সঙ্গা কিংবদন্তি, কিন্তু বোলিং দুর্বলতা কত ঢাকবে

বিদেশের মাটিতে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে প্রথম চার ম্যাচে দু-দুটো সেঞ্চুরি। তার মধ্যে এই রবিবারেরটা রান তাড়া করতে নেমে, ইংল্যান্ডের মতো টিমের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭৬ বলে ১০৫-এর পর আজ ৮৬ বলে ১১৭ নট আউট। শুনছিলাম এটাই ওয়ান ডে-তে কুমার সঙ্গকারার দ্রুততম সেঞ্চুরি। ও কত বড় মাপের ক্রিকেটার, বুঝতে পারছেন? এ বারের বিশ্বকাপের পর নাকি সঙ্গকারা অবসর নেবে। মানে এটা ওর জীবনের শেষ টুর্নামেন্ট। আর সেখানেও কি না নতুন রেকর্ড তৈরি করে যাচ্ছে!

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০২:১৩
Share:

দুই নায়ক। জোড়া শতরান করে দলকে জেতানোর পর থিরিমন্নে ও সঙ্গাকারা। ছবি: রয়টার্স।

বিদেশের মাটিতে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে প্রথম চার ম্যাচে দু-দুটো সেঞ্চুরি। তার মধ্যে এই রবিবারেরটা রান তাড়া করতে নেমে, ইংল্যান্ডের মতো টিমের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭৬ বলে ১০৫-এর পর আজ ৮৬ বলে ১১৭ নট আউট। শুনছিলাম এটাই ওয়ান ডে-তে কুমার সঙ্গকারার দ্রুততম সেঞ্চুরি। ও কত বড় মাপের ক্রিকেটার, বুঝতে পারছেন? এ বারের বিশ্বকাপের পর নাকি সঙ্গকারা অবসর নেবে। মানে এটা ওর জীবনের শেষ টুর্নামেন্ট। আর সেখানেও কি না নতুন রেকর্ড তৈরি করে যাচ্ছে!

Advertisement

ছেলেটা যদি ভারতে জন্ম নিত, তা হলে নির্ঘাত এত দিনে কিংবদন্তির স্টেটাস পেয়ে যেত। বলতে খারাপই লাগছে, শ্রীলঙ্কাকে আমরা অতটাও পাত্তা দিই না। তাই আমাদের মতো ক্রিকেট-পাগল দেশেও সঙ্গকারা নিয়ে খুব বেশি শব্দ খরচ হয় না। কিন্তু ওর গ্রেটনেস অগ্রাহ্য করা অসম্ভব। যখনই টিমের দরকার হয়েছে, তখনই নেমে রান করে দিয়েছে সঙ্গা। টেকনিক্যালি নিখুঁত, আবার দ্রুত রান তোলায় টি-টোয়েন্টি প্রজন্মকেও ভাল লড়াই দিতে পারে। এই তো রবিবারের কথাই ধরুন। লাহিরু থিরিমন্নে যখন নব্বইয়ের ঘরে, সঙ্গা তখন ২৮। সিঙ্গল নিয়ে থিরিমন্নে যখন সেঞ্চুরিতে পৌঁছল, ততক্ষণে ও ৭৮ ব্যাটিং!

এই শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং একদম ঠিক সময় ‘পিক’ করছে। সঙ্গা, মাহেলা জয়বর্ধনে রানের মধ্যে আছে। বোলিংয়ে কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরছে লাসিথ মালিঙ্গা। তবে এটাও বলব, এই বোলিংটা কিন্তু শ্রীলঙ্কাকে সমস্যায় ফেলবে। ভারত যদি কোনও ভাবে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়, তা হলে কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার সামনে পড়তে পারে। সেটার সম্ভাবনা অবশ্য এখন পর্যন্ত কম। কিন্তু তাও যদি হয়, তা হলেও ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের আশঙ্কার কোনও কারণ আমি অন্তত দেখছি না।

Advertisement

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

শ্রীলঙ্কা যত ভাল টিমই হোক না কেন, ওদের সঙ্গে লড়ার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস টিম ইন্ডিয়ার আছে। আরে, আমরা তো বছরের বেশির ভাগ সময়টাই ওদের বিরুদ্ধে খেলছি। শ্রীলঙ্কা টিমটার শক্তি-দুর্বলতা বোধহয় ওদের চেয়েও আমরা বেশি ভাল জানি! আর ভারত ওদের এত বেশি বার হারিয়েছে, তাই মানসিক একটা সুবিধেও আছে।

তা ছাড়া ওরা পিক করলেও শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং সঙ্গা-মাহেলার উপর বড্ড বেশি নির্ভরশীল। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজের ব্যাটে ধারাবাহিকতা নেই। আগেই বলেছি, ওদের বোলিংটাও খুব শক্তিশালী নয়। ইংল্যান্ডও তো এ দিন তিনশো তুলে দিল। ভারতীয় ব্যাটিংকে থামানোর ক্ষমতা এই ব্যাটিংয়ের নেই।

খারাপ লাগছে ইংল্যান্ডের অবস্থা দেখে। টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, ততই যেন নতুন-নতুন লজ্জার রেকর্ড গড়ে চলেছে ইয়ন মর্গ্যানরা। টিমটা ওয়ান ডে খেলছে টেস্ট ক্রিকেটের মতো। চারটে ম্যাচ খেলে ফেলল ইংল্যান্ড, অথচ একটা দিনও দেখলাম না ওদের বোলিং আর ব্যাটিংকে একসঙ্গে ক্লিক করতে। ফেভারিট তো দূরের কথা, এই টিমটা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও আশ্চর্য হব।

আর যদি ওঠেও, তা হলে ভারতের সামনে মর্গ্যানদেরই হয়তো পড়তে হবে। সেটা হলে, আমার বাজি কারা হবে, তা নিশ্চয়ই বলতে হবে না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ইংল্যান্ড ৩০৯-৬ (রুট ১২১)।

শ্রীলঙ্কা ৪৭.১ ওভারে ৩১২-১ (থিরিমন্নে ন.আ.১৩৯, সঙ্গাকারা ন.আ. ১১৭)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন