ভাণ্ডার পাহাড় থেকে চামচ দ্বীপ

মাইথনটা এক বার ঘুরে এলে কেমন হয়, বেশ কিছু দিন ধরেই মাথায় ঘুরছিল কথাটা। এক দাদার কাছে শুনছিলাম মাইথনে থাকার সেরা জায়গা ডিভিসি-র অতিথিশালা মজুমদার নিবাস।

Advertisement

কুন্তল চাকী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৭
Share:

মাইথনটা এক বার ঘুরে এলে কেমন হয়, বেশ কিছু দিন ধরেই মাথায় ঘুরছিল কথাটা। এক দাদার কাছে শুনছিলাম মাইথনে থাকার সেরা জায়গা ডিভিসি-র অতিথিশালা মজুমদার নিবাস। ইন্টারনেটে খানিক তল্লাশি চালাতেই খোঁজ মিলল। মনের মতো বুকিং পেতে লেগে গেল প্রায় এক বছর।

Advertisement

বেরিয়ে পড়লাম। বাসে আসানসোল। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা মজুমদার নিবাস। পৌঁছে বুঝলাম দাদা একটা বাক্যও বাড়িয়ে বলেনি। মাইথন ওয়াটার বডির ভেতরে একটা ছোট্ট দ্বীপ। সেখানেই এই মজুমদার নিবাস। বেশ কিছুটা কংক্রিটের রাস্তা। আর তার পর লোহার তৈরি সেতু পেরিয়ে পৌঁছতে হয় সেখানে। অতিথিশালার ভেতরেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। লনটাও ভারী সুন্দর, বাগানে ঘেরা।

পথের ক্লান্তি কাটাতে দুপুরে একটু জিরিয়ে নিতে গিয়ে দেখি কখন সন্ধে হয়েছে টেরই পাইনি! তড়িঘড়ি উঠে হাল্কা কিছু খেয়ে নিয়েই বেরিয়ে পড়লাম মাইথন ড্যাম ঘুরে দেখতে। বহু দূর বিস্তৃত ড্যামটির এ-পারে পশ্চিমবঙ্গ আর ও-পারে গেলেই ঝাড়খণ্ড। বাঁধের কাছে পরপর অনেক ফুড স্টল। ফুচকাওলা দেখেই এগিয়ে গেলাম। কিন্তু স্বাদটা ঠিক আমাদের বহরমপুরের মতো নয়। একটু যেন অন্য রকম।

Advertisement

পরের দিন আশপাশটা ভাল করে ঘুরে দেখার পালা। কিন্তু কী ভাবে ঘুরব, কী দেখব, তেমন কিছুই জানা ছিল না। মুশকিল আসান হয়ে দেখা দিলেন অটো চালক দীপঙ্করদা। আমাদের ‘গাইড’। মাইথনের গুগল ম্যাপও বলা চলে।

পাঞ্চেত বাঁধ, মোবারকের স্নেক পার্ক থেকে ভাণ্ডার পাহাড়, কল্যাণেশ্বরী মন্দির, থার্ডডাইকের অপরূপ শোভা, জুবিলী পার্ক— ঘুরে দেখলাম খুটিনাটি সব। অনেক নাম না জানা জায়গাও দেখালেন দীপঙ্করদা। প্রকৃতির রূপ সেখানে চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।

পরের দিন জলভ্রমণের পালা। মজুমদার নিবাসের অদূরেই বোটিং পয়েন্ট। বিকেলে সেখান থেকে বোট ভাড়া করে চলে গেলাম সবুজদ্বীপ। সত্যিই বড় সবুজ। ওখান থেকেই দেখলাম উল্টো চামচের মতো দেখতে চামচ দ্বীপ, আনন্দ দ্বীপ। স্থানীয়রাই এমন নাম রেখেছে।

পরের দিন ফেরার পালা। তার আগে সকাল সকাল বেড়িয়ে এলাম মাইথন বোটিং ক্লাবে। শুনলাম এক সময় প্রোজেক্ট চলাকালীন অফিসারদের সপ্তাহান্তের বিনোদনের জায়গা ছিল এটি। বোটিং, রোইং কম্পিটিশন হত, থাকত সারা দিনের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা, একেবারে সাহেবি কায়দায়। অতীতের সেই সব জাঁকজমকের কথা ভাবতে ভাবতেই ফেরার রাস্তা ধরলাম। মনে রয়ে গেল তিন দিনের সেই ছোট্ট সফরের সুখস্মৃতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন