মেসিকে ম্লান করে ফুটবল গ্রহের একচ্ছত্র সম্রাট

স্বপ্ন বুনছি, নিজের দেশে ট্রফি জিতছি

জালে বল জড়িয়েই সাইড লাইন ঘেঁষে দৌড়-দৌড়! পরক্ষণেই নাচের তালে তালে ডান হাতের পাঁচ আঙুল তিন বার মুখের সামনে এনে টুর্নামেন্টের ১৫ নম্বর গোলের সেলিব্রেশন। অনেকটা পপ তারকা বিয়ন্সে-র বিখ্যাত নাচের অনুকরণে। যা সঙ্গে সঙ্গে সুপার হিট ফুটবলপ্রেমী টুইপিল-দের অগুনতি পোস্টিংয়ে। মিউনিখের মায়াবী রাতে অনবদ্য ফ্রি কিকে বায়ার্নের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়ার পর মাঠে তাঁকে ঘিরে তখন মহোৎসব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী লিও মেসিকেও ম্লান করে দিয়েছেন তিনি। প্রমাণ করে দিয়েছেন ফুটবল বিশ্বের এক নম্বর তারা তিনিই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০৫:০৮
Share:

জালে বল জড়িয়েই সাইড লাইন ঘেঁষে দৌড়-দৌড়! পরক্ষণেই নাচের তালে তালে ডান হাতের পাঁচ আঙুল তিন বার মুখের সামনে এনে টুর্নামেন্টের ১৫ নম্বর গোলের সেলিব্রেশন। অনেকটা পপ তারকা বিয়ন্সে-র বিখ্যাত নাচের অনুকরণে। যা সঙ্গে সঙ্গে সুপার হিট ফুটবলপ্রেমী টুইপিল-দের অগুনতি পোস্টিংয়ে। মিউনিখের মায়াবী রাতে অনবদ্য ফ্রি কিকে বায়ার্নের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়ার পর মাঠে তাঁকে ঘিরে তখন মহোৎসব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী লিও মেসিকেও ম্লান করে দিয়েছেন তিনি। প্রমাণ করে দিয়েছেন ফুটবল বিশ্বের এক নম্বর তারা তিনিই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

Advertisement

ব্যালন ডি’অরের সোনার বল জেতাটা যেন সিআর সেভেনের কেরিয়ারেও সোনা ছড়িয়ে দিয়েছে। যেখানেই হাত দিচ্ছেন সোনা ফলছে। মঙ্গল-রাতে মিউনিখে ‘মিশন অ্যাকম্প্লিশড’ হওয়ার পর রোনাল্ডো বলে দিয়েছেন, “রেকর্ড ভাঙার ব্যাপারটা মাথায় ছিল। জানতাম আর একটা গোল চাই। তবে রেকর্ডটা না হলেও দুঃখে পাগল হয়ে যেতাম না।” তার পর আবার বলেছেন, “চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক মরসুমে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড ভাঙতে পেরে অবশ্য দারুণ আনন্দ হচ্ছে। তবে আমার আসল লক্ষ্য হল ট্রফিটা জেতা। সেটার থেকে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে আছি ভেবে খুব উত্তেজিত লাগছে।”

রোনাল্ডোর অবিশ্বাস্য গোল। সবিস্তার...

Advertisement

চূড়ান্ত লড়াইয়ে সামনে যে টিমই পড়ুক সিআর সেভেন সবচেয়ে বেশি খুশি নিজের দেশে ফাইনালে নামার সুযোগ পেয়ে। “বেশ কিছু দিন ধরে আমরা সেমিফাইনালে হেরে যাচ্ছিলাম। তিন-চার বছর হবে হয়তো। তবে এ বার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, যোগ্য দল হিসেবেই আমরা ফাইনালে উঠেছি। তবে আমাদের পা মাটিতেই রয়েছে। ফাইনাল সব সময়ই অন্য রকম ম্যাচ। তবে ম্যাচটা আমার দেশে হবে। আর আমি নিজের দেশে খেতাবটা জিততে চাই।”

রোনাল্ডো এ রকমই। গত সপ্তাহে স্পেনে স্পনসরের এক অনুষ্ঠানে মাইক ধরতে বলা হলে অবলীলায় ভাল ইংরেজিতে বলা সত্ত্বেও যিনি সঙ্গে বলে দিতে পারেন, “আপনারা নিশ্চয়ই বুঝবেন, আমি পর্তুগালের লোক তাই এই প্রশ্নোত্তর পর্বটা পর্তুগিজেই করব।” যেটা মনে করেন সেটা করেই ছাড়েন। বায়ার্নের ঘরের মাঠেও যার অন্যথা হয়নি। মঙ্গলবারই জোড়া গোলে যেমন রোনাল্ডো (১৬ গোল) মেসির এক মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৪ গোলের রেকর্ড ভাঙলেন। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকাতেও মেসিকে ধরে ফেললেন পর্তুগিজ মহাতারকা। দু’জনেরই এখন মোট গোল সংখ্যা ৬৭। সামনে শীর্ষে শুধু রাউল (৭১)। শুধু তা-ই নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বেও ৫১ গোল করে রেকর্ড গড়লেন রোনাল্ডো।

মেসির মতো দুর্ধর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী এ মরসুমে ৪৩ ম্যাচে ৪০ গোল করেও রোনাল্ডোর দুরন্ত দৌড়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছেন না। রোনাল্ডোর এগিয়ে যাওয়ার গতি বেড়েই চলেছে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানেও যেটা স্পষ্ট। সব মিলিয়ে রোনাল্ডোর ৫৬৬ ম্যাচে ৩৭৩ গোল। মেসির সেখানে ৪৫৪ ম্যাচে ৩৬৪।

সিআর সেভেনের উৎসবে বাদ যাননি প্রাক্তন সতীর্থরাও। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন অধিনায়ক রয় কিন-কে মিউনিখে দেখে ম্যাচের পর জড়িয়ে ধরেন রোনাল্ডো। উচ্ছ্বসিত কিন বলেই ফেলেন, “এত প্রতিভাবান রোনাল্ডো যে, রিয়ালের ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডও ওর জন্য সস্তা মনে হয়।” কিন্তু সিআর সেভেনের বোধহয় এখন আর প্রশংসা বা নিন্দে কিছুই মাথায় নেই। লক্ষ্য একটাই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব। সমর্থকদের কথা দিয়েছেন, ‘‘এ বার কাপটা জিততে ব্যর্থ হব না।” বুধবার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, “একটা স্বপ্ন বুনছি। লিসবন, আমরা আসছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন