লাজং ম্যাচ জিতলে তবেই দোল খেলবেন আর্মান্দো

পাহাড় কেটে আই লিগ শৃঙ্গ-জয়ের যুদ্ধে নামার আগেই আর্মান্দো কোলাসোর রাস্তায় ধস! বৃহস্পতিবার কল্যাণীতে ইউনাইটেড স্পোর্টসকে হারিয়ে লিগ-খেতাবের স্বপ্নে বিভোর ইস্টবেঙ্গল কোচের রাতের ঘুম কেড়ে নিল বেঙ্গালুরু এফসি! তাও আবার লাজং ম্যাচ শুরুর চবিবশ ঘণ্টা আগেই।

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৭
Share:

কোচের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত চিডি।

পাহাড় কেটে আই লিগ শৃঙ্গ-জয়ের যুদ্ধে নামার আগেই আর্মান্দো কোলাসোর রাস্তায় ধস! বৃহস্পতিবার কল্যাণীতে ইউনাইটেড স্পোর্টসকে হারিয়ে লিগ-খেতাবের স্বপ্নে বিভোর ইস্টবেঙ্গল কোচের রাতের ঘুম কেড়ে নিল বেঙ্গালুরু এফসি! তাও আবার লাজং ম্যাচ শুরুর চবিবশ ঘণ্টা আগেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সাতসকালে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে আর্মান্দোকে যে ফুরফুরে মেজাজে পাওয়া গেল, তা সন্ধে গড়াতেই উধাও। আর হবে না-ই বা কেন? বেঙ্গালুরুর তিন গোলের ধাক্কায় আই লিগের চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় থেকে তো বটেই, প্রথম তিনে থাকার রাস্তাও প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ইস্টবেঙ্গলের। আই লিগ টেবিলের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বেঙ্গালুরুর থেকে চার ম্যাচ কম খেলে ১৫ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট চিডিদের। বেঙ্গালুরু ১৯ ম্যাচে ৩৭। কিন্তু ম্যাচ কম খেলার সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে কি আই লিগ জয়ের স্বপ্ন দেখা সম্ভব? ময়দানের প্রথম গোয়ান কোচের যুক্তি, “বেঙ্গালুরুর পাঁচটার মধ্যে চারটে অ্যাওয়ে ম্যাচ। সেখানে আমাদের ন’টার মধ্যে পাঁচটা হোম ম্যাচ। আই লিগ জেতার আশা নেই, সেটা এখনও বলা যাবে না।”

ইস্টবেঙ্গল কোচের যুক্তি সম্পূর্ণ ভুল, সেটা হয়তো বলা সঠিক হবে না। তবে লাল-হলুদ শিবিরে যে ভাবে চোট-আঘাতের কালো ছায়া ঘুরঘুর করছে, তাতে খুব একটা আশার আলোও তো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না! উগা ওপারা না থাকায় এমনিতেই আই লিগে এখন তিন বিদেশি ভরসা আর্মান্দোর। চোটের জন্য বাইরে চলে যাওয়া উগার পরিবর্ত হিসাবেও কাউকে পাবে না লাল-হলুদ। তার ওপর চিডি এবং সুয়োকাও পুরো ফিট নন। মেহতাব নেই। লালরিন্ডিকা, গুরবিন্দরেরও চোট। তবু লাজংকে হারানোর প্রবল ইচ্ছাশক্তি ফুটে উঠছিল অভিজিৎ-অর্ণবদের শরীরী ভাষায়। লাল-হলুদ অধিনায়ক হরমনজ্যোৎ খাবরা-ও বলছিলেন, “মহমেডানকে হারানোর পরে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আমার ধারণা, আই লিগে পরপর দু’একটা ম্যাচ জিততে পারলে আবার আই লিগের দরজা খুলে যাবে।” হরমনজ্যোৎ যখন কথাটা বলছিলেন, তখনও বেঙ্গালুরুর তিন গোলের ‘চাঁই’ রাস্তা আটকে রাখেনি ইস্টবেঙ্গলের।

Advertisement

চ্যাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন দেখতে হলে, ইস্টবেঙ্গলের জন্য এখন প্রত্যেকটা ম্যাচই মরণ-বাঁচন লড়াই। যেখানে ফুটবলারদের ফিটনেস তো বটেই, চিডি-মোগাদের মনস্তাত্ত্বিক দিক নিয়েও খাটছেন আর্মান্দো। এ দিন প্র্যাকটিস শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে গেলেন সুয়োকা। এবং চিডি বেরোলেন দু’টো ক্রাচ নিয়ে। ভয়ের কোনও কারণ নেই। ক্রাচটা ওপারার। চিডি নিয়ে গেলেন তাঁর বন্ধুর জন্যই। দলের যা বেহাল অবস্থা, তাতে শুক্রবারের প্রথম দল এখনও ঠিক করে উঠতে পারেননি আর্মান্দো। তবে অনুশীলন দেখে মনে হল মহমেডান ম্যাচে ওপারা উঠে যাওয়ার পরে যে দল খেলেছিল, সেটাই নামাবেন তিনি। লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, “অনেক দিন একসঙ্গে খেলায় লাজং ফুটবলারদের মধ্যে দারুণ একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়ে আছে। আমাদের জিততে হলে, ওদের পাসিং ফুটবলে লাগাম টানতে হবে।”

তবে লাজং-বধের স্বপ্নের মধ্যেই নতুন আনন্দে বিভোর আর্মান্দো। দোল-উৎসব। যাকে রঙিন করে তোলার ক্যানভাস ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছেন লাল-হলুদ কোচ। “শুক্রবার জিততে পারলে, রবিবার ক্লাবে এসে দোল খেলব। ফুটবলারদের নিয়ে। গোয়ায় দোলের সে ভাবে চল নেই। কিন্তু আমার অনেক বাঙালি বন্ধু আছে, যাদের নিয়ে দোলের দিন রং খেলতাম। এখানে ওরা না থাকায় ক্লাবেই রং খেলব ঠিক করেছি। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে লাজং ম্যাচের উপর,” ক্লাব ছাড়ার আগে বলে গেলেন আর্মান্দো।

শুক্রবারে আই লিগ ফুটবল

ইস্টবেঙ্গল: লাজং এফ সি (যুবভারতী ৫-০০)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন