দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে মাঝের দশ থেকে পনেরো ওভার এবং পাওয়ার প্লে-র পাঁচ ওভার এই সময়ে যদি ডেভিড মিলার ও এবি ডে’ভিলিয়ার্স ক্রিজে একসঙ্গে ব্যাট করতে নামে, তা হলে যে সেটা ভারতীয় বোলারদের সবচেয়ে কঠিন সময়, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই ১৫-২০ ওভারেই ম্যাচ বিপক্ষের হাত থেকে বের করে নিতে পারে এই দুই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।
ওদের বিরুদ্ধে বোলারদের একটু অসাবধান হওয়া মানেই ম্যাচটা গেল। অসাবধান হওয়া তো যাবেই না, বরং একেবারে সঠিক পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী নিখুঁত বোলিং করতে হবে। কারণ, মিলার-ডে’ভিলিয়ার্সকে ক্রিজে দাঁড়াতে দেওয়া মানেই নিজেদের উপর চাপ বাড়ানো।
সবার আগে যেটা দরকার, তা হল বোলিংয়ে বৈচিত্র। ডে’ভিলিয়ার্সের সবচেয়ে বড় গুণ হল ও বোলারদের খুব ভাল ‘রিড’ করতে পারে এবং সেই অনুযায়ীই ব্যাটিং করে। আর মাঠের যে কোনও সাইডেই শট খেলতে পারে। সে জন্যই ওকে ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান বলা হয়। যে কোনও জায়গায় বল পাঠাতে ওস্তাদ। আর হেন কোনও শট নেই যা ওর ব্যাটে নেই। বরং মিলারের অন সাইডে খেলার প্রবণতা বেশি। মিড অন, মিড উইকেট, স্কোয়ার লেগ এই আর্কটায় শট নিতে বেশি পছন্দ করে। তাই মিলারের বিরুদ্ধে কখনও মিডল বা লেগ স্টাম্পে বল করা যাবে না। ওকে সব সময় অফ স্টাম্পের বাইরে খেলানোই ভাল।
দু’জনেই স্কোরবোর্ড চালু রাখতে খুব ভালবাসে। ডট বল একদম পছন্দ নয় ওদের। তাই ওরা যদি বড় শট খেলতে নাও পারে, তা হলে খুচরো রান বাড়ায়। এমনিতেই এমসিজি বিশাল মাঠ। ওদের নিখুঁত লাইন ও লেংথে বল করতে পারলে বড় শট আটকানো যেতে পারে। আর সার্কেলের ভিতর পাঁচ ফিল্ডার রাখার নিয়মটা কাজে লাগাতে হবে। সার্কেলে ভাল ফিল্ডিং করে ওদের খুচরো রানও আটকে দিতে পারলে দমবন্ধ করে দেওয়া সম্ভব। আর তখনই এবি বা মিলার ভুল করতে পারে।
মহম্মদ শামিকে বল করতে হবে শর্ট অব লেংথে, শরীর লক্ষ্য করে। মিলারকে ফোর্থ স্টাম্পের উপর। যাতে ওরা বড় শট খেলার জায়গা না পায়। অশ্বিন যেমন গত ম্যাচে করেছে, মূলত অফ স্পিনটা করে মাঝে মাঝে ক্যারম বল, সেটাই করে যাক। মোহিত শর্মার বলে এখন সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র। ওর স্লোয়ারগুলো বেশ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে। তবে রবীন্দ্র জাডেজার উইকেট টু উইকেট বল করার ঝোঁক বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ও বরং বলের পেস যতটা সম্ভব কমাক। আর উমেশের এই ম্যাচের আগে শার্প ইয়র্কার নিয়ে বেশি কাজ করা উচিত। নিখুঁত ইয়র্কারের এখনও কোনও বিকল্প নেই।