ল্যাপটপে ‘ডন’ দেখে ইডেনে রাজ

দু’নম্বর হতেই হবে বোঝার পর ঠিক করে নিয়েছিলেন ৯২ বলে ইনিংস শেষ করে ফেলবেন। মাঠে নামার সময়ই ঠিক করে নেন, ঝাঁপিয়ে পড়া যাক। তার পর ইডেনে ইউসুফ পাঠান নামক আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠার ঘটনা তো ইতিহাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০৩:৫৫
Share:

ঝলমলে ইউসুফ। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

দু’নম্বর হতেই হবে বোঝার পর ঠিক করে নিয়েছিলেন ৯২ বলে ইনিংস শেষ করে ফেলবেন। মাঠে নামার সময়ই ঠিক করে নেন, ঝাঁপিয়ে পড়া যাক। তার পর ইডেনে ইউসুফ পাঠান নামক আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠার ঘটনা তো ইতিহাস।

Advertisement

ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে ওয়াসিম আক্রম বলেন, “অ্যায়সা ইনিংস সিরফ্ তু হি খেল সকতা হ্যায়।” তার আগে গম্ভীর অভিনন্দন জানিয়ে ঠিক এই কথাগুলোই বলেছিলেন। শনিবার রাতের ইনিংস পরবর্তী এই সবই বারবার ঝলসে উঠছে পাঠানের মনে। বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় এ সবই শোনাচ্ছিলেন ইউসুফ।

আগ্নেয়গিরির লাভাস্রোত শেষ হলে চারদিকে যেমন নিঃস্তব্ধতা নেমে আসে, রবিবার নাইট সংসার তেমনই, শুধুই নৈঃশব্দ। টিম হোটেলে সারা দিন যে যার ঘরে স্বেচ্ছাবন্দি। একজনই শুধু ব্যস্ত। তিনি ইউসুফ পাঠান। রাতে হোটেলে ফিরে সেলিব্রেশন পার্টি ও দলের অনেকে মিলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দেখে বিছানায় যেতে যেতে ভোর চারটে বেজেছে। অনেক দেরিতে বিছানা ছাড়ার পর দুপুরে শুনলেন ফ্যানদের আবদারে তাঁকে কেকেআর জার্সিতে অটোগ্রাফ বিলোতে হবে। সাফল্যের বিড়ম্বনা কম নয়।

Advertisement

লবি, কফি শপ, রেস্তোরাঁ, সর্বত্র ঘেরাও হয়ে গেলেন। আট দিন আগে দেখা হায়দরাবাদে নাইটদের নেটে প্রায় অবহেলিত ইউসুফের সঙ্গে এই ইউসুফের আকাশ-পাতাল তফাত। যুবরাজ সিংহর কথাই ঠিক, ‘যবতক বল্লা চলতা হ্যায় তো ঠাট হ্যায়...’। বিকেলে রীতিমতো ‘বিন্দাস’ ইউসুফ যখন শোনাচ্ছিলেন নানা অজানা কথা, তখন বলে না দিলে বিশ্বাস করা কঠিন যে বাইশ ঘন্টা আগে ইডেনের বাইশ গজে ডেল স্টেইনের মতো বিধ্বংসী পেসারের কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন এই মানুষটাই।

হাসতে হাসতে বললেন, “ডন একজনই, এসআরকে। আমাকে ডন বানাবেন না প্লিজ। তা হলে আমার পিছনেও পুলিশ পড়ে যাবে।” কিন্তু শনিবার সকালে ভাই ইরফানের সঙ্গে বসে শাহরুখের ডন দেখেছিলেন বলেই কি রাতে ইডেনে ফুটছিলেন? “না না, তা নয়। এমনিই সকালে গল্প করতে করতে ল্যাপটপে ডন চালু করে দিলাম। তবে শাহরুখ ভাইয়ের মতো সুপারস্টারের প্রশংসা প্রচুর প্রেরণা জোগায়। কাল রাতেও যেমন এসএমএস, ফোন পেয়েছি। বলেছেন, এখানে এসে আমাকে উপহারটা দেবেন।” শাহরুখ ছাড়াও আর এক জনের ফোনে খুশি ইউসুফ। তিনি বাবা মেহমুদ খান পাঠান। বললেন, “বাবা-মা খুব খুশি। কাল রাতে যখন বাড়ি থেকে ফোন এল, তখন ফোনের পিছনে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছিল।” তবে ছেলের খেলা দেখতে পরিবারের কেউ আসছেন না। ইউসুফ বললেন, “বাড়িতে প্রচুর আত্মীয় এসেছে। বাচ্চাদের গরমের ছুটি যে, তাই। এখন বাড়িতে রীতিমতো উৎসব। ও সব ছেড়ে কেউ আসবে না বোধহয়।”

মঙ্গলবার লড়াই ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে। সেই প্রসঙ্গ উঠতে বললেন, “ওদের ম্যাক্সওয়েল আছে তো কী? আমাদেরও গম্ভীর-উথাপ্পা, নারিন-সাকিব আছে। ওদের একজন, তো আমাদের দু’জন।” আর ইউসুফ পাঠান? “উও বাদ মে আতা হ্যায়”, সহাস্য জবাব। উল্টো দিকে তো বীরেন্দ্র সহবাগও। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান বললেন, “ওই নামটাকে খুব শ্রদ্ধা করি। বীরুর এখন ব্যাড প্যাচ চললে কী হবে, জানি ও রং দেখাবেই। তবে আমাদের বিরুদ্ধে সেই রং দেখাক, তা অবশ্যই চাই না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন