সুড়ঙ্গের মুখে সেমিফাইনালের আলো, এখন তুমিই ভরসা। ফিকরুকে কি সেটাই বোঝাচ্ছেন হাবাস? বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে। ছবি: উত্পল সরকার।
কলকাতা আসার আগে অনেক কথাই শুনেছিলাম ওঁর সম্পর্কে। শুনেছিলাম, কলকাতায় পা দেওয়ার পর আমাকে বলে দেওয়া হয়েছিল, ওর নামটা—‘প্রিন্স অব কলকাতা’। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখলাম নামের সঙ্গে ওঁর ব্যক্তিত্বের কী অদ্ভুত মিল!
সচরাচর, এক জন ক্রীড়াবিদকে সব সময় মাপা হয় গোটা সমাজের উপর সে কী প্রভাব ফেলল, তার ভিত্তিতে। আসলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আটলেটিকো দে কলকাতা পরিবারের এমন এক জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যে টিমকে একাত্ম করতে সব রকমের অভিজ্ঞতা উজাড় করে দেয়। ভারতের মতো দেশে, যেখানে প্রত্যাশার চাপ সীমাহীন, সেখানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার সুবাদে সৌরভের সুবিশাল অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে তো লাগবেই।
এক জন কোচের দায়িত্ব দলের লক্ষ্য ঠিক করে দেওয়া। সঙ্গে ফুটবলারদের খেলার ইচ্ছা যাতে হারিয়ে না যায়, সেটাও নজরে রাখা। কারণ, ফুটবলারদের পারফরম্যান্সের উপরেই তো নির্ভর করে একটা দলের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা।
ভাগ্য সহায়। তাই টুর্নামেন্টে কেভিন লোবো ও ডেঞ্জিল ফ্র্যাঙ্কো ছাড়া, আমাদের টিম সে ভাবে চোটে কাবু হয়নি। যা আমার কাছে খুবই স্বস্তির। এর পিছনে সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম সব পরিকল্পনা, সঠিক অনুশীলন, পুঙ্খানুপুঙ্খ সব নজরে রাখার সুফল রয়েছে। সঙ্গে বিশ্বমানের পেশাদার টেকনিক্যাল স্টাফেদের কাজকর্মও উপেক্ষা করা যাবে না।
সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে, আমাদের খেলা দেখে অনেকেই আটলেটিকো দে কলকাতার গায়ে ‘রক্ষণাত্মক দল’-এর তকমা সেঁটে দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে, ফুটবল খুবই সাধারণ একটা খেলা। যেখানে আক্রমণ করার সময় বল নিজের দখলে থাকে। যখন থাকে না তখন রক্ষণে নেমে আসতে হয়। সঙ্গে এটা ভুললেও চলবে না ‘রক্ষণ’ আর ‘রক্ষণাত্মক’ হওয়ার মধ্যে কিন্তু বিস্তর ফারাক।
এই মুহূর্তে, আমাদের যাবতীয় মনোযোগ মুম্বই এফসি ম্যাচ ঘিরেই। তার আগে টাইম মেশিনে দিল্লি ডায়ানামোস ম্যাচে ফিরতে হবে। ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে তৈরি হতে হবে তিন পয়েন্ট নিয়ে আসার জন্য।
গ্রুপে আর মাত্র দুটো ম্যাচ বাকি। আর প্রতিটা দলই শক্তিশালী এবং টেবলে ভাল জায়গায় থাকতে মরিয়া। দল হিসাবে মুম্বইকে সমীহ তো করতেই হবে। যদিও আমরা জানি ওদের শক্তি ঠিক কোথায়। কেউ কেউ যদিও মনে করিয়ে দিচ্ছে ওরা কয়েক জন ফুটবলারকে পাবে না, আমি কিন্তু সে দিকে মন দিতে নারাজ। ভাবছি নিজের টিমকে নিয়েই।
যতক্ষণ না অঙ্কের বিচারে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা করে নিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। আমরা প্রতিটা ম্যাচকেই আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখনও সেমিফাইনালে পৌঁছনোর জায়গা রয়েছেএটাই টুর্নামেন্টের ফর্ম্যাট। যা মেনে নিয়েই এগোতে হবে।