পেসারদের জন্যই লর্ডসে ২৮ বছর পর টেস্ট জয় ভারতের। তা সত্ত্বেও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অশ্বিনকে দলের বাইরে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্তে সায় নেই প্রাক্তন পাকিস্তানি অফ স্পিনার সাকলিন মুস্তাকের। তাঁর বক্তব্য, অশ্বিনের চেয়ে রবীন্দ্র জাডেজাকে বেশি পছন্দ করেন ধোনি। তাই এমন বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দুসরায় বিশেষজ্ঞ এই প্রাক্তন পাক স্পিনারের অশ্বিনকে খেলানোর যুক্তি, “ইংল্যান্ডের ছ’জন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রয়েছে। তা সত্ত্বেও অশ্বিন প্যাভিলিয়নে বসে থাকবে! ওদের বিরুদ্ধে অশ্বিন নামেনি ভেবেই অবাক হচ্ছি আমি। লর্ডসে না হোক প্রথম টেস্টে তো অবশ্য অশ্বিনকে খেলানো উচিত ছিল। ট্রেন্টব্রিজে তো একেবারে বাউন্সহীন, পাটা উইকেট ছিল।”
ডিসেম্বরে জোহানেসবার্গে টেস্ট খেলার পর আর ভারতের হয়ে সাদা পোশাকে নামা হয়নি অশ্বিনের। সেই টেস্টে তামিল স্পিনার দু’ইনিংসেই উইকেটহীন থাকায় জাডেজা দলে ঢোকেন ও ডারবান টেস্টে কেরিয়ার সেরা ৬-১৩৮ বোলিং করে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফরের দলে জায়গা পাকা করে নেন। ইংল্যান্ডের পরিবেশে দুই স্পিনার খেলানোটাই রীতি বলে জানান বেশ কয়েক বছর ধরে কাউন্টি ক্রিকেটে যুক্ত সাকলিন। বলেন, “আমার কাউন্টির অভিজ্ঞতা বলছে, এই পরিবেশে সবসময় দুই স্পিনারে নামা উচিত। যুক্তিটা খুব সহজ। সবুজ উইকেটে পেসাররা প্রথম দু’দিন সাহায্য পায়। তার পর থেকে কিন্তু পিচ শুকিয়ে যায় ও স্পিন ধরতে শুরু করে। দলে দু’জন স্পিনার থাকলে তাদের সমানে বল করিয়ে যাওয়াই উচিত।”
অশ্বিন আর জাডেজার তুলনা করতে গিয়ে সাকলিন বলেন, “জাডেজা ব্যাট করতে পারে ঠিকই, কিন্তু অশ্বিনের দুটো টেস্ট সেঞ্চুরি আছে। তাই পিচের অবস্থা দেখে পাঁচ বোলারে নামতে হলে দু’জন স্পিনার খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়াই উচিত।” ইংল্যান্ডও যে একজন স্পিনার কম নিয়েই খেলছে, তা জানিয়ে সাকলিন বলেন, “প্রথম দুই টেস্টে গ্রেম সোয়ানের অভাব প্রতি মুহূর্তে বুঝতে পেরেছে ইংল্যান্ড। ব্রড, অ্যান্ডারসনদের সাপোর্ট দেওয়ার মতো বোলার নেই। মইন আলি লর্ডসের উইকেটে দুর্দান্ত বোলিং করেছে। কারণ, ওখানকার উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু ছিল। কিন্তু ট্রেন্ট ব্রিজের মতো পাটা উইকেটে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে সমস্যায় পড়তে হবে ওকে।”
আট বছরে ছ’টি ভারত-পাক সিরিজ আসন্ন। এই নিয়ে প্রাক্তন পাক স্পিনার বলছেন, “ক্রিকেটই ভারত, পাকিস্তানকে কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারে। তাই দু’দেশের সম্পর্কের জন্য এর চেয়ে ভাল খবর আর হয়? দু’দেশের সংস্কৃতি, স্বভাব, খাবার যখন একই, তখন রাজনৈতিক মতভেদের জন্য খেলাটার ক্ষতি হবে কেন?” তবে আইপিএলে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের না খেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাকলিন। তাঁর বক্তব্য, “সবই যখন হচ্ছে, তখন আইপিএলে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের খেলতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? প্রথম বছর তো ভালই খেলেছিল ওরা। পাকিস্তানের আম্পায়ার, ধারাভাষ্যকার, কোচদের যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তা হলে ক্রিকেটার নয় কেন? আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিরা একটু সাহস দেখিয়ে পাক খেলোয়াড়দের আনুক।”