ট্রেনের চাদর, কম্বলের মোড়কের সাদা রং বদলাচ্ছে? ছবি : সংগৃহীত।
লম্বা ট্রেন সফরে বাতানুকূল কামরার যাত্রীদের আরামের জন্য চাদর, কম্বল, বালিশ দেয় রেল। এত দিন সেই বালিশ, চাদর আর কম্বলের ওয়াড় হত ধবধবে সাদা রঙের। তার এক প্রান্তে মোনোগ্রাম থাকত ভারতীয় রেলের লোগো এবং নামের। সেই ধারা এ বার বদলাতে চলেছে রেল। সাদার বদলে ট্রেনে সরবরাহ করা কম্বল বালিশের ওয়াড় আর চাদর হবে রঙিন, তাতে থাকবে ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ব্লকপ্রিন্টের নকশাও।
গত ১৬ অক্টোবর রাজস্থানে ওই নতুন নকশার চাদর এবং কম্বলের ওয়াড়ের উদ্বোধন করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। নকশাটিও রাজস্থানেরই। নাম সাঙ্গনেরি। রাজস্থানের এই সাঙ্গনেরি ব্লকপ্রিন্ট তার উজ্জ্বল রঙের রংমিলন্তির জন্য জনপ্রিয়। এই প্রিন্টের চাদর যেমন হয়, তেমনই শার্ট, শাড়ি, শালোয়ার পিসও পাওয়া যায় রাজস্থানে। নানা ধরনের ফুল-ফল, লতাপাতা, পাখি, এমনকি পশুর প্রিন্টও থাকে। সরু রেখার টানে সেই নকশা ফুটে ওঠে লাল-হলুদ-নীল-সবুজ-সাদা-গোলাপি জমির উপর।
রাজস্থানের ঐতিহ্যবাহী সাঙ্গনেরি প্রিন্ট। ছবি: সংগৃহীত।
রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাত্রীরা প্রায়শই অভিযোগ করতেন যে, রেলের ওই চাদর তাঁদের হাসপাতালের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই প্রিন্ট তাঁদের ঘরের কথা মনে করাবে। পাশাপাশি, উজ্জ্বল রং মনও ভাল করবে। সে কথা ভেবেই এই প্রিন্ট বেছে নেওয়া। তবে এ ছাড়াও আরও দু’টি কারণ রয়েছে।
ভবিষ্যতে এমনও দেখাতে পারে ট্রেনের কামরা। ছবি: এ আই সহায়তায় প্রণীত।
রেলের চাদর নোংরা থাকা নিয়ে প্রায়শই যাত্রীদের অসন্তোষের কথা শোনে রেল। রেলমন্ত্রী জানাচ্ছেন, ওই সব চাদর এবং বালিশ-কম্বলের ওয়াড় যাতে সহজে ধোয়া যায় এবং শুকনো যায় তার জন্য এক বিশেষ ধরনের সুতিমিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করার কথা ভাবছেন তাঁরা। সাঙ্গনেরি প্রিন্ট ওই কাপড়েও ভাল ফুটবে। রং উঠবে না। পাশাপাশি, এ ভাবে স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী শিল্পকেও উৎসাহিত করা হবে। সাঙ্গনেরি ব্লকপ্রিন্ট করে জয়পুরের কাছে সাঙ্গনের শহরের চিপ্পা সম্প্রদায়। তাদের কাজও সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছবে।
রেলের নতুন চাদরের উদ্বোধনে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার।)
আপাতত এই প্রিন্ট চালু করা হয়েছে জয়পুর-অসরবা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে। রেলের তরফে জানা গিয়েছে, পরীক্ষামূলক ভাবে ওই চাদর এবং বালিশ-কম্বলের ওয়াড় ব্যবহার করা হবে। যদি যাত্রীদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মেলে, তবে অন্য ট্রেনেও এই নকশার চাদরই চালু হবে। তবে রেলের কর্তারা এ-ও বলছেন যে, সে ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী নকশা নেওয়ার কথাও ভাবা হবে।