সমালোচনা

সেই আত্মবিশ্বাসটাও আর দেখছি না যুবির ব্যাটিংয়ে

সব কিছুই ছিল ভারতের পক্ষে। প্রস্তুতি, পিচ, হাতে থাকা উইকেট, কোহলির ফর্ম। সবই। রান-বৃষ্টির সব রকম আবহও ছিল রবিবার মিরপুরে। তা-ও ভারতের আটকে যাওয়া দেখে অদ্ভুত লাগল। আসল সময়ই পরীক্ষায় পাস করতে পারল না ভারত। সে দিন যুবরাজের ওই ইনিংসই ভারতের পরীক্ষাটা আরও কঠিন করে দেয়। জানি না কেমন মানসিক অবস্থা নিয়ে সে দিন ব্যাট করতে নেমেছিল যুবি। বাউন্সার, ওয়াইড ইয়র্কার, অ্যাঙ্গলড্ ডেলিভারি, কোনওটাই তো ব্যাটে লাগাতে পারছিল না।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৩
Share:

সব কিছুই ছিল ভারতের পক্ষে। প্রস্তুতি, পিচ, হাতে থাকা উইকেট, কোহলির ফর্ম। সবই। রান-বৃষ্টির সব রকম আবহও ছিল রবিবার মিরপুরে। তা-ও ভারতের আটকে যাওয়া দেখে অদ্ভুত লাগল। আসল সময়ই পরীক্ষায় পাস করতে পারল না ভারত।

Advertisement

সে দিন যুবরাজের ওই ইনিংসই ভারতের পরীক্ষাটা আরও কঠিন করে দেয়। জানি না কেমন মানসিক অবস্থা নিয়ে সে দিন ব্যাট করতে নেমেছিল যুবি। বাউন্সার, ওয়াইড ইয়র্কার, অ্যাঙ্গলড্ ডেলিভারি, কোনওটাই তো ব্যাটে লাগাতে পারছিল না। ফুটওয়ার্ক তেমনই। উল্টো দিকের ক্রিজে দাঁড়িয়ে বিস্ফারিত চোখে এই অভাবনীয় কাণ্ড দেখতে হচ্ছিল বিরাট কোহলিকে।

ক্রিজে নেমে ব্যাটসম্যানের মানসিক সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু তার একটা সীমা থাকবে তো। সোজা ফিল্ডারের হাতে বল পাঠানো বা ডট বল খেলা, এগুলো মাঝে মাঝে হয়। কিন্তু কোনও ব্যাটসম্যান যদি একটার পর একটা বল ব্যাটে খেলতে না পারে এবং বারবার তা কিপারের গ্লাভসে গিয়ে জমা পড়ে, তা হলে ব্যাপারটাকে আত্মবিশ্বাসের প্রচণ্ড অভাব বলাই বোধহয় ভাল। যা খুবই চিন্তার বিষয়।

Advertisement

সে দিন ওই আধ ঘণ্টায় যুবরাজ শুধু যে নিজেকে ব্যর্থতার অন্ধকারে ডুবিয়ে দিল, তা নয়, ওর ক্রিকেট কেরিয়ারের দুই জীবনরক্ষক ধোনি ও কোহলির আস্থাতেও বড় আঘাত করল। ওদের এই আস্থাই যে যুবিকে সবচেয়ে দামি আইপিএল ক্রিকেটার করে তুলেছিল। সে দিন ওর ওই ব্যাটিং দু’ভাবে ভারতের চরম ক্ষতি করল। এক, ফর্মে থাকা কোহলিকে ব্যাট করতে দিল না। দুই, শ্রীলঙ্কার বোলারদের আগের চেয়েও ভাল বল করার রাস্তা দেখিয়ে দিল। পরিসংখ্যান প্রায়ই খুব নির্দয় হয়ে ওঠে। ওই সময়ের পরিসংখ্যানও তেমনই। শেষ চার ওভারে উঠল মাত্র ১৯। অথচ তখনও আটটা উইকেট হাতে। তখনই প্রায় ঠিক হয়ে যায়, বিশ্বকাপটা কার হাতে উঠবে। এত কম রানের পুঁজি যেখানে, স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে ধোনির পছন্দ-অপছন্দের জায়গাটা খুব ছোট হয়ে যায়। জাডেজাতেও যেমন ও আস্থা রাখতে পারছিল না, তেমনই ডেথ ওভারে মিডিয়াম পেসারদের আনতেও বেশ দ্বিধা করতে দেখলাম ভারত অধিনায়ককে। ওর দুই ট্রাম্প কার্ড অশ্বিন ও মিশ্র তো শেষ ওভারে ১৫টা করে রানই দিয়ে বসল।

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বলি, কোহলির কাছ থেকে ওর সতীর্থদের অনেক কিছু শেখার আছে। রোহিতের ওর খিদেটা নেওয়া উচিত। রাহানের প্রয়োজন ওর মতো মনঃসংযোগ ক্ষমতা। ধবনের চাই অস্বস্তিকর বলের বিরুদ্ধে যথাযথ ফুটওয়ার্ক। আর প্রতিকূল উইকেটে আরও সাহসী হতে হবে মিশ্রকে। বাঁ-হাতিদের বিরুদ্ধে জাডেজার আরও ভাল বল করা উচিত।

এর আগে যুবরাজ একাধিক ক্যাচ মিস করেছে। সারা টুর্নামেন্টে মাত্র একটা ওভার বল করেছে। কিন্তু এ বার ব্যাট হাতে ও যা করল, তার পর ভেবে অবাক হচ্ছি, সপ্তাহদুয়েকের মধ্যেই দেশের এক আইকনিক অলরাউন্ডারের ক্রিকেট ভাগ্যের চাকাটা প্রায় থেমেই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন