দলিল খুঁজতে হন্যে এখন দেবী চৌধুরানীর মন্দির

কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, মন্দিরটি দেবী চৌধুরানীর নামে। যাবতীয় রসিদেও সেই নাম থাকে। তাই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দেবীর চৌধুরানীর নামের নথি চেয়েছেন ভূমি দফতরের কর্মীরা। যা মন্দির কমিটির হাতে নেই।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০৩:৫৪
Share:

গোশালা মোড়ের সেই দেবী চৌধুরানীর মন্দির। নিজস্ব চিত্র

কেউ ঢুঁ মারছেন জেলাশাসকের দফতরে। কেউ যাচ্ছেন তথ্য-সংস্কৃতি অফিসে। আবার কেউ কেউ প্রমাণ খুঁজতে ঢুকে পড়েছেন জেলার গ্রন্থাগারগুলোতেও। আড়াইশো বছরের পুরনো দলিলের খোঁজে আপাতত কালঘাম ছুটেছে জলপাইগুড়ি দেবী চৌধুরানীর কালী মন্দির কমিটির সদস্যদের। হঠাৎ দলিল দরকার কেন? তাঁরা জানালেন, জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করে চারলেনের কাজ চলছে। সেই কাজে মন্দিরের জমির একটি অংশ নিয়েছে প্রশাসন। এখন ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য প্রয়োজন সেই দলিল।

Advertisement

কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, মন্দিরটি দেবী চৌধুরানীর নামে। যাবতীয় রসিদেও সেই নাম থাকে। তাই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দেবীর চৌধুরানীর নামের নথি চেয়েছেন ভূমি দফতরের কর্মীরা। যা মন্দির কমিটির হাতে নেই। কিন্তু কয়েক মাস কেটে গেলেও এমন কোনও নথি মন্দির কমিটির হাতে আসেনি যা দিয়ে প্রমাণ করা যায় যে মন্দিরটি দেবী চৌধুরানীর।

অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি মন্দির কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী। এমনকি, উপন্যাসের পাতা হাজির করে প্রমাণ করতে চেয়েছেন নিজেদের কথা। তিনি বলেন, “আমি তো বঙ্কিমের উপন্যাসের পাতার ছবি তুলে সরকারি কর্তাদের দেখালাম। ওঁরা সরকারি দলিল ছাড়া কোনও কথা শুনতেই রাজি নন। এত পুরনো দলিল এখন পাই কোথায়।”

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জলপাইগুড়ির গোশালা মোড়ের এই মন্দির ছাড়াও শিকারপুরে আরও একটি দেবী চৌধুরানীর মন্দির রয়েছে। তবে সেখানে দেবী চৌধুরানীর পুজো করা হয়। আর গোশালা মন্দির পরিচিত দেবী চৌধুরানীর শ্মশানকালী মন্দির নামে। কথিত রয়েছে, রংপুরে মন্থনা নামে এক মহলার জমিদারের স্ত্রী ছিলেন দেবীরানী। তিনিই পরে দেবী চৌধুরানী নামে পরিচিত হন। শিকারপুর, বেলাকোবার মতো এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। কথিত রয়েছে, জলপাইগুড়ির গোশালা মোড় লাগোয়া কালীমন্দিরে দেবী চৌধুরানী পুজো দিতে আসতেন।

মন্দির কমিটির সম্পাদকের কথায়, “সড়ক তৈরি হওয়ার পরে পাঁচিল তুলতে হবে, অনেক টাকা লাগবে। ক্ষতিপূরণ পেলে সুরাহা হবে।’’ জলপাইগুড়ির বিশেষ ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিক পিনাকী সেনগুপ্তের আশ্বাস, “ক্ষতিপূরণের জন্য কিছু প্রামাণ্য নথি তো প্রয়োজন। তবে মন্দির কমিটির প্রতিনিধিরা চাইলে আলোচনা করা যেতে পারে। সরকারি নিয়মে অনেক উপায় আছে, আশা করি সমস্যা হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement