—প্রতীকী ছবি।
রাস্তার ধারে ফুটপাতের উপর সার দিয়ে দাঁড়িয়ে একাধিক সাইকেল। কোনওটার রং লাল, কোনওটা হলুদ, কোনওটা আবার সবুজ। যে কেউ ইচ্ছামতো সেগুলি নিয়ে এক জায়গা থেকে পাড়ি দিচ্ছে অন্যত্র। গন্তব্য পৌঁছে ফের পথের পাশে সাইকেলে ফেলে রেখে আরোহী চলে যাচ্ছেন নিজের কাজে। রাত-দিন খোলা আকাশের নীচে দু’চাকার যানটি পড়ে থাকা সত্ত্বেও চুরির নেই ভয়। উল্টে এর জন্য দু’পয়সা রোজগার করছে সাইকেল নির্মাণকারী সংস্থা!
এ-হেন অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ভারতে নয়, ঘটছে চিন দেশে। সেখানে সাইকেল বিক্রির তেমন রেওয়াজ নেই। তবে দু’চাকার যানটি ভাড়া পাওয়ার বেশ সুবন্দোবস্ত রয়েছে। চৈনিক সংস্থাগুলির সাইকেলে লাগানো আছে বিশেষ একটি কিউআর কোড। আরোহীর নিজের মোবাইল ফোনে সেটিকে স্ক্যান করলেই খুলে যাবে লক। এর পর সংশ্লিষ্ট সাইকেলটি নিয়ে ইচ্ছামতো শহরের যেখানে খুশি যেতে পারবেন তিনি।
গন্তব্যে পৌঁছে পথের পাশে সুনির্দিষ্ট জায়গায় সাইকেল দাঁড় করাচ্ছেন ওই আরোহী। এর পর নিয়মমাফিক ফের ওই কিউআর কোড স্ক্যান করতে হচ্ছে তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গে ভাড়ার টাকা ফুটে উঠছে তাঁর স্ক্রিনে। অনলাইনে সেটা দিয়ে দিলেই ফের লক হয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সাইকেল। এর পর অন্য কোনও ব্যক্তি এসে একই কায়দায় ফের ওই দু’চাকার যানটি ভাড়া নিতে পারছেন।
চিনের রাস্তায় সব সময় সাইকেল কিন্তু উন্মুক্ত অবস্থাতেই পড়ে থাকে। তবে মেরামতির প্রয়োজন হলে সেগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যায় নির্মাণকারী সংস্থা। সাইকেলের ভাড়াও বেশ সস্তা। প্রতি দু’কিলোমিটারে দিতে হচ্ছে এক ইউয়ান। ভারতীয় মুদ্রায় যেটা প্রায় ২৬ টাকা। ভাড়া হিসাব করতে কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের সঙ্গে সাইকেলের ব্লুটুথকে সংযুক্ত করছেন আরোহী।
এর পর জিপিএস ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কতটা রাস্তা গিয়েছেন, তা বুঝে নিচ্ছে মুঠোবন্দি ডিভাইস ও দু’চাকার যানটি ভাড়া দেওয়ার সংস্থা। সেইমতো বিল মেটাতে হচ্ছে তাঁকে। সাইকেল পরিবেশবান্ধব হওয়ায় চিনের প্রতিটি শহরে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাটি এ দেশেও চালু হলে আমজনতার যে যথেষ্ট সুবিধা হবে, তা বলাই বাহুল্য।