয়ার। বিশ্ব টেনিসের আটটা প্রজন্ম দেখা হয়ে গেল আমার। যাদের সঙ্গে আমি যৌবনে ডাবলস/মিক্সড ডাবলস খেলেছি, তাদের বেশির ভাগ এখন অবসরজীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু আমি চালিয়ে যেতে পারছি একটা অসাধারণ ফিটনেস রেজিমকে বছরের তিনশো পঁয়ষট্টি দিনই একশো দশ ভাগ সঠিক অনুসরণ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন