ছবি এএফপি
ওয়াহাব রিয়াজের ক্যাচ কুমার সঙ্গকারার তালুবন্দি হতেই উৎসব শুরু হয়ে গেল সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব স্টেডিয়ামে।
আতসবাজির রোশনাইয়ে দর্শকদের সেলিব্রেশনের পারদ ততক্ষণে আরও কয়েকগুন চড়ে গিয়েছে। সতীর্থরা কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিদায়ী নায়ককে। যাঁর অবসরের মুহুর্ত উজ্জ্বল করে রাখতে সোমবার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ১০৫ রানে জিতে ২-০ সিরিজ জয়ের উপহার নিশ্চিত করে ফেলেন রঙ্গনা হেরাথরা। বাঁ-হাতি স্পিনার হেরাথ দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট সমেত সিরিজে ২৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে দু’টেস্টের সিরিজে মুরলীধরনের সর্বাধিক ২২ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডও ভেঙে দিলেন, জয়বর্ধনের বিদায়ী টেস্টের অন্তিম লগ্নে।
গোটা মাঠ কখনও কাঁধে চড়ে, কখনও হেঁটে অভিবাদন নিচ্ছিলেন তিনি-- মাহেলা জয়বর্ধনে। দর্শকাসনে তখন তাঁর পরিবার, প্রাক্তন সতীর্থদের সঙ্গে হাজির শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে-ও।
চেয়েছিলেন প্রায় দু’দশকের টেস্ট কেরিয়ারের শেষটাও এসএসসি-তেই হোক। সেটাই হওয়ার মুহূর্তে জয়বর্ধনে বলে দিলেন, “জানি না কী বলব, তবে কথা দিচ্ছি চোখের জল ফেলব না। যাঁরা আমাকে এই জায়গায় আসতে সাহায্য করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ।” সঙ্গে সতীর্থ, বিপক্ষ, স্কুল, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট, প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দেওয়ার পর সমর্থকদের উদ্দেশে মাহেলা বলেন, “এত বছর ধরে আমার পাশে থেকেছেন। লাভ ইউ অল। এখনও আমার মধ্যে কিছুটা ক্রিকেট বাকি রয়েছে। কথা দিচ্ছি বিশ্বকাপে সবটুকু উজাড় করে দেব।” এ বার তাঁর বিখ্যাত জুড়িদার সঙ্গার উদ্দেশে, “আমার মনে হয় এখনও তোমার মধ্যে ক্রিকেট বাকি রয়েছে।” আর সবশেষে, “শ্রীলঙ্কার ক্যাপটা পড়ার সময় গর্ব আর আবেগটা চিরকাল ছিল, থাকবে।”
শুরু হল দ্বিতীয় দফার আতসবাজির হরেক রঙের ঝলক। বললেন বটে, কিন্তু শেষের দিকে আবেগে গলার আওয়াজ ভাঙাটা ঠেকাতে পারলেন না শ্রীলঙ্কার সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার।
এক নজরে জয়বর্ধনে
• টেস্ট ১৪৯, রান ১১৮১৪, সর্বোচ্চ ৩৭৪, গড় ৪৯.৮৪, সেঞ্চুরি ৩৪, হাফসেঞ্চুরি ৫০
• টেস্ট আর ওয়ান ডে-তে এগারো হাজারেরও বেশি রান করা বিশ্বের পাঁচ ব্যাটসম্যানের অন্যতম। বাকি চারসচিন, পন্টিং, কালিস ও সঙ্গকারা।
• সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব স্টেডিয়ামে ২৭ টেস্টে ২৯২১ রান। বিশ্বের আর কোনও ব্যাটসম্যানের নির্দিষ্ট একটি স্টেডিয়ামে এত রানের নজির নেই।
• ৩৭৪ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২০০৬-এ কলম্বোয় সঙ্গকারার সঙ্গে ৬২৪ রানের পার্টনারশিপের বিশ্বরেকর্ড।