কলকাতা তাঁর দিকেও থাকবে, আশা মর্গ্যানের

‘সচিন বলে দিয়েছে এটা স্প্রিন্ট নয়, ম্যারাথন’

গুপ্তচরের বদলা কি সিক্রেট সার্ভিস? শুক্রবারের বিকেলে রাজারহাটে টিম হোটেলের লবিতে এই প্রশ্ন শুনে হেসেই আকুল কেরল ব্লাস্টার্স কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। গুয়াহাটিতে নর্থইস্টের বিরুদ্ধে তাঁর দলের ম্যাচ দেখে এসেছিলেন আটলেটিকো দে কলকাতার সহকারী কোচ হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। যে রিপোর্ট আপাতত কেভিন লোবোদের কোচের ফাইলে। এ দিন দুপুরে তাঁর পাল্টা দিলেন সাবিথ-ইসফাকদের সাহেব কোচ। ৫১৯ দিন পর রবিবার ফের দল নিয়ে নামবেন যুবভারতীতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১১
Share:

টিম হোটেলে রঞ্জন-মেহতাবদের সঙ্গে সেই পুরনো আড্ডা।

গুপ্তচরের বদলা কি সিক্রেট সার্ভিস?

Advertisement

শুক্রবারের বিকেলে রাজারহাটে টিম হোটেলের লবিতে এই প্রশ্ন শুনে হেসেই আকুল কেরল ব্লাস্টার্স কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান।

গুয়াহাটিতে নর্থইস্টের বিরুদ্ধে তাঁর দলের ম্যাচ দেখে এসেছিলেন আটলেটিকো দে কলকাতার সহকারী কোচ হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। যে রিপোর্ট আপাতত কেভিন লোবোদের কোচের ফাইলে।

Advertisement

এ দিন দুপুরে তাঁর পাল্টা দিলেন সাবিথ-ইসফাকদের সাহেব কোচ। ৫১৯ দিন পর রবিবার ফের দল নিয়ে নামবেন যুবভারতীতে। শেষ বার এই মাঠে কোচের ড্রেস পরে ইস্টবেঙ্গল রিজার্ভ বেঞ্চে বসেছিলেন এক বছর আগের ২৩ মে। কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ৩-২ হারিয়ে ৩৪ তম খেতাবটি (টানা তিন বার) দিয়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদকে।

সেই দলের ফুটবলার, সহকারী কোচ, বিশ্বস্ত বন্ধুদের নিয়েই কি এ দিন দুপুরে লোবো-ফিকরুদের বোতলবন্দি করার পরিকল্পনা সারলেন টিজেএম?

দুপুর আড়াইটা। টিম হোটেলে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন লাল-হলুদে মর্গ্যানের অন্যতম বিশ্বস্ত বন্ধু সল্টলেক নিবাসী এক ইস্টবেঙ্গল সদস্য। লবিতে ঘুরছিলেন মেহতাব হোসেন। দু’জনকে নিয়েই মর্গ্যান চলে গেলেন কফি শপে। ঠিক তাঁর দশ মিনিট পরেই যিনি এলেন, তিনি লাল-হলুদে মর্গ্যানের এক সময়ের সহকারী রঞ্জন চৌধুরী। লবিতে সাংবাদিক দেখে তিনিও চলে গেলেন কফি শপে।

মিনিট তিরিশ পরে চার জনই যখন বেরিয়ে এলেন তখন সকলের মুখে হাইভোল্টেজ হাসি। কী কথা হল?

মেহতাব: বহু দিন পর সকলে মিলে একটা গেট টুগেদার...।

সল্টলেক নিবাসী ইস্টবেঙ্গল সদস্য: একদম ঠিক বলছে।

রঞ্জন: আড্ডা আর কী? সঙ্গে একটু ফুটবল নিয়ে কথাবার্তা।

মর্গ্যান: এই শহর নিয়েই আড্ডা দিলাম। এখানকার জিভে জল আনা ইলিশ-চিংড়ি-কাঁকড়ার প্রিপারেশন, সল্টলেক, সিটি সেন্টার, ময়দান নিয়ে গল্প হল।

আর ফুটবল? যেটা রঞ্জন বলছিলেন? মর্গ্যান যেন শুনেও শুনলেন না। মেহতাবকে নিয়ে সোজা ছুটলেন সিটি সেন্টারে পরিচিত স্পা-এ।

মর্গ্যান বা তাঁর সঙ্গীরা আড্ডার ব্যাপারে বিশদে বলতে না চাইলেও, হোটেলে তাঁদের আশপাশের অতিথিদের সূত্রে খবর, তিরিশ মিনিটের আড্ডায় রবিবারের ম্যাচ নিয়ে বেশ জমাটি বিশ্লেষণ হয়েছে। যার পর হুঙ্কারের কমতি নেই। মাইকেল চোপড়া বলছেন, “লোবো কি একা খেলবে?” আর গুরবিন্দর বলছেন, “মাঠে আসুক, দেখে নেব।”


সকালে সাই-এর মাঠে বরিসিচ, মাইকেল চোপড়াদের সঙ্গে মর্গ্যানের ওয়ার্ম আপ।

কলকাতায় পা দিয়েই মেহতাবের সঙ্গে ছুটেছিলেন দক্ষিণ শহরতলিতে। এ দিন সকালে সাই মাঠে অনুশীলনের পর সন্ধেয় সেই মেহতাবের সঙ্গে নস্ট্যালজিয়া ঘেরা সিটি সেন্টার থেকে চুল কাটিয়ে, কফি খেয়ে যখন ফিরলেন তখন ধরা গেল কেরল কোচকে।

আইএসএলে দু’ম্যাচ পরেও জয়লক্ষ্মী দেখা দেয়নি পেন ওর্জির দলে। লিগ টেবলের লাস্ট বয় কেরল এ বার ফার্স্ট বয় আটলেটিকোর সামনে। সচিন তেন্ডুলকরের মতো সফল ক্রিকেটার মাথার উপর, চাপে? শুনে হাসছেন মর্গ্যান। “সচিন নিজেই তো অনুপ্রেরণা। দ্বিতীয় ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে হারের পরও বলেছে এটা স্প্রিন্ট নয়। ম্যারাথন লিগ। কখন কী হবে কেউ জানে না।”

লাল-হলুদে তিন বছরের কোচিং জীবনে ১১ ডার্বিতে ৭ টা জয়। তখন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের বিরুদ্ধে লড়তে হত। এ বার তো ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান দুই সমর্থকই আপনার দলের বিরুদ্ধে গলা ফাটাবে। মর্গ্যান এতটুকু ঘাবড়াচ্ছেন না। “কলকাতার ফুটবল দর্শক তো কলকাতার জন্যই গলা ফাটাবে। আমরা এখানে আন্ডারডগ। তবে আন্ডারডগরা কিন্তু মাঝে মাঝে অঘটন ঘটিয়ে দেয়।” দশ সেকেন্ড পর চোখ টিপে বাকিটা, “সবাই নয়। ইস্টবেঙ্গলের কিছু সমর্থক আমাদের দিকেও থাকবে।” শেষে স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা, “লোবোটা আমার সময় গোল পেত না। কিন্তু গোয়ার বিরুদ্ধে ঠিক দু’টো গোল মেরে দিল। অপূর্ব!” আর কলকাতা কোচ আন্তোনিও হাবাস? লোবোর চেয়েও কেউ কেউ যাঁকে তুলনায় ভয়ঙ্কর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ মনে করছে? তিনি যদি আপনার সামনে ফের রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন, কী করবেন?

মর্গ্যানের সাফ জবাব, “আমার ডিকশনারিতে যদি, কিন্তু-র ব্যাপার নেই। হাবাস কিছু না করলে? এ সব বলে কোনও লাভ নেই আমাকে।”

—নিজস্ব চিত্র

নর্থ-ইস্টের কাছে হারল ন’জনের মুম্বই
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা

ভাগ্য, না কোচ পিটার রিডের ভুল সিদ্ধান্ত? কোনটার শিকার হতে হল মুম্বই সিটি এফসি-কে? ম্যাচের ৭১ মিনিটের মধ্যে রিডের তিনটে পরিবর্তনের সিদ্ধান্তই কি কাল হল সুব্রত পাল-লালরিন্দিকাদের? শুক্রবার মুম্বইয়ে নর্থইস্ট ইউনাইটেড বনাম মুম্বই সিটি ম্যাচ হাফটাইম পর্যন্ত ছিল গোলশূন্য। যত কাণ্ড ঘটে দ্বিতীয়ার্ধেই। টোঙ্গার গোলে এগিয়ে যায় নর্থ-ইস্ট। গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন রিড। গোল পাওয়ার জন্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিউনবার্গকে নামিয়েছিলেন তিনি। মুম্বই গোল হজম করার পর রক্ষণ সামলাতে দীপক মণ্ডলকে নামান। আবার ফরোয়ার্ডে জোর বাড়াতে নামান আর্জেন্তিনার স্ট্রাইকার নাদায়াকেও। কিন্তু নাদায়া নামার এক মিনিটের মধ্যেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন লিউনবার্গ। ততক্ষণে তিনটে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে মুম্বইয়ের। সুইডিশ মিডিও উঠে যাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের জেরে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পাভেল। মুম্বই ন’জন হয়ে যাওয়ার পরেও গোলশোধের জন্য মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন লালরিন্দিকারা। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ হন। ম্যাচের শেষ মিনিটে নর্থইস্টের পক্ষে ২-০ করেন ফিলিপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন