ভক্তদের সঙ্গে খোশমেজাজে রবেন। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
অন্যদের কথা জানি না, আমার কাছে কিন্তু এটাই সর্বকালের সবচেয়ে উপভোগ্য বিশ্বকাপ হচ্ছে। ফুটবলের মানের দিক থেকে বলছি না। এমন নয় যে, খুব উঁচুদরের ফুটবল খেলা হচ্ছে। তবে টিমগুলোর মধ্যে এ বার ফারাক খুব কম। কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছোতে বড় টিমগুলোকে যে রকম মেহনত করতে হল সেটা দেখে ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশান্বিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছি। ছোট টিমদের এই উন্নতি প্রথাগত ভাবে শক্তিশালী টিমগুলোকে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে নিজেদের মান আরও উঁচুতে তুলে নিয়ে যেতে বাধ্য করাবে। তাতে সার্বিক ভাবে ফুটবলেরই মঙ্গল।
শেষ ষোলোর আটটা ম্যাচই ধরুন। সাতটায় ফয়সালার জন্য অপেক্ষা করতে একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। প্রায় সব ম্যাচে শক্তিশালী রক্ষণের সামনে আটকে গেল তারকা স্ট্রাইকাররা। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি!
ব্রাজিল বনাম চিলি ম্যাচটা তো রীতিমতো স্নায়ু-যুদ্ধ হয়ে উঠেছিল। ব্রাজিলের রিজার্ভ বেঞ্চ আর সমর্থকদের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল ওরা কী প্রচণ্ড দমবন্ধ করা চাপে ছিল আর শেষ পর্যন্ত জেতাটা ঠিক কতটা কঠিন হয়ে ওঠে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও একটা ম্যাচ যদি আক্ষরিক অর্থে হৃদয় বিদারক হয়ে থাকে, তবে সেটা নেদারল্যান্ডস বনাম মেক্সিকো। অনেকেই মনে করেন, সে দিন জিতে মাঠ ছাড়া উচিত ছিল মেক্সিকোরই। ওদের গোলকিপার গুলেরমো ওচোয়া ছেলেটা অসাধারণ! গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ কিপিং করেছে। কিন্তু সে দিন আর্জেন রবেন যে ‘অনুপ্রাণিত’ পেনাল্টিটা আদায় করে ওকে শেষ পর্যন্ত হারাল, সেটার জন্য ওচোয়ার দলের কাউকেই আমি পুরো দোষ দিতে পারছি না।
এই প্রসঙ্গেই রেফারিং-এর মান নিয়ে দু’চার কথা বলতে চাই। শুনলাম ক্লিন্সম্যান নাকি বেলজিয়াম-যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে ফরাসি রেফারি দেখে ক্ষুব্ধ। কারণ, বেলজিয়ামের প্লেয়াররা সবাই ফরাসিভাষী। আমার কাছে কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি আপত্তিকর এ বার রেফারিরা ক্ষেত্র বিশেষে যে রকম নরম মনোভাব দেখাচ্ছে সেটা। অনেক ইন্টারসেপশন বা ট্যাকলে কোনও শাস্তিই দেওয়া হচ্ছে না। মানছি, খেলার গতি বলে একটা জিনিস আছে যেটা রেফারিদের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপে বারবার বাধা পেলে খেলাটাই ক্লান্তিকর হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এ বারের বিশ্বকাপে রবেনের ডাইভের পর মেক্সিকোকে দেওয়া পেনাল্টিটার মতো কিছু সিদ্ধান্ত চিরকালের জন্য বিতর্কিত হয়ে থেকে যাবে।