সুনীলদের উপর চাপ বাড়িয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল

বিরতিতে টিভিতে ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, “বেঙ্গালুরুতে বোধহয় আই লিগ জয়ের সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে।” বালেওয়াড়ি স্টেডিয়ামে তখন অ্যান্টনি ডি’সুজার গোলে পিছিয়ে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ শেষে কিন্তু সুনীল ছেত্রীদের চ্যাম্পিয়ন হওয়া পিছিয়ে দিল কলকাতার দল। বরং চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে পুণে এফসিকে হারিয়ে কিছুটা হলেও ভেসে রইল আর্মান্দো কোলাসোর দল। মাইক স্নোয়ির পুণে এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েও জয় ছিনিয়ে আনলেন চিডি, লেনরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৭
Share:

অভিনন্দন। চিডির পাশে লাল-হলুদ কোচ।

পুণে এফসি-১ (অ্যান্টনি)

Advertisement

ইস্টবেঙ্গল-২ (চিডি, লেন)

বিরতিতে টিভিতে ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, “বেঙ্গালুরুতে বোধহয় আই লিগ জয়ের সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে।” বালেওয়াড়ি স্টেডিয়ামে তখন অ্যান্টনি ডি’সুজার গোলে পিছিয়ে ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

ম্যাচ শেষে কিন্তু সুনীল ছেত্রীদের চ্যাম্পিয়ন হওয়া পিছিয়ে দিল কলকাতার দল। বরং চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে পুণে এফসিকে হারিয়ে কিছুটা হলেও ভেসে রইল আর্মান্দো কোলাসোর দল। মাইক স্নোয়ির পুণে এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েও জয় ছিনিয়ে আনলেন চিডি, লেনরা।

পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী ভারতীয় ফুটবলের লাকি কোচ আর্মান্দো কোলাসো ম্যাচ শেষে পুণে থেকে ফোনে বললেন, “আরও একটা কঠিন ম্যাচ জিতে ফিরলাম। বেঙ্গালুরু কিছুটা হলেও চাপে থাকবে। আমরা শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করে যাব।”

চব্বিশ ঘণ্টা আগেও যে চিডি কাঁধের ব্যথায় কাবু ছিলেন সেই চিডিকেই এ দিন ঝুঁকি নিয়ে নামিয়েছিলেন আর্মান্দো। ইস্টবেঙ্গলের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার গোল করে পরিচয় দিলেন তাঁর দায়বদ্ধতার।

লাল-হলুদ কোচ বলছিলেন, “শুক্রবার প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত আমি আর রঞ্জন (সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী) মিলে ওকে বুঝিয়েছিলাম। ওর কাঁধ ফুলে থাকায় যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। কিন্তু সকালে ও নিজেই এসে বলে খেলব।” চিডির গোলের পর দলের সঙ্গে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজার মণীশ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বললেন, “যে ভাবে কাঁধের যন্ত্রণা নিয়ে চিডি আজ গোল করল তার জন্য ওকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।”

মাঝমাঠে খাবরার জায়গায় আর্মান্দো এ দিন নামিয়েছিলেন সুবোধ কুমারকে। টিএফএ-র প্রাক্তনী এই ঝাড়খণ্ডী মিডফিল্ডার তাঁর দায়িত্বে পুরোপুরি সফল। পুণের রিগা মুস্তাফা, ক্যালাম অ্যাঙ্গাসদের বিরুদ্ধে লড়লেন চোখে চোখ রেখে। শুধু তাই নয়, প্রথমার্ধের মাঝামাঝি তাঁর শট পোস্টে লেগে না ফিরলে ব্যবধান বাড়তে পারত ইস্টবেঙ্গলের।

শুরুতে সুয়োকা, চিডিরা সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। বরং নওবার ভুলের সুযোগ নিয়ে প্রতি-আক্রমণে পুণেকে এগিয়ে দিয়েছিলেন অ্যান্টনি।

মাইক স্নোয়ির দলকে দ্বিতীয়ার্ধে সেই প্রতি-আক্রমণ দিয়েই বিঁধলেন আর্মান্দো। তুলুঙ্গার জায়গায় লেনকে নামিয়ে আক্রমণাত্মক ৪-৩-৩ ছকে চলে যান তিনি। আর লেন মাঠে আসতেই চনমনে হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। যে চাল ধরতে পারেননি স্নোয়ি। এই সুযোগে সচল হয়ে ওঠেন সুয়োকাও। ইস্টবেঙ্গলের দুটো গোলের পিছনেই এই জাপানির মস্তিষ্ক। প্রথম গোলের ক্ষেত্রে লোবোর সঙ্গে ওয়াল খেলে যে বল পুণে বক্সে রেখেছিলেন তা থেকে চিডির গোল। দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রেও সুয়োকার ক্রস থেকেই হেডে গোল করে যান লেন।

ম্যাচ শেষে সুয়োকা বলছিলেন, “এ বার প্রার্থনা করব যেন বেঙ্গালুরু দুটো ম্যাচ জিততে না পারে।” এই ম্যাচ জিতে ২৩ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট হল লাল-হলুদের। লিগ তালিকায় এখন তাঁরা দ্বিতীয়। আগামী সপ্তাহের শেষে সেকেন্ড বয় কি বেঙ্গালুরুর ফার্স্ট বয়কে সরিয়ে লিগ আই লিগ জয়ের তাজ মাথায় পরতে পারবে? শুনে হাসছেন লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান গোলদাতা। বললেন, “সোমবার বেঙ্গালুরু-ডেম্পো ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে থাকব। গোয়ায় গিয়ে ডেম্পোকে হারানো কিন্তু সহজ নয়। না হলে এই গোলের দাম থাকবে না সমর্থকদের কাছে।”

আশায় রয়েছেন চিডি। সঙ্গে হাজার হাজার লাল-হলুদ হৃদয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন